কাল মেডিক্যাল এন্ট্রান্স, জেনে নিন কী কী নিষিদ্ধ পরীক্ষার হলে, কোন পোষাকই বা পরা যাবে
আগামীকালই ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (এনইইটি)। এমবিবিএস এবং বিডিএস কোর্সে ভর্তি হতে গেলে পাশ করতেই হবে এই পরীক্ষায়। লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য এই পরীক্ষায় বসেন।
আগামী কালই (৬ ই মে) ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (এনইইটি)। এমবিবিএস এবং বিডিএস কোর্সে ভর্তি হতে গেলে পাশ করতেই হবে এই পরীক্ষায়। সারা ভারতে লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেন। তার ওপর এর পাঠ্যক্রমও বিরাট। কাজেই সিবিএসই পরিচালিত এই পরীক্ষায় প্রতিযোগিতার মান যে অনেক বেশি, তা বলাই বাহুল্য। এর জন্য ছাত্র ছাত্রীরা কয়েক মাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করেন। ছাত্রছাত্রীদের এই পরিশ্রম যাতে শেষ মুহুর্তের কোনও ভুলে বিফলে না যায়, তার জন্য আসুন দেখে নেওয়া যাক এই পরীক্ষার জন্য কী কী নিয়ম জারি করেছে সিবিএসই। ঝালিয়ে নেওয়া যাক পরীক্ষাঠির খুটিনাটি।
সময়সূচি-
পরীক্ষার হলে ঢোকার সময়: সকাল ৭টা ৩০ মিনিট
অ্যাডমিট কার্ড চেক করার সময়: সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে ৯টা ৪৫ মিনিট
টেস্ট বুকলেট দেওয়া হবে: সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে
পরীক্ষার হলে ঢোকার শেষ সময়: সকাল ৯টা ৩০ মিনিট (এরপর আর কাউকে হলে ঢুকতে দেওয়া হবে না)
পরীক্ষা শুরু: সকাল ১০টায়
পরীক্ষা শেষ: বেলা ১ টায়
ফলাফল ঘোষণা: ৫ জুন
এই গুরুত্বপূর্ণ সময়সূচির পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের মেনে চলতে হবে বেশ কিছু নিয়মও। সেইমতো পরীক্ষার্থীদের সুবিদার্থে রইল কিছু পরামর্শও।
সময়ে বেরোনঃ ছাত্রছাত্রীদের জন্য পরীক্ষা-কেন্দ্রগুলির দরজা খুলে দেওয়া হবে পরীক্ষার শুরুর আড়াই ঘন্টা আগে। কিন্তু সাড়ে ন'টার পর আর কাউকে পরীক্ষা হলে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বোর্ড। ভারতে ট্র্যাফিকের কোনও ঠিক ঠিকানা নেই। হয়তো কোথাও রাস্তা অবরোধ হল, রেল অবরোধ হল, এছাড়া ট্রাফিক জ্যাম তো আছেই। কাজেই এসব বাধা এড়াতে কিছুটা সময় হাতে নিয়ে বেরনো উচিত। পরীক্ষা-কেন্দ্রে একটু আগে পৌঁছলে তো কোনও ক্ষতি নেই। কিন্তু দেরীতে পৌঁছলে পরীক্ষা মিস করতে হবে। জলে যাবে সব প্রস্তুতি। সময়ের ব্যাপারে কিন্তু সিবিএসই অত্যন্ত কঠোর।
