জোটের ‘স্বরলিপি’ লেখা হল প্রণবের মঞ্চে! বিরোধীরা ‘কোরাসে’র সুর সাধছেন
‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ার্স’। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আত্মজীবনীর তৃতীয় খণ্ড। এই আত্মজীবনীমূলক বইতেই লেখা রয়েছে জোট গড়ার ‘স্বরলিপি’। তা-ই পড়ার চেষ্টায় বিরোধীরা একজোট।
সুর বেঁধে দিয়ে গেলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিই। এবার কে কেমন সুরে গাইতে পারেন তাঁর উপরই নির্ভর করছে আগামী দিনের জোট-জল্পনা। যে ভাবনার জন্ম হয়েছিল সেই নোট বাতিলের পর্ব থেকে, সেই ভাবনার সার্থক সহাবস্থান ঘটল প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মঞ্চে। আদতে বইপ্রকাশ অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানই নয়া জোটের ইঙ্গিত দিয়ে গেল এবার।
'দ্য কোয়ালিশন ইয়ার্স'। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আত্মজীবনীর তৃতীয় খণ্ড। এই আত্মজীবনীমূলক বইতেই লেখা রয়েছে জোট গড়ার 'স্বরলিপি'। যে স্বরলিপি ভুল করে গানের সুর হারিয়ে ফেলেছিলেন রাহুলরা। এবার সেই সুরই বেঁধে দিয়ে গেলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। দিয়ে গেলেন কংগ্রেস তথা ইউপিএ-র ফিরে আসার মন্ত্র। এই বইয়ের পুরোটাই জুড়ে রয়েছে জোটের কথা। বই প্রকাশের মঞ্চেও সেই জোট-নেতাদের উজ্জ্বল উপস্থিতি।
কাকতালীয় হলেও সত্যি যে, বইয়ের ভিতর-বাইরে একেবারে মিলে গেল। বাকি রইল স্রেফ পরিবেশন। সেই দায়িত্বটুকু কে সঠিকভাবে পালন করতে পারেন, তারই অপেক্ষায় এখন প্রহর গোনা। সঙ্গীত যখন কোরাস, তখন তো হাল ধরতে হবে কোনও একজনকে। এখন তাঁরই প্রতীক্ষায় রয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মঞ্চের 'কোরাস শিল্পী'রা।
২০০৪ থেকে ২০১৪। জোটের যুগ। ইউপিএ জোটের ১০ বছরের সরকার। নানা উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হয়েছে। অনেক চড়াই-উৎরাই এসেছে। তবু বন্ধনহীন গ্রন্থিতে এক সাথে পথ চলেছে তাঁরা। পরে সেই একসাথে হাত ধরে এক পথে চলতে গিয়ে কেন পথভ্রষ্ট হল পথিকরা, তার হদিশও মিলতে পারে এদিনের মঞ্চ থেকে।
কে নেই? সীতারাম ইয়েচুরি, সুধাকর রেড্ডি, অখিলেশ যাদব, কানিমোঝি। রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধীরা তো রয়েছেনই। কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই, ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি-সহ ইউপিএ শরিক ও সমর্থকদের অন্যান্যে নেতারাও। প্রণববাবু এক সময় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। এই বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সেই প্রণববাবুই বার্তা দিয়ে গেলেন, সেদিন জোটকে সামলানো সহজ কাজ ছিল না।
প্রথম ইউপিএ থেকে সিপিএমের ছেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। পরমাণু চুক্তি নিয়ে যে সমস্যা হয়েছিল, তাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করে তিনি জানান, এখন সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠেছে সিপিএম। তেমনই তৃণমূলের দ্বিতীয় ইউপিএ জোট ছাড়ার প্রসঙ্গও আলোচনা হয়। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ এদিন উপস্থিতি ছিলেন না। অন্যান্য শরিকদের এদিন দেখা গেল মঞ্চে। তা-ই উঁকি দিয়ে গেল নয়া জোট ভাবনার।