এনপিআর এর জন্য লাগবে না প্যান কার্ডের তথ্য, ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের
এনপিআরে লাগবে না প্যান কার্ডের তথ্য, ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের
এবছরের পয়লা এপ্রিল থেকে চালু হওয়া জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টারে নাম তোলার জন্য প্যান কার্ডের তথ্যের প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পরীক্ষামূলকভাবে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অধিকাংশই তাঁদের প্যান কার্ডের তথ্য দিতে অস্বীকার করেন। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৩০ লক্ষ মানুষ প্যান কার্ডের তথ্য দিতে নারাজ
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ‘৭৩টি জেলাকে এই পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত করা হয়, ৩০ লক্ষ মানুষের স্বতন্ত্র মতামত সংগ্রহ করে দেখা গিয়েছে ৮০ শতাংশ মানুষ সব ধরনের তথ্য দিতে স্বেচ্ছায় রাজি থাকলেও তাঁরা প্যানের তথ্য দিতে দ্বিধাবোধ করছেন। সে কারণে আমরা এনপিআর ফর্মে এই কলমটিকে বাদ দিয়েছি।' স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘তথ্যসংগ্রহকারীদের দ্বারা কোনও নথি যাচাই করা হবে না। ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর, ভোটার পরিচয়পত্রের কার্ড নম্বর এবং আধার কার্ড নম্বরের মতো তথ্যের পাশাপাশি নিজের মাতৃভাষা কি তার জন্য সংশোধীত ফর্মে আলাদা কলম রাখা হবে।'
পশ্চিমবঙ্গ সহ এখনও বেশ কয়েকটি রাজ্য বিরোধিতা করছে
এই এনপিআর-এর বিরোধিতা করে পশ্চিমবঙ্গ ও কেরল ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, তারা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করছে এর জেরে এনপিআরও করতে দেবে না রাজ্যে। তারা জেলা জনগণনা কমিশনারদের মাধ্যমে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে সরকারিভাবে অনুরোধ করেছে, ‘জনশৃঙ্খলা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য' এনপিআরের তথ্য সংগ্রহ আটকে রাখা উচিত। উভয় রাজ্যই এই এনপিআরের বিরোধিতা করছে। সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভের পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছিল যে এনআরসি রাখার কোনও প্রস্তাব ছিল না এবং এনপিআরের সময়ে সংগৃহীত ডেটা এনআরসির জন্য ব্যবহৃত হবে না। জানা গিয়েছে, "বেশিরভাগ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালা, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখ ও পুদুচেরি সহ ঘর তালিকাভুক্তির জনগণনা এবং এনপিআর প্রক্রিয়াটির জন্য পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তবে এখনও এ রাজ্যগুলি এনপিআর তথ্য সংগ্রহের তারিখ জানায়নি। তারা ৩১ শে মার্চের আগে তারিখগুলি জানাতে পারে।'
এনপিআরে কি কি চাওয়া হবে
বিরোধিতার মুখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, এনপিআর একটি স্বাভাবিক জনগণনা পদ্ধতি। গ্রাম, মফঃস্বল, জেলা, রাজ্য, জাতীয় স্তরে এই জনসংখ্যা রেজিস্ট্রার পদ্ধতি কার্যকর করা হয়েছে। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন এবং ২০০৩ সালের নাগরিক রেজিস্ট্রেশন আইনের আওতায় এই নিয়ম চালু রয়েছে। নিয়ম ভঙ্গ করলে হাজার টাকার জরিমানার বিষয়টিও রয়েছে। এর আগে ২০১০ সালে শেষ জনসংখ্যা রেজিস্টারের জন্য তথ্য সংগ্রহ হয়েছিল। ২০১১ সালে জনগণনার ক্ষেত্রে তা কাজে লাগানো হয়েছিল। ২০১৫ সালে ফের ঘরে-ঘরে সমীক্ষা চালিয়ে সে তথ্য আপডেট করা হয়েছিল। তখনই আধার কার্ড, ফোন নম্বর, এসব চাওয়া হয়েছিল সরকারি তরফে। এবারও তেমনটাই হবে বলে জানাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই সঙ্গে তথ্য চাওয়া হতে পারে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ভোটার পরিচয়পত্রের। কিন্তু সেইসঙ্গে প্যান কার্ডের তথ্য চাওয়া হবে না। সূত্রের খবর, ৩০ লক্ষ মানুষ প্যান কার্ডের তথ্য দিতে রাজি না হওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্র জানিয়েছে, এর আগে এনপিআরের জন্য ১৫টি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২০-তে এনপিআরের জন্য ২১টি বিষয়ে তথ্য চাওয়া হবে। তাতে আধার, ভোটার কার্ডের তথ্য ছাড়াও বাবা-মায়ের জন্মতারিখ ও তাঁদের জন্মস্থানের বিষয়টিও থাকবে।
কোনও ক্ষমা নয়, নির্ভয়া কাণ্ডে অন্যতম আসামীর প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ রাষ্ট্রপতির