কর্ণাটকে ধর্ষণের অভিযুক্ত মঠ প্রধানের শিষ্যের রহস্যজনক মৃত্যু, উদ্ধার সুইসাইড নোট
কর্ণাটকে ধর্ষণের অভিযুক্ত মঠ প্রধানের শিষ্যের রহস্যজনক মৃত্যু, উদ্ধার সুইসাইড নোট
কর্ণাটকের বেলাগাভি জেলায় নিজের মঠে এক সন্ন্যাসীর মৃতদেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে। শ্রী গুরু মাদিবালেশ্বর মঠের প্রধান বাসভ সিদ্দলিঙ্গ স্বামীকে তাঁর বাসভবনে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ বাসভ সিদ্দলিঙ্গ স্বামীর মৃতদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। কর্ণাটক পুলিশ বাসভ সিদ্দলিঙ্গ স্বামীর মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে।
সুইসাইড নোটে কী লেখা রয়েছে
শিবমূর্তি মুরগা শারনারু শিষ্য ছিলেন বাসভ সিদ্দিলিঙ্গ স্বামী। শিবমূর্তি মুরগা শারনারু বিরুদ্ধে দুই নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। এই বিষয়ে সম্প্রতি একটি ভিডিও হয়েছে। সেখানে দুই মহিলাকে শিবমূর্তি মুরগা শারনারুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। দুই মহিলার কথপোকথনে বাসভ সিদ্দিলিঙ্গ স্বামীর নাম উঠে এসেছে। সুইসাইড নোটে বাসভ সিদ্দিলিঙ্গ স্বামী জানিয়েছেন, এই ভিডিওটির জন্য তিনি অত্যন্ত বিরক্ত বোধ করছেন। সেই কারণে তিনি আত্মহত্যা করছেন। কর্ণাটক পুলিশ বাসভ সিদ্দিলিঙ্গ স্বামীর মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে।
শিবমূর্তি মুরগা শারনারুর জামিনের আবেদন নাকচ
দুই নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে শিবমূর্তি মুরগা শারনারুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় আদালত। আদালতের নির্দেশ অনুসারে অভিযুক্তকে চিত্রদুর্গার কারাগারে রাখা হবে। শিবমূর্তি মুরগা শারনারুর জন্য চিত্রদুর্গার কারাগারের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে শিবমূর্তি মুরগা শারনারুর জামিনের আবেদন করা হয়। ৭ সেপ্টেম্বর জন্য তা মুলতুবি রাখা হয়েছে।
নাবালিকাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
শারনারু ছাড়াও মঠের আরও চার কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, দুই নাবালিকা প্রথমে ওদানদি সেবা সংস্থা নামে একটি এনজিও-এর কাছে যায়। নিজেদের অভিযোগের কথা বলে। তারপর ওই ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মাইসুরুর এই সেবা সংস্থাটি মূলত পাচার হয়ে যাওয়া বা যৌন নিপীড়িত শিশু ও মহিলাদের উদ্ধার, পুনর্বাসনের কাজ করে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অভিযোগ
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির অভিযোগ, মুরগা মঠের অধীনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৫ থেকে ১৬ বছরের ছাত্রীদের গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে যৌন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, দুই ছাত্রী অভিযোগ করেছে মানে শুধু তারা যৌন হেনস্তার শিকার হয়নি। মঠের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগ ছাত্রী এই যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছে। বহু বছর ধরে এখানে শিশু ও কিশোরীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে আনেনি। এই দুই কিশোরী প্রথম প্রকাশ্যে আনার সাহস দেখিয়েছে বলেও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানিয়েছে, কোনও চাপের কাছে তারা মাথা নত হবে না। নির্যাতিত শিশু ও কিশোরীদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে তারা লড়াই করবে।