৬৫০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যকে গুঁড়িয়ে সবর্ণ বিবাহ নিষিদ্ধ করার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত খাপ পঞ্চায়েতের
সবাইকে চমকে দিয়ে ৬৫০ বছরের পুরনো একগুঁয়ে নীতিকে বিদায় জানাল হরিয়ানার খাপ পঞ্চায়েত। রবিবার হরিয়ানার মহা খাপ এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়। নতুন নিয়মের অধীনে, সবর্ণ বিবাহের পাশাপাশি আশপাশের ৪২টি গ্রামের ব্যাসার্ধের মধ্যে যে কোনও দুটি পরিবার বিবাহ সম্পর্কে আবদ্ধ হতে পারে। এমনকী বিবাহের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পছন্দকেও স্বাগত জানানো হবে এবার থেকে।
খাপের কথায়, সময় বদলেছে। তাই নিয়মেরও বদল হওয়া উচিত। কিন্তু একইসঙ্গে খাপের তরফে এও পরিস্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, তারা এখনও সমগোত্রের বিবাহের কঠোরভাবে বিরোধীতা করেন। হিন্দু বিবাহ আইনের সংশোধন এবং সগোত্র বিবাহের উপর নিষেধাজ্ঞার দাবী জানিয়েছেন।
সমগোত্রে বিবাহ কখনওই গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দিল হরিয়ানার খাপ পঞ্চায়েত
তবে, ৬৫০ বছরের পুরনো সবর্ণ বিবাহ প্রথা বন্ধ করলেও সগোত্রে বিবাহ যে খাপের সিদ্ধান্তে এখনও গ্রহণযোগ্য নয়, তা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন খাপ নেতারা। তাঁদের কথায়, বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে গ্রামে প্রচুর ছেলে রয়েছে, যাদের বিয়ের বয়স হয়েছে। অথচ সবর্ণে সে হারে মেয়ে নেই। তাছাড়া আজকাল ছেলেরা কলেজে যাচ্ছে। সেখানে যদি কাউকে তাদের পছন্দ হয়, দু'জনে রাজী থাকলে তারা বিয়ে করতে পারে। কিন্তু সম গোত্রে বিবাহ কখনওই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ধরণের বিবাহে সম্মান বাঁচাতে হত্যার অনেক ঘটনা গ্রামে ঘটেছে বলেও রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে।
এই ধরণের মর্যাদা বজায় রাখতে হত্যার ঘটনার উদাহরণ ভুরি ভুরি থাকলেও এর কোনও সরকারি পরিসংখ্যান নেই। যদিও অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক ওয়মেনস অসোসিয়োশন জানিয়েছেন প্রতিবছর দেশে গড়ে প্রায় ১০০০টি এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়।
মাঝে মধ্যেই পুরনো একগুঁয়ে রীতি, ঐতিহ্যকে আঁকড়ে নৃশংস, অমানবিক, আলটপকা নির্দেশ দিয়ে দেশের খাপ পঞ্চায়েতগুলি খবরের শীর্যে উঠে আসে। কখনও খাপের নিদান শালীনতার সীমা ছাড়িয়ে যায়, কিন্তু হরিয়ানার মহা খাপের এই সিদ্ধান্ত যে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ তা বলাই বাহুল্য।