করোনা আতঙ্কে গর্ভবতী মহিলাকে ভর্তি নিল না ৩টি হাসপাতাল, পেটেই মৃত যমজ শিশু
করোনা আতঙ্কে গর্ভবতী মহিলাকে ভর্তি নিল না ৩টি হাসপাতাল, পেটেই মৃত যমজ শিশু
এখনও দেশে করোনা ভাইরাস নিয়ে অহেতুক আতঙ্কের জন্য প্রাণ হারাচ্ছেন বহু নিরিহ মানুষ। করোনা ভাইরাসের প্রথম কেন্দ্রস্থল কেরলে এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। করোনা ভাইরাস আতঙ্কের কারণে তিনটে হাসপাতাই এক গর্ভবতী মহিলার চিকিৎসা করতে অস্বীকার করে, যার ফলস্বরূপ ওই মহিলার প্রসব না হওয়া যমজ সন্তানের মৃত্যু হয়। ঘটনাটি ঘটেছে কেরলের মালাপ্পুরমে।
পেটেই মৃত যমজ সন্তান
ওই মহিলার স্বামী এনসি শেরিফ জানান যে তিনি তাঁর ২০ বছরের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা হাসপাতালের দরজায় দরজায় ঘুরেছেন কিন্তু কেউ ভর্তি নেয়নি, যার জন্য তিনি তাঁর যমজ সন্তানকে হারালেন। স্বামী বলেন, ‘শনিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ স্ত্রী সাহেলার প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় তাঁকে নিয়ে মঞ্জেরি মেডিক্যাল কলেজে যাই। কিন্তু তার আগে বহু হাসপাতাল ঘোরার পর অবশেষে সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ তার চিকিৎসা শুরু হয়।' রবিবার সন্ধ্যাবেলায় সিজার শুরু হয় ওই মহিলার, কিন্তু ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে এবং প্রসব না হওয়া যমজ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
তদন্তের নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
এই ঘটনাকে অত্যন্ত বেদনাদায়ক বলে বিবরণ দিতে গিয়ে কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা এই ঘটনার পূর্ণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং স্বাস্থ্য সচিবকে এই তদন্তের রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। শেরিফ জানান যে তিনি তাঁর স্ত্রীকে মঞ্জেরি মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যান প্রসব যন্ত্রণা ওঠার পর, কিন্তু তারা ভর্তি করেনি। বরং বলেছে এটা কোভিড-১৯ হাসপাতাল এবং তাঁকে ওই যন্ত্রণাদায়ক অবস্থায় অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। তিনি জানান যে সেপ্টেম্বরের প্রথমদিকে তাঁর স্ত্রীর কোবিড পজিটিভ ধরা পড়েছিল। কিন্তু ১৫ সেপ্টেম্বর অ্যান্টিজেন টেস্টে তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে এবং তাঁর স্ত্রী বাড়ি চলে আসেন। এরপর গত ১৮ সেপ্টেম্বর তাঁর স্ত্রী ব্যাথা অনুভব করলে তাঁকে মঞ্জেরি মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সরকারি অ্যান্টিজেন টেস্টকে অগ্রাহ্য
যদিও রবিবার বেসরকারি হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করলেও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারের করা অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্টকে গ্রাহ্য করেনি এবং আরটি-পিসিআর টেস্টের ওপর জোর দিচ্ছিল। শেরিফের কথানুযায়ী, প্রথমে তিনি তাঁর স্ত্রীকে শুক্রবার রাতে এডাভান্নার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্ত্রীয়ে চিকিৎসা হয়না সেখানে এবং সরকারি টেস্ট রিপোর্টও মানতে চায় না তারা। মঞ্জেরি হাসপাতালও তাঁর স্ত্রীকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে এবং কোঝিকোড়ে জেলার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জন্য বলে। শেরিফ যখন তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে যায়, গিয়ে দেখ একোনও স্ত্রীরোগ বিভাগই নেই সেখানে। এরপর হাসপাতালের এক মহিলা কর্মী ওই দম্পতিকে কোঝিকোড়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
কোঝিকোড়ে মেডিক্যাল কলেজে সিজার হয়
এর মাঝখানে শেরিফ আরও এক বেসরকারি হাসপাতালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিন্তু সেখানে শাহেলাকে ভর্তি করতে হলে প্রথমে আরটি-পিসিআর টেস্ট করা প্রয়োজন বলে জানানো হয়। অবশেষে কেএমসিটি হাসপাতালে ওই মহিলাকে ভর্তি করানো হয়। মহিলাকে পরীক্ষা করার পর ওই হাসপাতাল থেকে কোঝিকোড়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় যেখানে মহিলার সিজার হয়।
মুকুল রায় পদ পাওয়ার পর দলবদলে গতি! দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল থেকে শ'য়ে শ'য়ে বিজেপিতে যোগদান