নবী বিতর্কের মাঝে আপন খেয়ালে মেতেছেন কলকাতার পয়গম্বর, দুঃস্থদের বিলোলেন খাবার
পয়গম্বর বিতর্ক নিয়ে উত্তাল দেশ। উত্তাল হচ্ছে বাংলাও। এই বিতর্ক নিয়ে নানা স্থানে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবাদ চলছে। অনেকক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সেই প্রতিবাদ সাধারণ মানুষকেও জীবনযাপনকেও সমস্যার মুখে ফেলছে। বিশেষ করে চরম খারাপ অবস্থা হাওড়ার গ্রামীণ অঞ্চলে। রাস্তা আটকে দু'দিন ধরে চলছে পয়গম্বর বিতর্ক নিয়ে প্রতিবাদ। কিন্তু এই ধর্মীয় আবেগকে পিছনে ঠেলে কলকাতার এক পয়গম্বর মেতেছেন মানবিকতার খেলায়।
কলকাতার পয়গম্বর কে চেনেন? তিনি শাহবাজ খান। তিনি ৩৬৫ দিন দুঃস্থ শিশুদের খাওয়ানো পড়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁর মধ্যে কোনও জাতি ধর্ম বিভেদ নেই। সবাই আসেন সাজিদ দাদার কাছে। দুপুর বেলা হোক কি রাতের বেলা। দাদা ওঁদের জন্য খাবার নিতে তৈরি থাকে। পার্কসার্কাসের মোড়ে তাঁর নিবাস। সেখান থেকেই তিনি দীর্ঘ দিন ধরে অনেকটা পয়গম্বরের বেশেই যেন হাজির হন ওঁদের কাছে। এদের কাছে উনি সাক্ষাৎ ভগবানের দূত পয়গম্বর।
দেশ থেকে বাংলা যখন এই পয়গম্বর বিতর্কে উত্তাল তখন কলকাতার পয়গম্বর আছেন আপন খেয়ালে। তিনি যে জিবে প্রেম দেখেন। তিনি মনে মনে বিশ্বাস করেন কালি কৃষ্ণ আল্লাহ সবাই এক। আর এভাবেই ওই দুস্থ শিশুগুলির কাছে তিনি হয়েছেন পয়গম্বর।
শাহবাজ বলেন , "ওঁদের আজ নয় বহু দিন ধরে এই খাওয়া পড়া করাই। ওঁদের কে খেতে দেবে। আমিই ওঁদের সঙ্গ দিই। তবে আমি পয়গম্বর হবার যোগ্য হয়। তুলনা করা ভুল হয়ে যাচ্ছে। এবার যদি কেউ মনে করে তাতে তো আমার হাত নেই, কিন্তু আমি নিজেকে সর্বশক্তিমানের স্থানে কী করে বসাতে পারি। আমার অত ক্ষমতা নেই। আর আমি এইটুকুতেই খুশি এবং সুখী। আর যদি বলেন যে এখনকার চলতি বিতর্ক তাহলে আমি একটা কথাই বলব যে কারও বিশ্বাসে আঘাত দেওয়া উচিৎ নয়। কথা যখন কেউ বলবে তখন ভেবে বলা উচিৎ , কারও বিশ্বাসে আঘাত দিয়ে কথা বলা উচিৎ নয়। আবার এটাও বলব প্রতিবাদ হতেই পারে কিন্তু সেক্ষেত্রে মানুষের সুবিধাটাও দেখতে হবে। মানুষ যদি সমস্যায় পড়ে তাহলে সেই প্রতিবাদের যে আঁচ সেটা কোথাও কমে যায়। সেটা সবার ভেবে কাজ করা উচিৎ"
একদিকে পার্কসার্কাসের মোড়ে তখন পয়গম্বরকে নিয়ে নিয়ে চলছে প্রতিবাদ, আর কলকাতার পয়গম্বর তখন দুঃস্থদের হাতে খাবার বেলাচ্ছেন। ওঁদের মুখগুলো হাসিতে ভরা। এমন এক কর্মযজ্ঞে এসে যোগ দেন বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বলেন যে , "কে নুপুর আমি চিনতাম না। নুপুর পায়ে পড়ে সে এবারে যদি কথা বলতে শুরু করে দেয় তাহলে সমস্যা আছে। আর সেই জায়গাটা বিজেপি তৈরি করে দিয়েছে। এখন আমাদের দেশ এর জন্য সমস্যায় পড়ে গিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ হচ্ছে। তবে আমরা ভাবিনি বাংলায় এমন ভাবে প্রতিবাদ হবে। প্রতিবাদ হতেই পারে, কিন্তু মানুষের সমস্যা তৈরি করে প্রতিবাদ করবেন না, এটা আমার অনুরোধ"।
'