বিহারের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হলেন জিতনরাম মঞ্ঝি
গত শনিবার নীতীশ কুমার নির্বাচনী বিপর্যয়ের দায় মাথায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। পরে অবশ্য সংযুক্ত জনতা দলের বিধায়কদের চাপের মুখে পড়ে নিজের পদত্যাগের বিষয়ে পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নীতীশ কুমার, এমন জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু নীতীশ কুমার আর মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন না, এ কথা স্পষ্ট করে এদিন বিকেলে জানিয়ে দেন দলের বর্ষীয়ান নেতা শরদ যাদব। তার পরই ঠিক হয়, মুখ্যমন্ত্রী পদে জিতনরাম মঞ্ঝির নাম প্রস্তাব করা হবে। যদিও এতে শাসক দলের বিধায়কদের একাংশ ক্ষুব্ধ। কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলেননি। আসলে এই মানুষটির পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির কথা ভেবেই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল এই সুপারিশ মেনে নিয়েছেন।
এদিন শরদ যাদব বলেন, ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তটি নীতীশ কুমারের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হলেও এই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির নিরিখে এটিই সঠিক সিদ্ধান্ত । এই সিদ্ধান্ত নীতীশজির পক্ষেও সঠিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রবিবার সংযুক্ত জনতা দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন নীতীশ কুমার। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে সে বৈঠক। বৈঠকের মধ্যেই বিধায়করা জানিয়ে দেন তারা নীতীশ কুমারকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে চান। নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত বদলের জন্যও তাঁরা চাপ দিতে থাকেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
রাজ্য শাসনের দায়িত্ব না থাকলে আরও সময় দিতে পারব দলকে, বললেন নীতীশ কুমার
দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে বিধায়করা নীতীশ কুমারকে বলেন, যে তিনি যদি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন তাহলে আখেরে দলেরই ক্ষতি হবে। তাই বিধায়কদের দাবি, নিজের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন নীতীশ কুমার। যদিও বৈঠকে নীতীশ কুমার জানান, ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ালেও দলের ক্ষতি হবে না। রাজ্য শাসনের চাপ মাথার উপর না থাকলে দলের সাংগঠনিক কাজে আরও বেশি সময় তিনি দিতে পারবেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই বিরোধী শিবির, বিজেপি তাঁর পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে 'নৌটঙ্কি'(নাটক) বলে ব্যাখ্যা করেছে।
সংযুক্ত জনতা দলের বিধায়কদের নিয়ে এই বৈঠকে বিধায়কদের একাংশ জানান, নীতীশ কুমারের পক্ষেই তাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে এবং নিজেদের নেতা হিসাবে নীতীশ কুমারকেই তাঁরা পুনর্নির্বাচিত করবেন। সংযুক্ত জনতা দলের শীর্ষ নেতা নরেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, বর্তমান বিধায়করা নিজেদের সমর্থন ও মতামত জানিয়ে দিয়েছেন।
এর মধ্যে আবার রাষ্ট্রীয় জনতা দল বিধায়ক সম্রাট চৌধুরি, রাম লখন, রাম রামন এবং জাভেদ ইকবাল নীতীশ কুমারের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফার পর তাঁকে সমর্থন জানিয়ে বিহার বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন।