If Not Manoj, then Who!, চারটে গুলি লাগার পরও কার্গিলে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছিলেন মনোজ
If Not Manoj, then Who!, চারটে গুলি লাগার পরও কার্গিলে জাতীয় পতাকা উড়িয়েছিলেন মনোজ
বন্দিবীর কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, 'পড়ি গেল কাড়াকাড়ি/ আগে কেবা প্রাণ করিবেক দান/ তার লাগি তাড়াতাড়ি।' উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের ছেলেটি হয়ত রবীন্দ্রনাথ পড়েনি, কিংবা পড়েছিল! নাহলে গুলি বৃষ্টির মধ্যে এগিয়ে গিয়ে খালুবার দখলমুক্ত করার অনুপ্রেরণা সে পেল কোথা থেকে৷ আজ কার্গিল বিজয় দিবস৷ আর যে সব ভারত সন্তানের রক্ত ধৌত হয়ে কার্গিলের জয় এসেছে তাঁর একজন হলেন মনোজ পান্ডে।
কার্গিল বিজয়ে রক্ত আছে বাঙালিরও, টানা দু'মাস বরফ চাপা ছিল বঙ্গ-সন্তানের দেহ
যদি মনোজ নয়, তাহলে কে?
If not Manoj then Who? হ্যাঁ ঠিক এই প্রবাদটাই ঘোরাফেরা করত ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে! মনোজ না পারলে আর কে পারবে? ঠিক এতটাই ভরসা ছিল গোর্খা রাইফেলস-এর সবার লেফটেন্যান্ট মনোজ পান্ডের উপর। কারণও ছিল হাজার একটা! ১৯৯৯ এ ততদিনে অপারেশন বিজয়ে সাক্ষাৎ মৃত্যুকে হারিয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছেন গোর্খা রাইফেলসের মনোজ৷
দেশের হয়ে লড়াইয়ে নিজেকে প্রমাণ করার আগে মৃত্যু এলে, আমি মৃত্যুকে মেরে ফেলব!
বাটালিক
সেক্টরে
তখন
গ্রীষ্মকাল,
অবশ্য
লাদাখের
এই
অঞ্চলটিতে
কী
শীত
আর
কী
গ্রীষ্ম!
তাপমাত্রা
সেই
জমাট
বেঁধেই
আছে।
বরফের
উপর
বসে
রয়েছে
এক
বছর
২৪
এর
যুবক৷
পরনে
জলপাই
রঙা
পোশাক,
কাঁধে
বন্দুক,
কিছুটা
দূর
থেকে
গুলি
গ্রেনেডের
শব্দ
এসে
ধাক্কা
দিচ্ছে
কানে।
ছেলেটির
হাতে
একটা
ডায়েরি।
খসখস
করে
কিছু
একটা
লিখছে
সে,
নিজের
মায়ের
উদ্দেশ্যে
একটা
ছোট
কবিতা।
আর
তার
নীচেই
দু'টো
লাইন,
'If
death
strikes
before
I
prove
my
blood,
I
swear
I
will
kill
death.'
'দেশের
হয়ে
লড়াইয়ে
নিজেকে
প্রমাণ
করার
আগে
মৃত্যু
এলে,
আমি
মৃত্যুকে
মেরে
ফেলব।'
এমন লাইন যার কলম থেকে বেরোতে পারে সে ছেলে প্রেমিক না হয়ে যায় কোথায়? এ ছেলে প্রেমিক, আর এর প্রেমিকা ভারত, ছেলেটির নাম মনোজ পান্ডে।
আমি পরমবীর চক্র জিততে চাই স্যার!
১৯৯৫,
বারানসি
SSB-র
ইন্টারভিউতে
বসে
রয়েছে
এক
১৯
বছরের
বাচ্চা
ছেলে।
সামনে
ভারতীয়
সেনাবাহিনীর
বড়
অফিসাররা।
অফিসারদের
পক্ষ
থেকে
প্রশ্ন
ছুটে
এল,
সেনাবাহিনী
কেন
জয়েন
করতে
চাও?পরমবীর
চক্র
পাওয়ার
জন্য
স্যার।পরমবীর
চক্র
কে
কি
খেলনা
মনে
করো?
No
sir,
I
will
surely
win
it
by
my
courage...