অ্যাডমিট কার্ড: যাই হয়ে যাক না কেন, অ্যাডমিট কার্ড সঙ্গে নিতে ভুললে চলবে না। ভাল হয়, পরীক্ষার আগের রাতেই যে ব্যাগ নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাবেন, সেই ব্যাগে কার্ডটা ভরে ফেলা। যাতে বেরনোর সময়ে খোঁজাখুজি করে বাড়তি সময় নষ্ট না হয় । ইনভিজিলেটর অ্যাডমিট কার্ড পরীক্ষা করার পরই হলে ঢুকতে দেবেন। কাজেই সবটেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই নথি এটি। এরসঙ্গে একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবিও নিয়ে যেতে হবে।
কোনও রকম খাবার-দাবার নেওয়া চলবে নাঃ পরীক্ষা-কেন্দ্রে জলের বোতল, চা, কফি, ঠান্ডা পানীয় বা স্ন্যাক্স কোনও রকম খাওয়ার নিয়েই ঢুকতে দেওয়া হবে না।
অসদ উপায় নেওয়ার আগে ভাবুন: এই পরীক্ষায় পাশ করার অনেক চাপ থাকে। তাতে অনেকেই শর্টকাটে বাজি মারার কথা ভাবেন। টোকাটুকি বা অন্য কোনও অসৎ কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়লে কিন্তু 'আনফেয়ারমিনস' (ইউএফএম)-এর মামলা দায়ের করা হবে। তাতে পরের তিন বছরের জন্য ওই পরীক্ষার্থীকে আর পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না।
বল পয়েন্ট পেন: নিজের পেন নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। পরীক্ষার বুকলেট এবং উত্তরপত্রের দেওয়ার সময় পরীক্ষার্থীদের কালো / নীল বল পয়েন্ট পেন দেওয়া হবে।
এসব নিষিদ্ধ: পরীক্ষাহলে বাশ কয়েকটি জিনিস নিয়ে যাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে সিবিএসই। তারমধ্যে রয়েছে যে কোনও রকম টেক্সট ( তা ছাপা হোক বা হাতে লেখা), কাগজপত্র, জ্যামিতি / পেন্সিল বাক্স, প্লাস্টিকের ব্যাগ, ক্যালকুলেটর, পেন, স্কেল, লেখার প্যাড, পেন ড্রাইভ, ইরেসার, লগ টেবিল। মোবাইল ফোন, ব্লুটুথ, ইয়ারফোন, মাইক্রোফোন, পেজার, হেলথ ব্যান্ড-এর মতো যোগাযোগ মাধ্যমগুলিও হলে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
আরও যা যা নিষেধের তালিকায়ঃ মানিব্যাগ, গগলস, হ্যান্ডব্যাগ, বেল্ট, টুপি, ঘড়ি / রিস্টওয়াচ, ব্রেসলেট, ক্যামেরা, ধাতব কোনও বস্তু। এছাড়া আঙটি, কানের দুল, নাকছাবি, গলের চেন / নেকলেস, পেন্ডেন্ট, ব্যাজ, ব্রোচ ইত্যাদি অলংকারও অনুমোদিত নয়।
পোষাক বিধি: পরীক্ষার্থীদের হাফহাতা জামা পরতে হবে। বড় বোতাম, ব্রোচ / ব্যাজ, ফুল, ইত্যাদি থাকা চলবে না। নিচে পরবেন সালোয়ার বা প্যান্ট। চপ্পল এবং স্যান্ডেলই অনুমোদন করা হবে, বেশি হিল দেওয়া জুতো বা বুট চলবে না।
'শিখ'দের জন্য নির্দেশ: শিখ ধর্মাবলম্বীরা যাঁরা 'কৃপান' নিয়ে ঘোরেন এবং 'কারা' পরেন, তাদের পরীক্ষার অন্তত এক ঘণ্টা আগে রিপোর্ট করতে হবে। এর আগে সিবিএসই কৃপান ও কারা নিষিদ্ধ করলেও দিল্লি হাইকোর্টের রায় দেয় এগুলি ধর্মীয় বিশ্বাসের বিষয়। যার জন্য বিমানেও এগুলি নিয়ে ভ্রমণ করার অনুমতি দেওয়া হয়। তাই এই বস্তুগুলি সিবিএসই পরীক্ষা হলে নিষিদ্ধ করতে পারবে না।