বাবা নয়, আমিই চালাবো সরকার, কেন বললেন কুমারস্বামী
সামান্য কয়েকজন এমএলএ-র জোরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। মন্ত্রীসভাতেও তাঁরা সংখ্যালঘিষ্ঠ। তাই কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সামনের দিনগুলো যে বেশ কঠিনই হতে চলেছে তা বিলক্ষণ জানেন এইচ ডি কুমারস্বামী। কিন্তু যতই বিজেপি বা আরও অনেকেই কর্ণাটকের জোট সরকারের ভবিষ্যত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করুক, তাঁর বিশ্বাস সফলভাবে জোট চালানোর চাবিকাঠি তার কাছে আছে। কাজেই প্রথম থেকেই তিনি কংগ্রেসের হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছেন বা তাঁর বাবা বর্ষীয়ান দেবগৌড়াই ব্যাকসিটে বসে রাজ্য চালাবেন বলে অভিযোগ উঠুক, তিনি সাফ জানাচ্ছেন, তাঁর সরকার চলবে তাঁর মতেই।

কর্ণাটকের কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারকে ঘিরে সারা দেশে যে উন্মাদনা দেখা দিয়েছে তাতে যেন তিনি আরও আত্মবিশ্বাসী। তিনি জানান, তাঁর শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান ছিল ভারতীয় রাজনীতির এক ঐতিহাসিক দিন। মোদী-অমিত শাহের অশ্বমেধের ঘোড়া তারা আটকে দিয়েছেন। আর তাই দেশের তাবড় ২০ জন নেতা এসেছিলেন তাঁর শপথের মঞ্চে। সেখান থেকে দেশের রাজনীতিতে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তবে তাঁরা যে কর্ণাটকের সরকারকে মজবুত করতে আসেননি তা জানেন কুমারস্বামী। তিনি জানেন, সামনের পথটা বন্ধুর। কিন্তু তিনি দাবি করছেন, ইতিহাস থেকে তিনি শিক্ষা নিয়েছেন। তিনি জানেন ভাবে জোট রাজনীতি সফল করা যায়। তিনি অতীত আকড়ে বসে থাকতে চান না। ভোটের আগে কে কি বলেছে সব ভুলে সামনে এগোতে চান। পাশাপাশি তিনি জানাচ্ছেন এর আগের সিদ্দারামাইয়া সরকারের কোনও প্রকল্প তিনি বাতিল করবেন না। তিনি জানেন তা নিয়ে দুদলের দ্বন্দ্ব বাধতে পারে। বরং তিনি সেই প্রকল্পের তালিকায় আরও কিছু প্রকল্প যোগ করতে চান।
তবে ইতিমধ্যেই কর্ণাটকের রাজনীতিতে কানাঘুষো চলছে, কুমারস্বামী নামেই মুখ্য়মন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু বকলমে রাজ্য চালাবেন সেই প্রবীন জেডিএস নেতা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়াই। সেই জল্পনা আরও বেড়েছে, কুমারস্বামী শপথ নেওয়ার আগেই রাজ্যের উচ্চপদস্থ কয়েকজন প্রশাসনিক অফিসার দেবগৌড়ার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ায়। এসব জল্পনা অবশ্য এককথায় উড়িয়ে দিচ্ছেন কুমারস্বামী। তাঁর দাবি, 'আমি মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের রাশ আমারই হাতে।' তবে তাঁর বাবার মতো প্রবীন রাজনীতিকের পরামর্শ তিনি অবশ্যই নেবেন বলেও জানান কর্ণাটকের নতুন মুখ্যমন্ত্রী।
ভোটের আগে জেডিএস কথা দিয়েছিল ক্ষমতায় এলে তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে কৃষকদের ঋণ মকুব করে দেবে। ইতিমধ্যেই যে প্রতিশ্রুতির খেলাপপ করেছেন বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। কুমারস্বামীর দাবি এখনও তাঁর অগ্রাধিকার কৃষকদের ঋণ মকুবই। কিন্তু এটা জেডিএস সরকার নয়, জোট সরকার। জোটের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করাটা জোট-ধর্ম। সেভাবেই এগোবেন তাঁরা। তবে তাঁর সরকারের প্রথম কাজই হবে কৃষকদের ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি দেওয়া, এবলে তিনি আবারো আস্বস্ত করেছেন।