দেশের জাতিগত শুদ্ধিকরণের প্রয়োজন নেই, দরকার আছে চাকরির , কেন্দ্রকে এক হাত রাহুলের
এমনিতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মস্থান নিয়ে প্রতিনিয়ত নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। সমস্যা দিন দিন বাড়ছে বই কমছে না সঙ্গে আর্থিক সমস্যা তো লেগেই রয়েছে। যা ক্রমে দেশের সাধারণ মানুষকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। এসবের মাঝে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক আবার দেশের মানুষ জাতিগিতভাবে কতটা বিশুদ্ধ তা দেখার জন্য একটি পরিকল্পনা করেছে। আর তা নিয়েই কেন্দ্রকে এক হাত নিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
সংস্কৃতি মন্ত্রকের 'জাতিগত বিশুদ্ধতা' পর্যবেক্ষণ করার পরিকল্পনার খবর একটি সংবাদ প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়। তা নিয়েই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদী সরকারকে এক হাত নিয়ে বলেছেন যে ভারতে চাকরির নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রয়োজন আছে।
'সংস্কৃতি মন্ত্রালয় ভারতীয়দের জাতিগত বিশুদ্ধতা পর্যবেক্ষণ করবে' এই শিরোনামে খবর করে একটি পরিচিত জাতীয় সংবাদ সংস্থা। সেই প্রতিবেদনকে নিজের টুইটার ওয়ালে শেয়ার করে রাহুল একটি বলেন যে: "শেষবার যখন একটি দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রালয় 'জাতিগত বিশুদ্ধতা' পর্যবেক্ষণ করেছিল, সেটা মোটেই ভালোভাবে শেষ হয়নি। ভারত চাকরির নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি চায়, 'জাতিগত বিশুদ্ধতা' নয়।"
সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে সংস্কৃতি মন্ত্রক জেনেটিক ইতিহাস প্রতিষ্ঠার জন্য এবং "ভারতে জাতিগুলির বিশুদ্ধতা চিহ্নিত করার জন্য" ডিএনএ প্রোফাইলিং কিট এবং সংশ্লিষ্ট অত্যাধুনিক মেশিন ব্যাবহার করবে। রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্য করেছেন তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটকে ক্রমবর্ধমান আর্য-দ্রাবিড় বিতর্ককে সামনে রেখে যেখানে কংগ্রেস এবং বিজেপি নেতারা জাতিগত স্বত্ব নিয়ে লড়াই করছেন।
সম্প্রতি, কংগ্রেস নেতা এবং কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, জওহরলাল নেহরুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একটি বক্তৃতার সময়, প্রশ্ন করেছিলেন যে আরএসএসের উৎপত্তি কী ভারতে? তার সঙ্গে তিনি এই প্রশ্নও তুলে দিয়েছিলেন যে এই আরএসএস আর্য বা দ্রাবিড় দল কিনা, কারণ এই সম্প্রদায়কেই বিজেপি বলে দেশের আসল বাসিন্দা, বাকিরা সবাই বহিরাগত। এদিকে এম কে স্টালিনের নেতৃত্বে তামিলনাড়ু সরকার "বিজেপির আর্য আগ্রাসনের" বিপরীতে দ্রাবিড় সংস্কৃতিকে ঢাল হিসাবে ব্যাবহার করেছে।
দ্রাবিড়রা দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসকারী একটি ভাষাগত গোষ্ঠী যারা প্রধানত দ্রাবিড় ভাষার যে কোন একটিতে কথা বলেন দ্রাবিড় ভাষা গোষ্ঠী দক্ষিণ ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা গঠন করে এবং পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কায় এদের দেখা মেলে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মায়ানমার, পূর্ব আফ্রিকা, ক্যারিবিয়ান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতেও দ্রাবিড়দের দেখা মেলে।