স্বামী ৩ বারের বিধায়ক, লোকসভা প্রার্থী, স্ত্রী হাটে সবজি বিক্রি করেই আনন্দ পান
আর্থিক সচ্ছলতা থাকা সত্ত্বেও কেন এমন অতি সাধারণ জীবনযাপন? উত্তরে বললেন, আমি অনেক বছর ধরেই এভাবে সবজি বিক্রি করি। কিন্তু আমার স্বামী বিধায়ক ছিলেন মানেই আমি সবজি বিক্রি করা ছেড়ে দেব তা নয়। এই জীবিকাই তো আমাকে আর্থিক স্বাধীনতা দিয়েছে। এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়া খবর অনুযায়ী এমনটাই জানিয়েছেন মুলানি দেবী।
মুলানি দেবী জানিয়েছেন, সবজি বিক্রি করে দৈনন্দিন ২০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয় তাঁর। এই টাকার কিছু অংশ সঞ্চয় করেন তিনি, আর বাকিরা খরচ করেন পরিবারের জন্য। বাগান তৈরি করেছেন নিজের সবজির জন্য। দুই ছেলে স্বনির্ভর। চাষাবাদে বিশেষ আগ্রহও নেই। তাই শ্রমিক দিয়েই বাগানে সবজির চাষ করান তিনি। কিন্তু বিক্রি করার ক্ষেত্রে কারোর উপর নির্ভর করে থাকেন না।
'এই জীবিকাই আমাকে আর্থিক স্বাধীনতা দিয়েছে, স্বামী বিধায়ক বলে কাজ ছাড়তে পারব না'
স্বামীর কোনও আপত্তি নেই স্ত্রীয়ের এমনতরো সাধারণ জীবনযাপনে। না। স্বামী লোকনাথ মাহাতো অল ঝাড়খন্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন পার্টির প্রার্থী। এই কেন্দ্রে বিজেপির জয়ন্ত সিনহা, কংগ্রেসের সৌরভ নারায়ণ সিংয়ের মতো আভিজাত প্রার্থী রয়েছেন। যাদের সম্পত্তি যথাক্রমে ৫৫ কোটি এবং ৪০ কোটি। আজকের দিনে বিধায়ক বা সাংসদ হয়ে গেলে নিজেদের 'ভিআইপি স্ট্যাটাস' দেখানোর জন্য যেখানে লোকজন উঠে পড়ে লাগেন। কিন্তু তাদের থেকে অনেক আলাদা লোকনাথবাবুও। স্ত্রীয়ের সবজি বিক্রির গল্প সবাইকে বুক ফুলিয়ে বলেন তিনি।
দরিদ্র সীমার নীচে যে সমস্ত মানুষ রয়েছেন, য়াদের সবজি বিক্রি করেই দিন গুজরান করতে হয়, তাদের সঙ্গে একই হাটে বসে স্ত্রী মুলানি যে সবজি বিক্রি করে তাতে কোনও আপত্তি নেই এই বিধায়কের। লোকনাথবাবুর কথায়, তাঁর স্ত্রী একজন অত্যন্ত সাধারণ গ্রামের মহিলা। যিনি গবাদি পশু পালন করেন। গৃহস্থের কাজ করেন। তার পাশাপাশি সমান্তরালভাবে সবজি বিক্রিও চালিয়ে যাচ্ছেন। এক কথায় তাঁর স্ত্রী যে গৃহলক্ষ্মী তা নিজের মুখেই সলজ্জ হাসি দিয়ে জানিয়ে দিলেন।
শুধু তাই নয়, নিজের সমস্ত কাজের ফাঁকে মাঝে মধ্যে স্বামীর জন্য ভোটের আহ্বান করতেও বেরিয়ে পড়েন। কখনও স্বামীর সঙ্গে কখনও বা একাই। প্রয়োজনে ভোট প্রচারের জন্য স্বামীর হাতে জমানো টাকা তুলে দিতেও দ্বিধা করেন না।