কমলনাথের সরকার বাঁচলেও জারি থাকবে 'অপারেশন কমল', ইঙ্গিত বিজেপি নেতাদের কথায়
মধ্যপ্রদেশের নিখোঁজ বিধায়কদের মধ্যে থেকে ৮ জনকে 'উদ্ধার' করতে সক্ষম হয়েছে কংগ্রেস। এর ফলে মধ্যপ্রদেশের কমনাথ সরকারের পতনের সম্ভাবনা কিছুটা হলেও দূর হয়েছে। তবে বিজেপি-র 'অপারেশন কমল' কী এত শীঘ্রই বন্ধ হয়ে যাবে। উঠছে প্রশ্ন, বাড়ছে জল্পনা।
মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস বিধায়কদের নিয়ে চাপানউতোর
জানা যায়, কমলাথ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন ১৪ জন কংগ্রেস বিধায়ক। গত মঙ্গলবার থেকে এই নিয়ে চাপানউতর শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে এই নিয়ে চাপানউতর শুরু হয়। এদের মধ্যে চার কংগ্রেস বিধায়ক আত্মগোপন করেন। যার পর থেকেই শুরু বিজেপি-কংগ্রেস তরজা। হর্স ট্রেডিংয়ের অভিযোগ এনে বিজেপিকে তোপ দাগে কংগ্রেস। তবে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপি দাবি করে যে কংগ্রেসের অন্তরদ্বন্দ্বের কারণেই এই বিধায়করা চলে গিয়েছেন।
পদত্যাগ করেন এক কংগ্রেস বিধায়ক
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার একজন কংগ্রেস বিধায়ক হরদীপ দাং পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন। স্পিকার এনপি প্রজাপতিকে পদত্যাগপত্রে কংগ্রেস বিধায়ক লিখেছেন, সরকার গঠনের পর থেকে দলে ভীষণভাবে উপেক্ষিত হয়ে থাকতে হয়েছে তাঁকে। দলের কোনও মন্ত্রীই দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের সঙ্গে থাকতে চায় না। তাই এই সব কারণই পদত্যাগ পত্রে লিখেছেন তিনি।
বিজেপির বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ আনে কংগ্রেস
এর আগে দিগ্বিজয় সিং অভিযোগ করেন যে বেঙ্গালুরুতে একটি রিসর্টে রাখা হয়েছে বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কদের। তাঁদের ২৫ থেকে ৩৫ কোটি টাকা দিয়ে কেনার চেষ্টা করছে বিজেপি। মঙ্গলবার রাতেই গুরুগ্রামের একটি রিসর্টে থেকে ৬ কংগ্রেস বিধায়ককে কোনও মতে উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।
মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার সমীকরণ
মধ্যপ্রদেশে ভোট গণিত বলছে, ২৩১ টি আসনের ম্যাজিক ফিগার ১১৫ টি আসন। এই পরিমাণ আসন যার দখলে থাকবে, তিনিই মধ্যপ্রদেশের তখতে বসবেন। সেই মতো কংগ্রেস ১১৪ জন বিধায়ক নিয়ে মধ্যপ্রদেশের শাসকের আসনে রয়েছে। সঙ্গে এসপি, বিএসপি ও নির্দল কয়েকজন বিধায়ক রয়েছেন কংগ্রেসের সঙ্গে। বিজেপির রয়েছে ১০৭ জন বিধায়ক। এদিকে, শোনা যাচ্ছে কংগ্রেসের ঘর ভেঙে ১০ জনকে নিজের দিকে করেছে বিজেপি। বর্তমানে মধ্যপ্রদেশে বিধায়কের সংখ্যা ২২৮ জন। দুই বিধায়কের মৃত্যুতে মাঝে রয়েছে ২ টি শূন্যস্থান।
রাজ্যসভা নির্বাচন নিয়ে তৎপর বিজেপি
এদিকে কয়েকদিনের মধ্যেই রাজ্যসভার সদস্যদের নির্বাচন হবে ৫৫টি আসনের জন্য। এর মধ্যে ৩টি হবে মধ্যপ্রদেশের থেকে। সেই তিন আসনের দুটি আপাতত বিজেপির। সেই দুই আসন ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপি। এই বিধায়কদের সরানোর পিছনে সরকার ফেলা যেমন একটি কারণ হতে পারে, সরকমই রাজ্যসভায় নিজেদের পাল্লা ভারী করাও একটি অন্যতম কারণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
জারি থাকবে অপারেশন কমল
এই জল্পনা বেড়েছে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতাদের কথায়। মধ্যপ্রদেশ বিজেপির প্রধান নরোত্তম দাস বলেন, 'বিধায়করা (কংগ্রেস) আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কংগ্রেস নেতারা বলছেন তাঁরা কাজ করতে পারছেন না। তাঁরা মানুষের কাছে জবাব দিতে পারছেন না। আমার সঙ্গে কংগ্রেসের ১৫ থেকে ২০ জন বিধায়ক রয়েছেন।'
কংগ্রেস সরকার ফেলতে উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপি!
একই সুরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, 'আমরা ম্যাজিক ফিগার থেকে মাত্র ৭টি আসন দূরে। সেই শূন্য স্থান যদি পূরণ কার যায় তবে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত আমরা বসে থাকব কেন?' অপর এক বিজেপি নেতা গোপাল ভার্গব দাবি করেন, 'ইচ্ছা করলে আমরা কয়েক ঘণ্টায় এই সরকার ফেলে দিতে পারি।' এরই মাঝে অপারেশন কমল জারি থাকার ইঙ্গিত মেলে অপর এক নেতার কথায়, 'এটা স্পষ্ট যে কংগ্রেসের বিধায়করা রুষ্ঠ। যদিও আমরা এবারে সরকার ফেলতে সক্ষম হইনি। পরে যে হব না সেটাকে বলতে পারে!'