নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রতিবাদের আবহেই দিল্লির রামলীলা ময়দানে সভা মোদীর
দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণের বিরুদ্ধে চলছে বিক্ষোভ। বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সেই আবহেই আজ দিল্লির রামলীলা ময়দানে সভায় ভাষণ রাখতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সভার উপর নজর রয়েছে সকল দেশবাসীর। চলতি অশান্তি সমপর্কে বেশ কয়েকবার টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী। শান্তি বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন। এছাড়া ঝাড়খণ্ডের ভোট প্রচারেও বেশ কয়েকবার এই প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন, তবে তা মূলত বিরোধীদের তোপ দাগতে। এখন দেখার আজ রামলীলা ময়দান থেকে এই বিষয়ে কী বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ দিল্লি ও দেশের অন্যত্র
রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি বরাবর বলে এসেছে যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন দেশের গণতন্ত্র বিরোধী নয়। এছাড়া তাদের নার্বাচনী ইস্তেহারে এনআরসি ও সিএএ উভয়ই ছিল, যা দেখেই দেশের জনগণ তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। তবে বিজেপির এই দাবি সত্ত্বেও গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে লক্ষ াধিক মানুষ। বেশ কয়েক জায়গায় এই বিক্ষোভ হিংসায় পরিণত হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছে ১৭ জন বিক্ষোভকারী। পুলিশের উপরও হামলা হয়েছে বেশ কয়েকটি স্থানে।
বিরোধীরা ভুল বোজাচ্ছে, দাবি বিজেপির
এদিকে সিএএ ও এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল দিল্লির একাংশ। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের পাশাপাশি এই আইন ও প্রস্তাবিত এনআরসির বিরোধিতায় হিংসার ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিন। সেই আবহেই আজ আসন্ন দিল্লি নির্বাচনের দামামা বাজাতে ময়দানে নামছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির বিরুদ্ধে অভইযোগ উঠেছে যে দেশের মুসলিমদের বিরুদ্ধ এই আইন। তবে বিজেপির দাবি এই আইনের সঙ্গে দেশের কোনও জনগণেরই কোনও যাগ নেই। পাশিপাশি দেশের মুসলিপ সম্প্রদায়কে এই আইন বা এনআরসি নিয়ে অভয় দেওয়ার চেষঅটাও করেছেন বিজেপি নেতারা। তবে তাতে দূর হয়নি আশঙ্কা। অপর দিকে বিজেপির অভিযোগ দেশএর মানুষকে এই আইন নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে বিরোধীরা। সেই ভুলটাকেই 'ঠিক' করা এখন চ্যালেঞ্জ প্রধানমন্ত্রীর সামনে।
দিল্লির মনজয় করতে মরিয়া মোদী
এদিকে আজকের এই সভার স্থান থেকে খুব একটা দূরে নয় দিল্লির অন্যতম উত্তপ্ত এলাকা দরিয়াগঞ্জ। আজ এই সভা থেকে মোদী দিল্লির কয়েকটি অবৈধ কলোনীর বাসিন্দাদের হাতে আবাসনের দলিল তুলে দেবেন। বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, ১৭৩১ টি অননুমোদিত কলোনির ৪০ লক্ষ বাসিন্দাকে বাড়ির মালিকানা দেওয়া হচ্ছে সরকারের তরফে। আজকের সমাবেশে দুই লক্ষেরও বেশি লোক উপস্থিত থাকবেন বলে বিজেপির আশা।
সভা ঘিরে জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা
এদিকে মোদীর এই সভা ঘিরে জঙ্গি নাশকতার রিপোর্ট হাতে এসেছিল আইবি-র হাতে। আর তাই সভা ঘিরে রামলীলা ময়দান ও প্রধানমন্ত্রীর আসার পথে নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রামলীলা ময়দানেই পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তারা সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে, অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে নজরদারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোনও দুষ্কৃতী যাতে রাজধানীতে প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রতিটি গাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। রবিবার অনুষ্ঠান চলাকালীন রামলীলা ময়দানগামী সমস্ত রাস্তায় সিসিটিভি ক্য়ামেরার নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।