নিপার জের! পর্যটকদের আসতে বারণ করা হলো কেরলের এই চার জেলায়
কেরলের স্বাস্থ্য দপ্তর একটি নোটিশ জারি করে পর্যটকদের বলেছে যে ৪ টি জেলায় নিপা ভাইরাস ছড়াচ্ছে কেবলমাত্র সতর্কতার জন্য সেগুলিতে না যাওয়াই ভাল।
বৃহস্পতিবার নিপা ভাইরাস হানা দেওয়ায় পর্যটকদের কেরলে আসার ব্যাপারে সাবধান করলো সে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রক। যদিও নিপা-র পরিস্থিতি হাতের বাইরে, এরকমটা বলছে না। তাদের দাবি গোটা কেরালাই পর্যটকদের জন্য নিরাপদ। কিন্তু, সাবধানতার জন্য উত্তরের চার জেলা --- কোঝিকোড়, মলপ্পুরম, ওয়ানার ও কান্নুর, এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
এদিন সাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়, 'কোঝিকোড়ে অল্প কয়েকটি নিপা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। তবে সে সংক্রমণ একটি অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ আছে। সবকটি ঘটনাই একটি পরিবাররের সঙ্গে জড়িত।' একথা ঘোষণা করলেও কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিষয়টটিকে মোটেই লঘু করে দেখছে না রাজ্য সরকার। কোঝিকোড় জেলাতে তো বটেই পাশাপাশি প্রতিবেশী জেলা মলপ্পুরম, ওয়ানার ও কান্নুরেও কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংক্রমণ যাতে কোনওভাবেই না ছড়ায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, 'স্বাস্থ্য বিভাগ ওই ঘটনাগুলির মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সকলের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।'
বাজারে নিপা ভাইরাস বা এনআইভি-র এখনও কোনও প্রতিষেধক নেই। তাই রিবাভিরিন নামে একটি অ্যান্টিভাইরাল মেডিসিন দিয়েই কাজ চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্য়েই সংক্রামিত এলাকায় বিলির জন্য ২ হাজার রিবাভিরিন ট্যাবলেতট আনা হয়েছে। আরও ৮ হাজার বিকেলের মধ্যেই এসে যাবে রাজ্যের হাতে।
প্রতিবেশী রাজ্য কর্ণাটকে রাজনৈতিক পালাবদল চললেও তার মধ্যেই জারি হয়েছে সতর্কতা। কেরল বর্ডারের সবকটি জেলা সব মোট আটটি জেলার প্রশাসন কে প্রতিদিন এব্যাপারে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য থেকে যারা এরমধ্যে কেরলের নিপা-সমক্রামিত এলাকায় গিয়েছেন তাদের খুঁজে বের করে, আগামী ১৮ দিন নজরদারি করা হবে। সতর্কতা নিচ্ছে তেলেঙ্গানা ও পুদুঁচেরিও।
তবে মানুষকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জে পি নাড্ডা। ইতিমধ্যে তিনি স্বাস্থ্য সচিব প্রীতি সুদান, আইসিএমআর-এর ডিজি বলরাম ভার্গব-কে নিয়ে কেরল বিষয়ে এক বৈঠক করেছেন। নাড্ডার দাবি, যেহেতু এক্ষেত্রে একদম শুরুতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছ, তাই সংক্রমণ এলাকার বাইরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী একথা বললেও আগাম সতর্ক হচ্ছে কোয়েম্বাটোর। সেখানকার মেডিকাল কলেজে নিপা আক্রান্তদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তামিলনাড়ু-কেরলের সীমান্তে এক বিশেষ চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে। যাতে রাজ্যে সমক্রমণ না প্রবেশ করে, তার জন্য কেরল থেকে আসা প্রত্যেককে তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেছেন।
এরমধ্যে আবার কেরলে এসে নিপা আক্রান্তদের সেবা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন উত্তর প্রদেশের গোরক্ষ পুরের বিআরডি হাসপাতালে শিশু মৃত্যুকাণ্ডে অভিযুক্ত ডাক্তার কাফিল খান। সম্প্রতি তিনি জামিনে মুক্ত হয়েছিলেন।