অভিনন্দন-কে মানসিক অত্যাচার করেছে পাকিস্তান, রিপোর্টে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
পাকিস্তানের হাতে বন্দি ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান শুক্রবার রাতে দেশে ফিরেছেন। রাত ৯.১৫ মিনিট নাগাদ ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে নিজের দেশের মাটিতে পা রাখেন তিনি।
পাকিস্তানের হাতে বন্দি ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান শুক্রবার রাতে দেশে ফিরেছেন। রাত ৯.১৫ মিনিট নাগাদ ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে নিজের দেশের মাটিতে পা রাখেন তিনি। এরপর রাতেই তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, পাকিস্তান প্রবলভাবে অভিনন্দন-কে মানসিক অত্যাচার করেছে। দেশে পা রেখে সেই কথা বায়ুসেনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন অভিনন্দন।
দিল্লিতে বায়ুসেনার হাসপাতালে এই মুহূর্তে রাখা হয়েছে অভিনন্দন-কে। সেখানেই আপাতত তাঁর 'কুলিং ডাউন' প্রক্রিয়া চলছে। 'কুলিং ডাউন' প্রক্রিয়া হল শত্রু শিবিরে বন্দি থাকা সৈনিকের যাবতীয় উৎকন্ঠাকে স্বাভাবিকস্তরে নামিয়ে আনার একটি পদ্ধতি। এর সঙ্গে রক্ত-চাপের ওঠা-নামা থেকে শুরু করে নানা ধরনের শারীরিক প্যারামিটারের স্বাভাবিকতা ও অস্বাভাবিকতা-কে নজরে রাখা হয়। চিকিৎসকরা যখন মন করবেন এই সৈনিক মানসিক ও শারীরিকভাবে একদম ফিট তখন 'কুলিং ডাউন' প্রক্রিয়া শেষ হয়। অভিনন্দনে-র শারীরিক ও মানসিক অবস্থা কেমন তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে, যেটুকু তথ্য মিলিছে তাতে দাবি করা হচ্ছে পাকিস্তানে অভিনন্দনকে হেফাজতে রাখার সময় প্রবলভাবে মানসিক অত্যাচার করা হয়। নানাভাবে তাঁকে হয়রান করার চেষ্টা চলে। কিন্তু, বায়ুসেনার কঠোর অনুশাসনে শিক্ষিত এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমির প্রাক্তন ছাত্রকে কাবু করতে পারেনি পাকিস্তান। তবে, এই মানসিক অত্যাচার অভিনন্দনের মতো একজন সিনিয়র অফিসারকেও যে খানিকটা ধাক্কা দিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। শুক্রবার রাতেই নাকি পাকিস্তানিদের হেফাজতে থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বায়ুসেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের এই মানসিক অত্যাচারের কথা উল্লেখ করেছিলেন অভিনন্দন।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে যখন অভিনন্দন দেশে পা রাখেন তখন তাঁর চোখে জল চলে এসেছিল। তিনি যে জীবীতি অবস্থায় দেশের মাটিতে যে ফিরে আসতে পারবেন তা বিশ্বাস নাকি হচ্ছিল না অভিনন্দনের। তবে, এই নিয়ে বেশি কথা নাকি বলেননি অভিনন্দন। যে পদ্ধতিতে তিনি পাকিস্তানের সেনা অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছেন সেটা বায়ুসেনার প্রশিক্ষণেরই ফল। এটা তাঁর দেশে ফিরে আসার পক্ষেও কাজে দিয়েছে বলে মনে করছেন বায়ুসেনার বহু বর্তমান ও প্রাক্তন আধিকারিক।
শনিবার দিল্লিতে হাসপাতালে অভিনন্দনের সঙ্গ দেখা করতে আসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি অনেকটা সময় অভিনন্দনের সঙ্গে কাটান। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন বাহিনীর শীর্ষ আধিকারিরকাও। এরমধ্যে সেখানে উপস্থিত হন অভিনন্দনের স্ত্রী ও ছেলে। তাঁদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
জানা গিয়েছে অন্তত রবিবার পর্যন্ত হাসপাতালে অভিনন্দনকে রাখা হবে। এরমধ্যে অভিনন্দনকে আরও কিছু পরীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। শত্রু শিবির থেকে ফেরা সৈনিকদের ক্ষেত্রে এটা আবশ্যিক একটা প্রক্রিয়া।
এ সমস্ত কিছুই হবে অভিনন্দনের মানসিক ও শারীরিক অবস্থাকে মাথায় রেখে। ইতিমধ্যে অভিনন্দনকে দেশের যুব সম্প্রদায়ের 'নায়ক' বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।