দেশী প্রযুক্তিতে তৈরি হল আইএনএস বিক্রান্ত, উদ্বোধন আগামী মাসে
দেশী প্রযুক্তিতে তৈরি হল আইএনএস বিক্রান্ত, উদ্বোধন আগামী মাসে
ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরি আইএনএস বিক্রান্ত উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। জানা গিয়েছে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর অত্যাধুনিক এই যুদ্ধজাহাজের উদ্বোধন হবে। বিক্রান্তের যাত্রা শুরু হবে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে।
৪৫ হাজার টন স্টিল ব্যবহার করা হয়েছে ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তির এই রণতরি তৈরিতে। এই বিপুল পরিমাণ স্টিল দিয়ে সহজেই তৈরি হতে পারে চার চারটি আইফেল টাওয়ার। এই রণতরি দেড় হাজার সেনাসদস্য ও ৩০টির বেশি যুদ্ধবিমান বহনে সক্ষম। এটি লম্বায় ২৬২ মিটার। টানা ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে এই দেশী প্রযুক্তির বিক্রান্ত।
ভারত বহু দিন ধরেই সমুদ্রে নিজেদের শক্তি বাড়াতে চেষ্টা করছে। অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রান্ত দেশের নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে । এর ফলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ভারত এই রণতরির মাধ্যমে তা বলাই যেতে পারে। ৪৫ হাজার টন ওজনের এ রণতরি সামরিক বাহিনীর দেড় হাজার সদস্য ও ৩০টি যুদ্ধবিমান বহনে সক্ষম।ভারতীয় নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল এম এ হামপিহলি বলেন, যুদ্ধজাহাজটি উদ্বোধনের মাধ্যমে ভারতীয় নৌবাহিনীর নতুন একটি মাইলফলক উন্মোচন হবে।
নৌবাহিনীর এ কর্মকর্তা আরও বলেন, "নিজেদের প্রযুক্তি ও নকশায় যুদ্ধজাহাজটি তৈরি করা হয়েছে। যেকোনও সংকট মোকাবিলার পাশাপাশি মানবিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এই জাহাজ ব্যবহার করা যাবে। এর মাধ্যমে সমুদ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি দেশকে আরও সুরক্ষিত করা যাবে।"
১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে আইএনএস বিক্রান্ত জাহাজটিতে ।এছাড়া ইজরায়েলের তৈরি আরও বেশ কয়েকটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংযোজন করা হয়েছে। জাহাজে যে সব সেনা সদস্যরা থাকবেন তাদের চিকিৎসার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক হাসপাতাল ও চিকিৎসা সরাঞ্জাম। সঙ্গে রয়েছে খাবার তৈরির আধুনিক সব ব্যবস্থাও।
জাহাজের নকশার কাজ ১৯৯৯ সালে শুরু হয় এবং জাহাজের তলিটি ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্থাপন করা হয়। বিমানবাহী রণতরীটিকে ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বর তার শুষ্ক ডক বা ড্রাই ডকের বাহিরে ভাসমান হয় এবং ২০১৩ সালে চালু করা হয়। জাহাজটি বেসিন পরীক্ষাসমূহ ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে সম্পন্ন করে এবং ২০২১ সালের ৪ঠা আগস্ট সমুদ্র পরীক্ষা শুরু করে। এটিকে ২০২২ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে ভারতীয় নৌবাহিনীর পরিষেবায় নিযুক্ত করা হবে। প্রথম সমুদ্র পরীক্ষার সময় প্রকল্পের মোট খরচ প্রায় ২৩,০০০ কোটি টাকা।