পঙ্গপালের হাত থেকে বাঁচতে দিল্লিবাসীকে কী উপদেশ সরকারের
গুরুগ্রাম, হরিয়ানার পর এবার পঙ্গপালের ঝাঁক দিল্লির দিকে আসতে শুরু করেছে। ফসল–ধ্বংসকারী পঙ্গপালদের দেখা গিয়েছে দিল্লির আশেপাশে। রাজ্যের প্রশাসন সমস্ত জেলা শাসককে নির্দেশ দিয়েছেন এই পঙ্গপালকে রুখতে সব ধরনের সম্ভাব্য ব্যবস্থা করার।
দরজা–জানলা বন্ধ রাখার নির্দেশ
বাসিন্দাদের বলা হয়েছে দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখতে এবং বাইরে যদি কোনও গাছ বা বাগান থাকে তা যেন ঢেকে রাখা হয় প্লাস্টিক দিয়ে। জেলা শাসকদেরও উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। কৃষি বিভাগের যুগ্ম ডিরেক্টর তথা পরামর্শদাতা এপি সাইনি বলেছেন, ‘জেলা শাসকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে পঙ্গপালকে বিভ্রান্ত করতে এবং বাসিন্দাদের সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য সম্ভাব্য সমস্ত ব্যবস্থা করার ও পর্যাপ্ত কর্মী মোতায়েন করা হোক।'
ড্রাম, বাসন, মিউজিক সিস্টেমে গান বাজানোর নির্দেশ
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পঙ্গপাল হয়ত বিভ্রান্ত হতে পারে খুব জোরে কোনও শব্দ হলে, যা ড্রাম, বাসন বা উচ্চস্বরে মিউজিক সিস্টেমে গান বাজানোর ফলে হতে পারে অথবা আতসবাজি পোড়ালে ও নিমের পাতা জ্বালিয়ে দিলেও পঙ্গপাল সেখান থেকে দূরে থাকবে। বেশ কিছু মাস যাবৎ করোনা ভাইরাসের পাশাপাশি নতুন এই বিপদ এসে উপস্থিত হয়েছে। পঙ্গপালের ঝাঁক ইতিমধ্যেই রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশেফসল ধ্বংস করেছে।
শনিবার সকালে প্রবেশ
শনিবার সকালে পঙ্গপালের বিরাট ঝাঁক গুরুগ্রামে প্রবেশ করে, বাসিন্দারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু ভিডিও দেয়। যেখানে দেখা যাচ্ছে এই পতঙ্গগুলি উড়ছে এবং আকাশ ঢেকে গিয়েছে। ক্ষতিকারক এই পতঙ্গগুলি দক্ষিণ দিল্লির ছত্তরপুরে খামার ও বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।
বন বিভাগকে উচ্চ শব্দ সৃষ্টি করার নির্দেশ
দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাই জাতীয় রাজধানীর দক্ষিণ ও পশ্চিম জেলা প্রশাসকদের উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছেন। যাঁরা এই বৈঠকে এসেছিলেন তাঁদের থেকে সরকারিভাবে জানা গিয়েছে, মন্ত্রী সকলকে জানিয়েছেন যে দক্ষিণ দিল্লির আসোলা ও ভাট্টিতে পঙ্গপালের ছোট ঝাঁক লক্ষ্য করা গিয়েছে। গোপাল রাই বন বিভাগকে ডিজে, ড্রাম ও ঢোল পেটানোর জন্য বলেছে যাতে পঙ্গপাল পালিয়ে যায়। তিনি কৃষি বিভাগকেও নির্দেশ দিয়েছেন যে গুরুগ্রাম সংলগ্ন কৃষিক্ষেত্রগুলি এই সময় পর্যবেক্ষণ করতে।
শনিবার সকালে গুরুগ্রামে প্রবেশ করে পঙ্গপাল
সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছে, পরিযায়ী পতঙ্গরা দিল্লি ছেড়ে হরিয়ানার ফরিদাবাদ ও পালওয়ালের দিকে চলে যাচ্ছে। দুই কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত পঙ্গপাল পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে যায়। শনিবার সকাল সাড়ে এগারোটার সময় তারা গুরুগ্রামে প্রবেশ করে, কৃষি বিভাগের পঙ্গপাল সচেতনতা সংগঠনের কেএল গুর্জার এই তথ্য জানিয়েছেন। মে মাসে ভারতে পঙ্গপালের হামলা বেড়ে গিয়েছিল। ফসল-অনিষ্টকারী পঙ্গপাল প্রথমে হামলা চালিয়েছিল রাজস্থানে, তারপর তা ছড়িয়ে পড়ে পাঞ্জাব, গুজরাত, মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশে।