রাজীব গান্ধীর খুনিদের মুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সাংবিধানিক বেঞ্চ
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর খুনিদের মুক্তির দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে তামিলনাড়ু সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এই ঘোষণা করেন। এর বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় সরকার। পরের দিন অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেয় রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের ২১ মে এলএলটিই-র আত্মঘাতী বোমায় তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে নিহত হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। পুলিশি অভিযানে ধরাও পড়ে অভিযুক্তরা। মোট ২৬ জনকে ফাঁসির সাজা দেয় নিম্ন আদালত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনজন অর্থাৎ মুরুগন, শান্তন ও পেররীবালনের ফাঁসির সাজা বহাল থাকে। ২০০৩ সালে তারা প্রাণভিক্ষার আবেদন জানায় রাষ্ট্রপতির কাছে। কিন্তু, ১১ বছর ধরেও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রাষ্ট্রপতি ভবন। শেষ পর্যন্ত তারা সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানায়। শীর্ষ আদালত তাদের ফাঁসির সাজা মকুব করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। বিচারপতিরা বলেন, দু'দশক জেলে কাটাতে হয়েছে। রোজই ভেবেছে ফাঁসি হয়ে যাবে, কিন্তু ফাঁসি হয়নি। এই অমানুষিক অবস্থার অবসান ঘটানো দরকার। সরকার যখন এতদিনেও ওদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, তখন মৃত্যুদণ্ড মকুব করা হল। এর পর তামিলনাড়ু সরকারের তরফে মুরুগন, শান্তন ও পেররীবালন ছাড়াও মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নলিনী, রবার্ট, জয়কুমার ও রবিচন্দ্রনকেও।
স্থগিতাদেশের পর এদিন চূড়ান্ত রায় ঘোষণার কথা ছিল শীর্ষ আদালতের। কিন্তু প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেনি। মৃত্যুদণ্ড মকুব হওয়ার পর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ছেড়ে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে সাংবিধানিক প্রশ্ন জড়িয়ে আছে বলে মনে করেছেন বিচারপতিরা। বিষয়টি নিয়ে তিন মাসে ফয়সালা শোনাবে সাংবিধানিক বেঞ্চ। সেই মোতাবেক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ফলে এখন জয়ললিতার আর কিছু করার রইল না।