ওড়িশা: বাবা-মা খাতা-পেন্সিল কিনে দিতে না পারায় আত্মঘাতী ছাত্রী
পুলিশসূত্রে জানানো হয়েছে ওই ছাত্রীর নাম জয়ন্তী। ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার গঞ্জম জেলার অক্সা শহরের এক দারিদ্র পরিবারে জন্ম জয়ন্তীর। মেয়ের স্কুলের পয়সা জোগাতেই হিমশিম খাচ্ছেন মা-বাবা। সম্প্রতি ষষ্ঠ শ্রেণীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে জয়ন্তী। হাতে টাকা না থাকায় খাতা-পেন্সিন কিনে দিতে পারেননি বাবা। এদিকে ২৩ জুন থেকে স্কুলে সপ্তম শ্রেণীর পড়াশোনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
খাতা, পেন্সিল না নিয়েই ক্লাসে যায় জয়ন্তী। এদিকে শিক্ষক-শিক্ষিকিরা পড়া শুরু করিয়ে দিলেও খাতা পেন্সিল না থাকায় বিপাকে পড়ে জয়ন্তী। এরপর বাড়িতে এসে বারবার বাবার কাছে খাতা-পেন্সিল কেনার টাকা চাইতে থাকে সে। আজ-কাল করে করে বাবাও ২ দিন কাটিয়ে দেন কিন্তু খাতা-পেন্সিল কেনার টাকা জোগাড় করতে পারেননি তিনি।
সংবাদ সংস্থা আইএনএসকে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, "তাঁর বাবা-মা টাকা জোগাড়ের জন্য কিছু সময় চেয়ে নেন। কিন্তু দেরি হওয়ায় মর্মাহত হয় ওই ছাত্রী। বুধবার বাড়িতে যখন মা-বাব ছিলেন না তখন প্রথমে গায়ে কেরোসিনে দিয়ে, পরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী।"
ওই পুলিশ আধিকারিক এও জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর শরীরের ৫০ শতাংশের বেশি জ্বলে গিয়েছে। আগুন লাগানোর পর চিৎকার শুনে ছুটে যান প্রতিবেশীরা। কয়েকজন প্রতিবেশী বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর।
জয়ন্তীর বাবা দৈনন্দিন মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। সম্প্রতি স্ট্রোকের ফলে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ায় পরিবারের আয় কমে গিয়েছে। জয়ন্তীর মা বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে যে টুকু আয় করেন তাতেই সংসার চলে। জয়ন্তী ছাড়াও তাঁদের আরও ৩ সন্তান রয়েছে। জয়ন্তীর মৃত্যুতে স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন তাঁরা।