বিএসএফের অতি সক্রিয়তা নিয়ে সরব মমতা, অমিত শাহের কাছে উগরে দিলেন ক্ষোভ
অমিত শাহের সামনেই বিএসএফের অতি সক্রিয়তা নিয়ে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার নবান্নে পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে বিএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে কসুর করলেন না তিনি।
অমিত শাহের সামনেই বিএসএফের অতি সক্রিয়তা নিয়ে সরব হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার নবান্নে পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে বিএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে কসুর করলেন না তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বৈঠকে বলেন, কোথাও কোথাও বিএসএফ অতি সক্রিয়। আবার কোথাও কোথাও একেবারেই নিষ্ক্রিয়। তার ফলে সমস্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিএসএফ রাজ্য প্রশাসনের উপরও হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করেন মমতা।
এদিন নবান্নের সভাঘরে পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে পূ্র্ব ভারতের চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিরা ছিলেন। নবান্নে বৈঠক হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে। উপস্থিত ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানোর প্রতিনিধিরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সচিবরা।
নবান্নের সভাঘরে এদিন বৈঠক হয় নির্ধারিত সময়ের থেকে বেশি। দু-ঘণ্টা নির্ধারিত ছিল বৈঠকের জন্য। কিন্তু বৈঠক হয় আড়াই ঘণ্টারও বেশি। নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে বিএসএফ নিয়ে ঙোক্ষ উগরে দেন।
মমতা বলেন, বিএসএফের অতিসক্রিয়তায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বিএসএফ অত্যাচার চালাচ্ছে বহু এলাকায় ঢুকে। আবার কোথাও বিএসএফ নিস্ক্রিয় থাকায় চোরাচালান বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়ানোর পরও আইনশৃঙ্খলার অবনিত হচ্ছে।
তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন, অনেক ক্ষেত্রেই বিএসএফ রাজ্যের প্রশাসনের উপর হস্তক্ষেপ করছে। যা বিএসএফের এক্তিয়ারভুক্ত নয়, তা করে রাজ্যের সমস্যা বাড়িয়ে চলেছে বিএসএফ। বিএসএফের এক্তিয়ার ৫০ কিলোমিটার বাড়ানো থেকেই কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের সূত্রপাত। এদিন সেই মর্মে অমিত শাহের কাছে নালিশ জানালেন মমতা।
এদিন সকাল ১১টায় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক শুরু হয়। সুদীর্ঘ বৈঠক শেষ হতে ঘড়ির কাঁটা প্রায় ২টো বেজে যায়। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে নবান্নের ১৪ তলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরে যান অমিত শাহ। সেখানে তাঁদের মধ্যেও একা্তে বৈঠকও হয়।
এদিন নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক সীমান্ত সমস্যার দিকেই প্রধানত ফোকাস ছিল। বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের কার্যকলাপ নিয়ে বৈঠকে উঠে আসে চোরাচালন ও পাচার সমস্যার কথা। বিশেষত বিগত কয়েক মাস ধরে সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ পালা চলেছে, তারপর এই বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিনের বৈঠকে রাজ্য ও কেন্দ্রের উন্নতি ও সমন্বয় বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়। চারটি রাজ্যে পরিকাঠামোগত ও উন্নয়ন সংক্রান্ত অভিযোগ তুলে ধরা হয়। বিভিন্ন জলাধারের জল ছাড়া নিয়ে সমস্যা মেটাতে বৈঠকে আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর। অনুপ্রবেশ ও ইস্টার্ন ফ্রেড করিডোর নিয়েও কথা হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও প্রতিনিধিদের মধ্যে।