মহারাষ্ট্র সরকার গঠনের সুপ্রিম শুনানি : যে সমস্ত নথির উপর সোমবার থাকবে নজর
মহারাষ্ট্র সরকার গঠনের সুপ্রিম শুনানি : যে সমস্ত নথির উপর সোমবার থাকবে নজর
সরকার পক্ষকে আগামিকাল সকাল সাড়ে দশটার মধ্যে দুটি চিঠি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। শীর্ষ আদালতের ৩ সদস্যের বেঞ্চ কেন্দ্র, মহারাষ্ট্র সরকার, দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ও অজিত পাওয়ারের কাছে নোটিশ ইস্যু করেছে। পাশাপাশি মহারাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নেওয়ার বিষয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে রাষ্ট্রপতিকে লেখা রাজ্যপালের চিঠি চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
যেই দুই চিঠির উপর বিশেষ নজর
দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির পাঠানো সরকার গড়ার আহ্বানের চিঠিটিও চেয়েছে সুপ্রিমকোর্ট। পাশাপাশি ফড়নবিশের দেওয়া সরকার গড়তে চেয়ে সংখ্যার প্রমাণ সম্বিলিত চিঠিটিও চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
বিরোধীদের প্রশ্নের ভিত্তিতে চিঠি চাইল আদালত
প্রসঙ্গত, এই দুটি বিষয়েই প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধীরা। ২৩ নভেম্বর সকাল ৮টায় ফড়নবিশ ও অজিত পাওয়ারের শপথ গ্রহণের আগে সেদিনই ভোর ৫টা ৪৭ মিনিটে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নেওয়া হয় মহারাষ্ট্রের উপর থেকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় কুমার ভাল্লা একটি তিন লাইনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেন, মাননীয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ মহারাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি ও প্রত্যাহার, এই দুই ক্ষেত্রেই রাজ্যপালের সুপারিশের উপর ভিত্তি করে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যার অর্থাৎ ২২ নভেম্বর রাতে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির অফিস এই বিষয়ে কাজ করে। যেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা।
রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারির সরকার গড়ার আহ্বানের চিঠি
এদিকে রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহারের পরেই আইনত সরকার গঠনের আহ্বান জানাতে পারেন রাজ্যপাল। সেই মতো দেবেন্দ্রকে তিনি নিশ্চই ২৩ নভেম্বর সকাল ৫টা ৪৭ ও ৮টার মাঝে পাঠিয়েছিলেন। সেই প্রমাণই চেয়েছে আদালত। বিরোধীদের দাবি, এই রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহারের বিষয়ে বিজেপি ও এনসিপির একাংশ ছাড়া ওয়াকিবহাল ছিল না কোনও রাজনৈতিক দলই।
ফড়নবিশের চিঠি
২৩ নভেম্বর দ্বিতীয়বার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। তার ডেপুটি হিসাবে শপথ নেন অজিত পাওয়ার। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এনসিপির পরিষদীয় দল নেতা হওয়ার কারণে আইনত সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে অজিতের। এদিকে শপথ গ্রহণ হলেও সরকার সংখ্যাগরিষ্টতা প্রমাণ করতে হবে বিজেপি-অজিতের জোটকে। এর জন্য অবশ্য এক সপ্তাহ পাচ্ছে বিজেপি-অজিত। সেই ক্ষেত্রে দলবদল বিরোধী আইন থেকে বাঁচতে এনসিপির মোট ৫৪ জন বিধায়কের মধ্য়ে দুই তৃতীয়াংশকে অজিতের সঙ্গে থাকতে হবে। অর্থাৎ অন্তত পক্ষে ৩৬জন এনসিপি বিধায়ক যদি অজিতকে সমর্থন জানান তবেই এই সরকার ও সমর্থন বৈধতা পাবে।
অজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এনসিপি-র মুম্বই শাখার প্রধান নবাব মালিক। তিনি অভিযোগ করেন, বিধায়কদের উপস্থিতি দেখার জন্য নেওয়া সইকে সমর্থনের প্রমাণ হিসাবে পেশ করেছেন। নবাবের দাবি সেই সংখ্যা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হবে বিজেপি-অজিত জোট। বিরোধীদের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই সেই চিঠির প্রতিলিপি চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
আদালতে কী বললেন বিরোধী পক্ষের আইনজীবীরা
রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক বলেও দাবি করেন আজ বিরোধী দলগুলির আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। অজিত পওয়ারকে এনসিপি-র পরিষদীয় দলনেতার পদ থেকে অপসারণের বিষয়টি তুলে ধরে সিংভির যুক্তি, এনসিপির ৪১ জন নেতাই যদি অজিত পওয়ারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা বলছেন, এনসিপি অর্থাৎ শরদ পওয়ারের সঙ্গে আছেন, তাহলে কী ভাবে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি শপথ নিলেন তিনি।