নমস্তে ট্রাম্প: সিএএ নেই, ট্রাম্প-মোদী যৌথ ভাষণে উঠে এল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রসঙ্গ
নমস্তে ট্রাম্প: সিএএ নেই, ট্রাম্প-মোদী যৌথ ভাষণে উঠে এল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রসঙ্গ
ট্রাম্পের ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে দিল্লিতে বৈঠকে বসেন নরেন্দ্র মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। মনে করা হয়েছিল এই বৈঠকে সিএএ ও এনআরসি নিয়ে মোদীর সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে নরেন্দ্র মোদীকে অস্বস্তিতে না ফেলে সেই বিষয়ে কোনও শব্দ করেননি ট্রাম্প। উল্টে বৈঠক শেষে যৌথ ভাষণে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের গলাতেই উঠে আসে পারস্পরিক সাহায্যের কথা।
ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক
প্রধানমন্ত্রী মোদী যৌথ ভাষণের সূচনা করে বলেন, 'ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিশেষ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হল জনগণের সাথে যোগাযোগ। পেশাদাররা, শিক্ষার্থীরা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় প্রবাসীরা এর একটি বড় অবদান রয়েছে। আমরা (ভারত এবং আমেরিকা) সন্ত্রাসবাদের সমর্থনকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সংকল্প নিয়েছি।'
আমেরিকা ও ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক
এরপর মোদী দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, 'আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রীদের বাণিজ্য নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমরা উভয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমাদের এই বাণিজ্য আলোচনার ক্ষেত্রে আইনী রূপ দেওয়া উচিত। আমরা একটি বড় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করার বিষয়েও রাজি হয়েছি।'
ভারতে এসে আপ্লুত ট্রাম্প
এদিকে নিজের ভাষণের শুরুতেই এই সফরে এসে যে তিনি কতটা আনন্দ পেয়েছেন, তা তুলে ধরেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'মেলানিয়া এবং আমি ভারতের মহিমা এবং ভারতীয় জনগণের ব্যতিক্রমী উদারতা এবং দয়া দেখে অবাক হয়েছি। যেভাবে আপনার (প্রধানমন্ত্রী মোদী) রাজ্যের নাগরিকরা আমাদের যে দুর্দান্ত স্বাগত জানিয়েছে তা আমরা সবসময় মনে রাখব।'
ট্রাম্পের জামানায় রপ্তানি বেড়েছে
এরপর ট্রাম্প দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কে বলেন, 'আমরা একটি বিস্তৃত বাণিজ্য চুক্তির জন্য অসাধারণ অগ্রগতি করেছি এবং আমি আশাবাদী যে আমরা উভয় দেশের মানুষের কাছে এটিকে গুরুত্বের সাথে পৌঁছাতে পারব। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ভারতে মার্কিন রফতানি প্রায় ৬০ শতাকংশ বেড়েছে। উচ্চমানের আমেরিকান শক্তির রফতানি বেড়েছে ৫০০ শতাংশ।'
৫জি নেটওয়ার্ক নিয়ে আলোচনা হয় ট্রাম্প-মোদীর
প্রযুক্তিগত দিকেও দুই দেশের একে অপরকে সহোযগিতার প্রসঙ্গ উঠে আসে ট্রাম্পের বক্তব্যে। তিনি বলেন, 'আমার এই সফরকালে আমরা একটি সুরক্ষিত ৫জি ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের গুরুত্বের বিষয়ে আলোচনা করি। এই উদীয়মান প্রযুক্তির স্বাধীনতা, অগ্রগতি, সমৃদ্ধির হাতিয়ার হওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেছি আমরা। এই ক্ষেত্রে দমন ও সেন্সরশিপের প্রয়োজনীয়তার সার্থকতা নিয়েও কথা হয়।'
সন্ত্রাসবাদ রুখতে ভারতের সঙ্গে হাত মেলাবে আমেরিকা
কড়া হাতে সন্ত্রাসবাদ রোখার বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, 'আমাদের আলোচনায়, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং আমি আমাদের দেশের নাগরিকদের উগ্র ইসলামী সন্ত্রাসবাদ থেকে রক্ষার জন্য দু'দেশের একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে কথা বলি। আমরা এই বিশয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সেই অনুযায়ী কাজ করার বিষয়ে একে অপরকে সবরকমের সহযোগিতা করব। এই প্রয়াসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সাথে ভালো ভাবে কাজ করছে। তাদের দেশের মাটিতে কাজ করে এমন সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করতে আমেরিকা তৎপর।'
৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণের চুক্তি ভারত-আমেরিকার
পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে দুই দেশের মধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে চুক্তি। তিনি এই বিষয়ে বলেন, 'আজকের বৈঠকের শুরুতেই আমরা ভারতকে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপাচি ও এমএইচ -৬০ রোমিও হেলিকপ্টার বিক্রি সহ ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পরিমাণের চুক্তি চূড়ান্ত করি। উন্নত মানের আমেরিকান সামরিক সরঞ্জাম কেনার চুক্তির সাথে আমাদের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসারের বিষয়েও আলোচনা করি। এগুলি আমাদের যৌথ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে।'