তিন তালাক বিল: মুখে নেত্রী মেহবুবা মুফতি বললেন বিরোধিতার কথা, আর ভোটাভুটিতে গরহাজির পিডিপি সাংসদরা!
মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার মুসলমান সমাজের তিন তালাক রীতির অবসান ঘটাতে বিল পাশ করল সংসদের উচ্চকক্ষে, অর্থাৎ রাজ্যসভায়। এই নিয়ে চারিদিকে বিতর্কের ঝড় বয়ে গেলেও বিভিন্ন দলের ভোটাভুটিতে না থাকা বিজেপির কাজ যে সহজ করে দিয়েছে, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। এমনকি, জম্মু ও কাশ্মীরের পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) তরফ থেকেও একই কৌশল নেওয়া দেখেও অবাক হয়েছেন অনেকেই। রাজ্যসভায় পিডিপির দুই সদস্য এদিন ভোটাভুটির সময়ে গরহাজির ছিলেন যদিও দলের সুপ্রিমো তথা জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এর আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আর যাই হোক, তিন তালাক ইস্যুতে তাঁর দল অন্তত বিজেপির পক্ষে থাকবে না।

ভোটাভুটির সময়ে বিভিন্ন দলের অনুপস্থিতি বিজেপিরই লাভ করে দেয়। মোদীর প্রথম মেয়াদের সরকারে যে বিল রাজ্যসভায় ধাক্কা খেয়েছিল, এবারে তাই ৯৯-৮৪ ফলে পাশ হয়ে যায়।
মেহবুবা পরে টুইট করে বিলের সমালোচনা করেন
মুফতি যদিও পরে টুইট করে তাঁর ক্ষোভের কথা জানান। তিনি অভিযোগ করেন যে বিজেপি এবারে আইন করার নামে গৃহস্থের ঘরে ঢুকে পড়ছে। "যেখানে সুপ্রিম কোর্ট বিলটিকে অবৈধ ঘোষণা করে দিয়েছে ইতিমধ্যে, সেখানে এই বিল পাশ করানোর সার্থকতা কী তাই বুঝলাম না। মুসলমানদের হয়রান করার জন্যে অযাচিত নাক গলানো। যেখানে অর্থনীতির মতো গম্ভীর বিষয় নিয়ে চর্চার প্রয়োজন, সেখানে এই বিষয়ের উপরে এখন জোর দেওয়া হচ্ছে কেন?" মুফতি প্রশ্ন করেন। যদিও কেন তাঁর সাংসদরা বিজেপির বিরোধিতা না করে গরহাজির থাকলেন, তা নিয়ে নেত্রী কিছু খোলসা করেননি।
ওমর আব্দুল্লাহ একহাত নেন মেহবুবাকে
রাজ্য রাজনীতিতে মুফতির প্রতিপক্ষ ন্যাশনাল কনফারেন্সের ওমর আব্দুল্লাহ এই নিয়েই পিডিপি নেত্রীকে খোঁটা দেন। একটি টুইটে তিনি জানান পিডিপির সাংসদের ভোটাভুটি থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্যে আখেরে লাভ হয়েছে বিজেপিরই। "আর এরপরেও আপনি বুঝতে পারছেন না সরকারের এই বিল পাশের প্রয়োজনীয়তা?" আব্দুল্লাহ তির্যক মন্তব্য করেন।
এখানে বলে রাখা ভালো যে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরে বিজেপির সঙ্গে জোট (মাঝের কিছু সময় ছাড়া) করে সরকারে ছিল পিডিপি। প্রথমে মুফতি মহম্মদ সাঈদ এবং তাঁর মৃত্যুর পরে কন্যা মেহবুবা ওই সরকারের মুখ্য হন। কিন্তু গতবছর সরকার থেকে নিজেদের সমর্থন তুলে নেয় বিজেপি এবং রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়।
মুফতির দলকে দু'মুখো বলেও অভিযুক্ত করেন আব্দুল্লাহ।