যৌনকর্মীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ রুখতে এখন বন্ধ রাখা হোক দেশের যৌনপল্লী
যৌনকর্মীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ রুখতে এখন বন্ধ রাখা হোক দেশের যৌনপল্লী
মুম্বইয়ের কেইএমের চিকিৎসকদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে স্কুল অফ মেডিসিন ও হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের পড়ুয়ারা এক সমীক্ষায় প্রকাশ করেছে যে ভারতের দেহ ব্যাবসার জায়গাগুলি এই মুহূর্তে বন্ধ রাখাই সমুচিন হবে, তাতে কোভিড–১৯ কেসের বৃদ্ধিতে ২৩ দিন বিলম্ব হতে পারে এবং কেসের সংখ্যা ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস হতে পারে।
বন্ধ রাখা হোক দেশের যৌনপল্লী
সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে পশ্চিমবঙ্গের যৌনপল্লী যদি খোলা হয় তবে যৌন কর্মী সহ ওখানকার বাসিন্দা মিলিয়ে ২০০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হবে। মহারাষ্ট্রে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য বলে জানা গিয়েছে। রেড লাইট এলাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোভিড-১৯ কেস ৩২ থেকে ৬০.২ শতাংশে কমিয়ে আনা যেতে পারে, এবং মহামারি জনিত মৃত্যুর পরিমাণ ৪৪ থেকে ৬৭.৬ শতাংশ হ্রাস করা যেতে পারে। একই সময়ে, যদি এই অঞ্চলটি বন্ধ রাখা হয় তবে করোনার মামলার ব্যাপক পরিমাণ বাড়ানোর সময় ৮ থেকে ২৩ দিন দেরি করা যেতে পারে।
‘কোড রেড কোভিড’ সমীক্ষা
‘কোড রেড কোভিড' হল হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুল, ইয়েল মেডিক্যাল স্কুল, কেইএম হাসপাতাল এবং অন্যান্য ইনস্টিটিউটগুলির চিকিৎসক এবং গবেষকদের একটি বৈশ্বিক জোট। গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে পরের এক বছরে যদি দেশের যৌনপল্লী এলাকাটি চালু করা হয় তবে এই অঞ্চলে ৪০০,০০০ এরও বেশি সংক্রমণ এবং ১২,০০০ জন মারা যেতে পারে।
যৌন সম্পর্কে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা যায় না
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে ভারতে প্রতিষেধকের বিকাশ এবং বিতরণ করতে কমপক্ষে ১৮ মাস সময় লাগতে পারে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ‘দেশের রাজধানী দিল্লির জিবি রোড যৌনপল্লী অঞ্চলেই ২,৭৭৪ টি মামলা দেখা দিয়েছে, যার মধ্যে ৩৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি এবং ৯১ জন মারা গিয়েছে।' এই গবেষণা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ইয়ালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ লেখক ডাঃ অভিষেক পাণ্ডে বলেন, ‘যৌন সম্পর্কের সময় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব। যৌন কর্মী, দালাল ও যৌনপল্লী পরিচালক সহ রেড লাইট এলাকার বালিন্দাদের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। যতদিন না কোনও কার্যকরি প্রতিরোধমূলক বন্দোবস্ত না আসছে ততদিন যৌন পল্লী বন্ধ রাখা উচিত, তাতে শত শত যৌন কর্মীর মৃত্যু আটকানো যাবে।'
যৌন কর্মীদের এখন কাজে ফেরা বিপদজ্জনক
এই সমীক্ষায় সুপারিশ করা হয়েছে কোভিড-১৯-এর কার্যকর প্রতিষেধকের অভাব পূরণ করতে সীমিত জনস্বাস্থ্য সুবিধা জোরদার করে করোনা ভাইরাসের কেস ও মৃত্যুকে যথেষ্ট পরিমাণে হ্রাস করতে পারে। যৌনকর্মীদের কল্যাণে কাজ করে এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, দুর্বার মহিলা সম্মনয়া কমিটি (ডিএমএসসি)-এর একটি সদস্যপদ রয়েছে, যার মধ্যে রাজ্যের ৫০ টি রেডলাইট অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৬৫ হাজার যৌনকর্মী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক স্মরজিত জানা জানিয়েছেন যে লকডাউন তোলার পর যদি যৌন কর্মীদের কাজে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয় তবে তা তীব্র বিপদজ্জনক হবে। কারণ তাঁদের কাজের ধরন এবং তাঁরা যে রকম ঘিঞ্জি এলাকায় বাস করেন, একজনের করোনা হলে তা একশোজনের মধ্যে ছড়াতে বেশি সময় নেবে না।
২৪০ কোটি মার্কিন ডলারের চিনা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে চুক্তি স্বাক্ষর পাকিস্তানের