অসময়ে বাইরে না বেরোলে ঘটত না এই ঘটনা, বদায়ুঁ গণধর্ষণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য মহিলা কমিশনের সদস্যের
বদায়ুঁ গণধর্ষণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য মহিলা কমিশনের সদস্যের
উত্তরপ্রদেশে হাথরাস ঘটনার পর ফের নৃশংস গণধর্ষণের সাক্ষী থাকল রাজ্য। গত ৩ জানুয়ারি এক ৫০ বছরের মধ্যবয়সী মহিলাকে গণধর্ষণ করে খুন করে মন্দিরের পুরোহিত সহ অন্য ২ জন। তবে দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডই হোক বা হাথরস অথবা বদায়ু, সব ক্ষেত্রেই সমাজ প্রথমেই মেয়েদের দোষটাই দেখে। এখানেও তার ব্যতিক্রম হল না। বদায়ুঁতে ঘটা এই ঘটনার পর জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য আক্রান্তের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছেন যে ওই মহিলা সন্ধ্যার সময় একা বাড়ির বাইরে না বেরোলে এই ঘটনা ঘটত না।
মহিলা বাইরে না বেরোলে ঘটনা এই ঘটনা
জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা চন্দ্রমুখি দেবী, যিনি প্যানেলের পাঠানো দুই সদস্যের মধ্যে একজন, যাঁরা ওই আক্রান্ত মহিলার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। ওই দল ঘটনাস্থলও ঘুরে দেখেন। চন্দ্রমুখি দেবী বলেন, 'কারোর উস্কানিতে ওই মহিলার উচিত হয়নি অসময়ে বাইরে বেরোনো। আমার মনে হয় তিনি যদি সন্ধ্যার সময় বাড়ির বাইরে না যেতেন অথবা পরিবারের কাউকে যদি তাঁর সঙ্গে নিতেন, তবে এই ঘটনা আটকানো যেত।' দেবী এও জানিয়েছেন যে এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তিনি মোটেও খুশি নন। তিনি বলেন, 'পুলিশ যদি এই ঘটনায় দ্রুত হস্তক্ষেপ করত তবে হয়ত তারা আক্রান্তকে বাঁচাতে পারত।'
কি ঘটেছিল ওইদিন
রবিবার, এক ৫০ বছরের মহিলা, যিনি মন্দিরে গিয়েছিলেন, তাঁকে রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর পরিবারের সদস্যরা মন্দিরের পুরোহিত ও তার দুই সদস্যের ওপর ধর্ষণ ও খুনের অবিযোগ আনে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার রাতেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ, তবে এখনও পলাতক পুরোহিত। চন্দ্রমুখি দেবী বলেন, 'আমি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সন্তুষ্ট নই। সময়মতো পদক্ষেপ করলে হয়ত মহিলার প্রাণ বাঁচতে পারতো।'
পুলিশি উদাসীনতা
তিনি বলেন, 'এসএসপি আমায় জানিয়েছে যে ওই মহিলাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় এবং তিনি যদি চিকিৎসা পেতেন তবে হয়ত বেঁচে যেতেন। এফআইআরও দেরি করে হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের পরীক্ষাও অনেক দেরিতে হয়েছে।' চন্দ্রমুখি দেবী এও জানিয়েছেন যে এই ঘটনা সবচেয়ে বিকৃত ও দুর্ভাগ্যজনক। এসএসপি সংকল্প শর্মা বুধবার জানিয়ে ছিলেন যে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নিশ্চিত করে ধর্ষণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং মহিলার গোপনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন ও পায়ে আঘাত রয়েছে। এই মামলায় উদাসীনতা দেখানোর জন্য উগহাতি পুলিশ থানার স্টেশন হাউস অফিসারকে বহিস্কার করে দেওয়া হয়। মহিলা কমিশনের সদস্য এই ঘটনাকে সবচেয়ে নৃশংস বলে অ্যাখা দিয়ে জানিয়েছেন যে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সরকার এ ধরনের ঘটনা খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখে কিন্তু তাও ঘটছে।
অপরাধীদের মনে পুলিশের ভয় নেই
মহিলা কমিশনের সদস্য জানান, ওই মহিলা তাঁর পরিবারের জন্য জীবিকা নির্বাহ করেন এবং অভিযুক্তরা পরিকল্পনা করে তাঁকে ফোনের মাধ্যমে ডেকে পাঠান। তিনি জানিয়েছেন, 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' ভয় পাচ্ছে না অপরাধীরা এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের পদক্ষেপই তাদের ওপর জনগণের আস্থা ফের ফিরিয়ে আনবে। বুধবার জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা এই ঘটনা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজিকে দ্রুত পদক্ষেপ করার জন্য চিঠি লেখেন।
কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ
হাথরস ঘটনার জের কাটতে না কাটতেই ফের এ ধরনের ঘটনা ঘটায় প্রশ্নের মুখে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। যদিও মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই ঘটনার জন্য কড়া আইনি পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং বরেলির এডিজিকে এই ঘটনার তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের বিশেষ টাস্ক ফোর্স তদন্তে সহায়তা করবে বলেও জানা গিয়েছে।
প্রতীকী ছবি
পাহাড়ে ফের তাল কাটছে তৃণমূলের, গুরুং ফিরতেই জেগে উঠেছে গোর্খাল্যান্ডের দাবি, মোদীকে চিঠি বিনয়ের