কীভাবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা ও ব্যাজের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লর্ড মাউন্টব্যাটেনের পরামর্শ
কীভাবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা ও ব্যাজের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লর্ড মাউন্টব্যাটেনের পরামর্শ
শুক্রবার ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য একটি উল্লেখযোগ্য দিন। শুক্রবার ভারতীয় নৌবাহিনীর নতুন পতাকা উন্মোচিত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন পতাকায় মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছত্রপতি শিবাজিকে সম্মান জানানো হয়েছে। নৌবাহিনী নতুন পতাকার একটি কোনে ভারতীয় জাতীয় পতাকা রয়েছে। এছাড়াও পতাকাটিতে ভারতীয় নৌবাহিনীর স্লোগান ও প্রতীক জায়গা করে নিয়েছে।
স্বাধীনতার পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নৌবাহিনীর বিশেষ কোনও পরিবর্তন আসেনি। এতদিন নৌবাহিনীর পতাকার রঙ ছিল সাদা। সেখানে লাল রঙের একটি সেন্ট জর্জ ক্রশ ছিল। সেই ক্রশের মধ্যেই ছিল ভারতীয় জাতীয় প্রতীক অশোক স্তম্ভ। পতাকার এক কোনে জাতীয় পতাকা ছিল। স্বাধীনতার আগে রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভির পতাকায় থাকত ইউনিয়ন জ্যাক। ১৯৫০ সালে ভারতে নতুন পতাকা ও বাহিনীর ব়্যাঙ্ক অনুযায়ী ব্যাজ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে লর্ড লুই ম্যাউন্টব্যাটেনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
১৯৫০ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন ব্রিটিশ আমলের সামরিক বাহিনীর পতাকা ও ব়্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত থেকে ভারত সরকার সরে আসে। আগে ভারতের সামরিক বাহিনীর পতাকা ও ব়্যাঙ্ক অনুযায়ী ব্যাজ ছিল ব্রিটিশ সরকারের ধাঁচে। ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর পতাকা, রেজিমেন্টাল পতাকা, এছাড়াও তিনটি পরিষেবার ব়্যাঙ্ক অনুযায়ী ব্যাজের সিদ্ধান্ত ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি নেওয়া হয়েছিল। ভারতীয় আধিকারিকদের দেওয়া কিংস কমিশন থেকে একই দিনে ভারতীয় কমিশনে পরিণত হয়েছিল।
জাতীয় আর্কাইভ অনুসারে, ১৯৪৯ সালে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলদেব সিংকে লেখেন। সেই চিঠির সঙ্গে মাউন্টব্যাটেনের একটি চিঠি যোগ করেন। সেই চিঠিতে মাউন্ট ব্যাটেন ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর নাম, পতাকা, পদমর্যাদার বিষয়ে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছিলেন। জানা যায়, লন্ডনে যখন লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনের সঙ্গে নেহরুর সাক্ষাৎ করেছিলেন। তিনি নেহরুকে সেই সময় ওই চিঠিটি দিয়েছিলেন। সেই চিঠি প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল সি রাজগোপালচারীর অফিসে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে ভারত প্রজাতন্ত্র হওয়ার পর ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর নাম ও চিহ্ন ইস্যুতে বিস্তারিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। চিঠিতে স্পষ্ট করা হয়েছিল, এটি গভর্নর জেনারেলের সামনে রাখতে হবে।
চিঠিতে বলা হয়েছিল, ভারত প্রজাতন্ত্র হওয়ার পর দেশের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী থেকে রয়্যাল শব্দটি সরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু দৃঢ়ভাবে জানিয়েছিলেন, প্রজাতন্ত্র দেশে বা রিপাবলিক কোনও দেশে কোনওভাবেই রয়্যাল শব্দটি ব্যবহার করা উচিত নয়। এই শব্দটির ফলে ভারতীয় বাহিনীর ওপর মানসিকভাবে প্রভাব পড়তে পারে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, ভারতের তিনটি সশস্ত্র বাহিনীর চিহ্নগুলো প্রতিস্থাপিত করা উচিত। সেখানে ভারতের অশোক স্তম্ভ প্রতিস্থাপন করা উচিত।
এছাড়াও
তিনি
জানিয়েছিলেন,
ভারতীয়
নৌবাহিনীর
পতাকা
সাদা
হওয়া
প্রয়োজন।
চিঠিতে
তিনি
পরামর্শ
দিয়েছিলেন,
ভারতের
নৌবাহিনীর
পতাকায়
দেশের
জাতীয়
পাতাকার
চিহ্ন
থাকা
উচিত
ইউনিয়ন
জ্যাকের
পরিবর্তে।
এছাড়াও
লাল
ক্রশ
থাকা
প্রয়োজন।
লর্ড
মাউন্ট
ব্যাটেন
ইউনিফর্মের
বিষয়েও
পরামর্শ
দিয়েছিলেন।
তিনি
বলেন,
ইউনিফর্ম
যত
কম
পরিবর্তন
করা
হবে,
তত
ভালো।
পাশাপাশি
তিনি
বলেছিলেন,
মেজর
বা
তার
পরবর্তী
ব়্যাঙ্কের
ব্যাজ
অশোক
স্তম্ভের
তিনটি
সিংহ
দ্বার
প্রতিস্থাপন
করা
প্রয়োজন।
জেনারেল
পদমর্যাদার
ব্যাজে
তিনি
তলোয়ার
ও
লাঠি
রাখার
পরামর্শ
দিয়েছিলেন।
জানা যায়, একটি চিঠিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু মাউন্টব্যাটেনকে লিখেছিলেন, সি রাজগোপালচারী তাঁর সঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্মত হয়েছেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।