হিজাব মামলার আজ চূড়ন্ত রায়দান, অশান্তির আশঙ্কায় বন্ধ কর্নাটকের সব স্কুল-কলেজ, জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি
হিজাব মামলার আজ চূড়ন্ত রায়দান, অশান্তির আশঙ্কায় বন্ধ কর্নাটকের সব স্কুল-কলেজ, জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি
বহু প্রতিক্ষীত হিজাব মামলার রায়দান আজ। কর্নাটক হাইকোর্ট আজ হিজাব বিতর্কের রায়দান করবেন। সেকারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব স্কুল-কলেজ। অশান্তি এড়াতে সবরকমের জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্নাটক সরকার। গত এক মাস ধরে কর্নাটকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করা নিয়ে তুমুল অশান্তি শুরু হয়েছে।
আজ কর্নাটক হাউকোর্টে রায়দান
স্কুল-কলেজে হিজাব পরা যাবে কিনা তা নিয়ে আজ চূড়ান্ত রায় দেবে কর্নাটক হইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে মামলা করা হলে শীর্ষ আদালত কর্নাটক হাইকোর্টের উপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছে। কাজেই গত এক মাস ধরে গোটা দেশে যে হিজাব বিতর্ক মাথাচারা দিয়েছে তার আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শোনাতে চলেছে কর্নাটকর হাইকোর্ট। সেকারণে গতকাল থেকে কর্নাটক জুড়ে চরম উত্তেজনা রয়েছে। সেকারণে আজ কর্নাটকের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বড় জমায়েতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
জানুয়ারি থেকে চড়ছে হিজাব বিতর্ক
জানুয়ারি মাস থেকেই কর্নাটকে প্রথম শুরু হয় হিজাব বিতর্ক। কর্নাটকের উদিপিতে একটি জুনিয়র কলেজে ছাত্রীরা হিজাব পরে আসায় তাঁদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কর্নাটক সরকারের নতুন শিক্ষানীতিতে জানানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা যাবে না। উদিপির যে কলেজে প্রথম এই নিয়ে শোরগোল পড়েছিল সেই কলেজের ডেভলপমেন্ট কমিটির সভাপতি ছিলেন বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভাট। হিজাব পরে কেন কলেজে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না এই নিয়ে ছাত্রীরা প্রতিবাদ জানালে তাঁেদর কলেজ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়। কিন্তু হিজাব পরে কিছুতেই কলেজে আসতে দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। কলেজের পক্ষ থেকে জানানো হয় যাঁরা কলেজে হিজাব পরে ক্লাস করতে চান তাঁদের ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে কলেজ তাঁদের হিজাব পরে ক্লাস করতে দেবে সেই কলেজে যেন তারা চলে যায়। তার পরেই গোটা রাজ্যে তুমুল অশান্তি ছড়িেয় পড়ে।
হিজাব নিষেধাজ্ঞায় অনড় রাজ্য
বিক্ষোভের পরেই হিজাব নির্দেশিকা প্রত্যাহার করতে রাজি হয়নি কর্নাটক সরকার। ২৬ জানুয়ারি কর্নাটক সরকার এই সমস্যা মেটানোর জন্য একটি কমিটি গঠন করেছিল। কিন্তু সেই কমিটি সমাধান বের না করা পর্যন্ত সকলকে স্কুল এবং কলেজের ইউনিফর্ম নির্দেশিকা মানতে হবে বলে নির্দেশিকা জারি করা হয়। অর্থাৎ হিজাব না পরেই স্কুলে-কলেজে যেতে হবে ছাত্রীদের। একই মধ্যে কর্নাটকের উদিপি কলেজে একদল ছাত্রী কর্নাটক হাইকোর্টে মামলা করে বসে। সেখানে তারা দাবি করে হিজাব পরা তাঁদের মৌলিক অধিকার। সেই অধিকার থেকে তাঁদের জোর করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এমনকী ধর্মের স্বাধীনতাতেও হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানায় তারা।
কর্নাটক জুড়ে প্রতিবাদ
উদিপি কলেজের হিজাব বিতর্কের আঁচ গিয়ে পড়ে গোটা রাজ্যে। কর্নাটকের কোপ্পা, মেঙ্গালুরু কলেজেও হিজাব পরে আসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই নিেয় ছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ফেব্রুয়ারি মাসে কর্নাটকের কুন্দপুরে মহিলা কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের হিজাব পরে আসলে কলেজে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে নির্দেশিকা জারি করে। তাতে ছাত্রীরা প্রতিবাদ জানালে। পাল্টা আরেকদল ছাত্রী গেরুয়া চাদর গায়ে দিয়ে কলেজে আসতে থাকেন। কর্নাটকের শিমোগা জেলাতেও একই ভাবে কলেজে হিজাব পরতে না দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল। পরিস্থিতি সামাল দিেত শেষে কলেজ চত্ত্বরে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কর্নাটক সরকার। এর মধ্যে আবার জড়িয়ে পড়েছিল রাজনীতি। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কড়া নিন্দা করা হয়েছিল বিজেপি সরকারের এই নির্দেশিকাকে। সিদ্দারামাইয়া অভিযোগ করেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গৈরিকীকরণ করতে চাইছেন বোম্মাই সরকার। সেকারণে হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।