প্রাক্তন পদের সুযোগ নিচ্ছেন সঞ্জয় বারু, ক্ষোভ প্রকাশ প্রধানমন্ত্রী দফতরের
প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান মিডিয়া উপদেষ্টা পঙ্কজ পাচুরি জানিয়েছেন, সঞ্জয় বারু অতীতে যে পদে ছিলেন তাঁর সুযোগ নিয়ে অনেক ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে নিজের বইতে লিখেছেন। গত অক্টোবরে, প্রধানমন্ত্রী নিজে একটি সাংবাদিক বৈঠকে সঞ্জয় বারুর তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সতর্ক করেছিলেন সবাইকে। এই ধরণের তথ্য বিশ্বাস করা উচিত নয় বলেও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং জানিয়েছিলেন বলে জানালেন পাচুরি।
সঞ্জয় বারু যে বইটি লিখেছেন, তার নামেই রয়েছে কটাক্ষ। বইটির নাম 'দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার'। এই বইতে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে অনেক তথ্য দেওয়া হয়েছে। যাতে বিপাকে পড়তে পারে কংগ্রেস নেতৃত্ব। বইতে লেখা হয়েছে কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী ও তাঁর জোটসঙ্গীদের চাপে পড়ে আত্মসমর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
বারু বইতে লিখেছিন, দ্বিতীয় পর্যায় মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসলেও সোনিয়া গান্ধীর হাতের পুতুল হয়ে চিলেন তিনি। ক্য়াবিনেট ও প্রধানমন্ত্রী অপিসের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ সোনিয়া গান্ধী নিজে করেছিলেন। সোনিয়া ও তাঁর সঙ্গীদের সামনে যেন 'প্রধানমন্ত্রী' মনমোহন সিং আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সঞ্জয় বারু প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ও সিনিয়র এডিটর ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে উত্ত করে বারু বলেছেন, উনি আমায় বলেছিলেন ক্ষমতার দুটি কেন্দ্র একজায়গায় থাকতে পারে না। অর্থাৎ দুই ক্ষমতাশালী ব্যক্তি একজায়গায় থাকতে পারেন না। দু'জন ক্ষমতাশালী ব্যক্তি এক জায়গায় থাকলেই তা দ্বন্দ্ব তৈরি করে। আমাকে এটা মেনে নিতে হবে দলের সভানেত্রীই ক্ষমতার কেন্দ্র। সরকার দলের কাছে জবাব দিতে বাধ্য।
বারু তাঁর বইতে লিখেছেন, মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বে ২০০৯ এর লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পরে এই জয় নিজের জয় ভাবাটা তাঁর মানসিক ভুল ছিল। তিনি বুঝতে পারেননি তাঁর কর্মক্ষমতা ও নিয়তি তাঁকে আবার প্রধানমন্ত্রী বানাবে ঠিকই, কিন্তু সোনিয়া বানাতে পারবে না।
কয়েক সপ্তাহ ধরে মনমোহন সিং ভেবেছিলেন, বেশ কিছু মন্ত্রী যাঁদের তিনি নিজের দলে চান তাদের একত্র করতে পারবেন। কিন্তু মনমোহনের স্বপ্ন করেক দিনের মধ্যেই ভেঙে চুরমার করে দেন সোনিয়া। যখন মনমোহনের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই সোনিয়া অর্থ মন্ত্রীর প্রস্তাব প্রণব মুখোপাধ্যায়কে দেন। নিজের বইতে একথাও লিখেছেন বারু।
বারু বইতে লিখেছেন, মনমোহন সিং চেয়েছিলেন তাঁর প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সি রঙ্গরাজনকে অর্থমন্ত্রী করতে। এই রঙ্গরাজনকে নিয়েই ১৯৯১-৯২ সালে আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলা করেছিলেন মনমোহন সিং। কিন্তু সোনিয়া গান্ধী তাঁর প্রস্তাব শুনতেও চাননি। বইতে এমনটাই লিখেছেন বারু।