ওমিক্রনের সাব–ভ্যারিয়েন্ট বিএ.২ আধিপত্য চালাচ্ছে দেশে, জানালো কেন্দ্র
ওমিক্রনের সাব–ভ্যারিয়েন্ট বিএ.২ আধিপত্য চালাচ্ছে দেশে, জানালো কেন্দ্র
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে যে প্রাথমিক ইঙ্গিত অনুসারে দেশের নির্দিষ্ট কিছু ভৌগোলিক অঞ্চলে কোভিড–১৯ কেস মালভূমি স্তরে রয়েছে, তবে এই প্রবণতার ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যেতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা বজায় রাখা দরকার। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে ৯০ শতাংশের ওপর সক্রিয় করোনা কেসগুলি এখন বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছে, যা রোগের হালকা থেকে মাঝারি ক্লিনিকাল তীব্রতা নির্দেশ করে।
উচ্চ ও নিম্ন করোনা কেস
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশ ও রাজস্থানে উচ্চ করেনা কেসের রেকর্ড রয়েছে এবং পজিটিভ হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, ওড়িশা, হরিয়ানা ও পশ্চিমবঙ্গে করোনা কেস হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি পজিটিভ হারও কমতে দেখা গিয়েছে। দেশের এগারোটি রাজ্যে ৫০ হাজারের ওপর সক্রিয় করোনা কেস যেখানে রয়েছে, সেখানে কর্নাটক, মহারাষ্ট্র ও কেরলেই সক্রিয় করোনা কেসের সংখ্যা ৩ লক্ষের ঊর্ধ্বে। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এও জানানো হয়েছে দেশের মোট সক্রিয় করোনা কেসে ১০টি রাজ্য থেকে ৭৭ শতাংশ সক্রিয় কেসের অবদান আছে।
হোম আইসোলেশনে রয়েছে যারা
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এও জানানো হয় যে ৯০ শতাংশের অধিক করোনা কেস হোম আইসোলেশনে রয়েছে, যা রোগের হালকা থেকে মাঝারি ক্লিনিকাল তীব্রতা নির্দেশ করে। নিম্ন কেসগুলির ক্ষেত্রে অক্সিজেন সাপোর্ট বা আইসিইউ বেডের প্রয়োজন পড়ছে কিনা সেই প্রবণতার ওপর নজর রাখতে হবে ক্রমাগত।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়েভের তুলনা
মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় ওয়েভের করোনার পরিসংখ্যানের সঙ্গে বর্তমান তৃতীয় ওয়েভের করোনা কেসের তুলনা করা হয়। শেষ দুটি করোনা ওয়েভের মধ্যে মূল সূচকের তুলনা করে দেখা গিয়েছে যে কোভিড-১৯ কেস ৭ মে, ২০২১ সালে শীর্ষে পৌঁছেছিল এবং ভারতে মোট ৪,১৪,১৮৮ টি নতুন কেস এবং ৩,৬৭৯ জন মারা গিয়েছিল। ওইদিন মোট ১৭,৪০,৪৪৬টি করোনা টেস্ট হয়েছিল এবং প্রায় দেশের প্রাপ্তবয়স্কের ৩ শতাংশ সম্পূর্ণভাবে টিকাকরণ করিয়েছিল। অন্যদিকে, ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি, মোট ৩,৪৭,২৫৪টি নতুন কেস ও ৪৩৫ টি মৃত্যুর রিপোর্ট হয়। ওইদিন মোট ১৯,৩৫,৯১২টি করোনা টেস্ট সম্পন্ন হয়েছিল এবং ৭৫ শতাংশ সম্পূর্ণভাবে টিকাকরণ করিয়েছিল। মন্ত্রক পর্যবেক্ষণ করেছে যে সক্রিয় মামলার সংখ্যা এবং সংশ্লিষ্ট মৃত্যু আগের ওয়েভের তুলনায় বর্তমান বৃদ্ধির সময় অনেক কম। টিকাকরণ সহায়তা করেছে দেশে কম সংক্রমণ, হাসপাতালে ভর্তি ও কেসের তীব্রতা কম করতে।
ওমিক্রন কেস বাড়ছে
আইসিএমআরের ডিরেক্টর-জেনারেল বলরাম ভার্গব জানিয়েছেন যে, যেসব রাজ্যে কম টিকাকরণ হচ্ছে তাদের দ্রুততা আনতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, 'একাধিক রোগে আক্রান্তদের আরও বেশি করে যত্নবান হতে হবে।' ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল (এনসিডিসি)-এর ডিরেক্টর সুজিত সিং জানিয়েছেন যে ভারতে ৯,৬৭২টি ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট কেস সনাক্ত হয়েছে এবং সিক্যুয়েন্সিংয়ের পর ১,৫৭৮টি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কেস সনাক্ত হয়েছে দেশ থেকে। এনসিডিসি ডিরেক্টর জানিয়েছেন যে ওমিক্রন-এর বিএ.১, বিএ.২ ভ্যারিয়েন্ট ভারতে সনাক্ত করা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে সাব-টাইপ বিএ.৩ ভারতে এখনও সনাক্ত করা যায়নি। ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ.২ এখন ভারতে বেশি প্রচলিত।
ওমিক্রনের তিনটে বিভাগ
বিএ.২ স্ট্রেইন, যা সাধারণত 'স্টেল্থ ভার্সান' নামে পরিচিত, তা শুধুমাত্র জেনোম সিক্যুয়েন্সের পরই সনাক্ত করা সম্ভব ও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের একটি উপ-বংশ গঠন করে, যা এখন তিনটি উপ-প্রকারে বিভক্ত হয়েছে, যথা বিএ.১, বিএ.২ এবং বিএ.৩। মন্ত্রক দেশে করোনা কেস বৃদ্ধির মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবও উল্লেখ করেছে। ইতিমধ্যে, দিল্লিতে কোভিড-১৯ মৃত্যুর ৬৪ শতাংশ এমন লোকেদের মধ্যে ছিল যারা টিকা নেননি এবং একাধিক রোগে আক্রান্ত।