প্রশ্নকর্তা অফিসাররা বুঝেছিলেন এ জ্বলন্ত আগুন। এনডিএ পাশ করে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন মনোজ পান্ডে।
কার্গিল যুদ্ধ, জুবার টপ পোস্ট
১৯৯৯, কার্গিলে যুদ্ধ শুরু হয়েছে সীমান্তে। বাটালিক সেক্টরে ফাঁকা জুবার-টপ পোস্ট চুপিসারে দখল করে নিয়েছে পাকসেনা-জঙ্গির মিলিত শক্তি। গুরুত্বপূর্ণ এই পয়েন্টা পাকসেনার কাছ থেকে উদ্ধারের দায়িত্ব পড়ে ১/১১ গোর্খা রাইফেলসের উপর। জুলাই মাসের ১ তারিখ, মনোজ পান্ডের নেতৃত্বে জুবার টপের দিকে এগোতে থাকে গোর্খা রাইফেলস। কিন্তু সমস্যা হল পাক সেনা উঁচুতে পাথরের বাঙ্কারের আড়ালে, আর ভারতীয় সেনাবাহিনী নীচ থেকে উপরে ওঠার চেষ্টা করছে। ফলে পাক-সেনার গুলি ভারতীয় সেনাদের খুঁজে পেলেও উল্টো প্রায় হচ্ছে না! কিন্তু তাতে কী? এরকম অসম্ভব লক্ষ্য আর কঠিন শত্রুর উপর নেমে আসা ভয়ঙ্কর মৃত্যুর নাম-ই তো মনোজ পান্ডের ১/১১ গোর্খা রাইফেলস।
কার্গিল যুদ্ধ, পয়েন্ট খালুবার,
২/৩
জুলাই,
১৯৯৯,
রাত।
উপর
থেকে
গুলি
বৃষ্টি
চলছে
পাক
সেনার।
শ্বাপদের
মতো
খালুবারের
দিকে
একটু
করে
এগোচ্ছে
মনোজ
অ্যান্ড
টিম।
চাঁদের
আলো
শত্রুর
সামনে
উন্মুক্ত
করে
দিতে
পারে
তাদের।
তাই
চাঁদ
মেঘে
ঢাকা
পড়লে
এগোনো,
আর
চাঁদ
বাইরে
বেরিয়ে
এলেই
পাথরের
আড়ালে
চলে
যাওয়া।
অনেকটা
উঠে
এসেছিলেন
মনোজরা।
তবে
শেষ
রক্ষা
হল
না।
পাক
সেনার
চোখে
ধরা
পড়ল
১/১১
গোর্খা
রাইফেলসের
জওয়ানদের
গতিবিধি।
শুরু
হল
গুলি,
গ্রেনেড
বর্ষণ।
পাল্টা
শুরু
করলেন
মনোজরাও৷
উপরে
থাকা
তিনটে
শত্রুবাঙ্কারের
প্রথমটা
ধ্বংস
করা
গেল।
টিমের
একেবারে
সামনে
থাকা
মনোজের
ঘাড়ে
ও
পায়ে
গুলি
স্পর্শ
করেছে
ততক্ষণে।
মনোজকে থামাবে সাধ্য কার?
কিন্তু
যে
ছেলেটা
পরমবীর
চক্র
পেতে
আর্মিতে
এসেছে
১৯
বছরে,
তাকে
কি
আর
এত
অল্প
আঘাত
থামাতে
পারে?
বরং
মনোজ
তখন
আহত
বাঘ,
পাক
সেনার
পরের
বাঙ্কারটাও
গুড়িয়ে
দিলেন।
এবার
শুরু
হল
মনোজদের
সঙ্গে
পাক
সেনার
হাতাহাতি
লড়াই৷
মাথা
থেকে
হেলমেট
ভিজিয়ে
রক্ত
ঝরছে।
মাথায়
মেশিনগানের
নল
দিয়ে
বারবার
আঘাত
করেছে
পাকসেনা।
কিন্তু
ওই
যে
ছেলেটি
লিখে
এসেছিল,
'If
death
strikes
before
I
prove
my
blood,
I
swear
I
will
kill
death.'
রক্তের
প্রমাণ
দেওয়ার
আগে
মৃত্যু
এলে
সেই
মৃত্যুকেও
মেরে
ফেলবে
সে।
অতএব
যম-ও
কিছুটা
দূরে
দাঁড়িয়ে
মনোজরূপী
শিবের
বিধ্বংসী
তাণ্ডব
নৃত্য
দেখছে
চুপচাপ।
তার
সাহস
নেই
মনোজের
সামনে
আসার...
খালুবারে স্বপ্নকে আলিঙ্গন করেছিলেন মনোজ!
খালুবারে স্বপ্নকে আলিঙ্গন করেছিলেন মনোজ পান্ডে। কয়েক মাস পর রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুত্রের মরণোত্তর পরমবীর চক্র নিয়েছিলেন মনোজ পান্ডের বাবা। যেখানে লেখা হয়েছিল, 'গুলি লাগার পরও একা হাতে চারজন শত্রু সৈন্যকে মেরে জুবার টপে ভারতের জাতীয় পতাকা উড়িয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট মনোজ পান্ডে। না শত্রুর গুলি, না মেশিনগানের খোঁচা, কিছুই থাকে থামাতে পারেনি খালুবার শত্রুমুক্ত করা থেকে...'