রাম মন্দির ভূমি পুজোর আগে ফের বাবরি মসজিদ ধ্বংস বিতর্ক উস্কে দিলেন কল্যাণ সিং
সেদিন কর সেবকদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ না দিয়ে গর্ব বোধ করছি৷ বললেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা কল্যাণ সিং৷ তিনি বলেন, '১৯৯২ সালে আমি যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম৷ সেই সময় বিক্ষোভ চলাকালীন কর সেবকরা জড়ো হয় অযোধ্যায়৷ সেই সময় জেলাশাসক আমায় জানিয়েছিলেন, চার ব্যাটেলিয়ন কেন্দ্রীয় ফোর্স সাকেত মহাবিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছিল৷ সেই সময় আমি কর সেবকদের উপর গুলি চালাতে মানা করি৷'
কর সেবকদের উপর গুলি চালানো যাবে না
তিনি আরও বলেন, 'অযোধ্যায় সেই সময় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তার উপর নজর রেখে আমি লিখিত নির্দেশ দিয়েছিলাম কর সেবকদের উপর গুলি চালানো যাবে না৷ সেখানে প্রায় ৩ লাখ কর সেবক জড়ো হয়েছিল৷ গুলি না চালিয়ে অন্য কোনও উপায়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার উপদেশ দিই৷ আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম৷ কারণ, আমি জানতাম গুলি চালানো হলে বহু লোক প্রাণ হারাত৷ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কর সেবকরা সেখানে এসেছিল৷ হিংস্রতা সেই সময় দেশে ও রাজ্যে আরও খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করত৷ আমি গর্বিত সেই সময় কোনও কর সেবকের প্রাণ যায়নি ৷'
৫ অগাস্ট অযোধ্যায় শ্রী রাম মন্দিরের ভূমিপুজো
৫ অগাস্ট অযোধ্যায় শ্রী রাম মন্দিরের ভূমিপুজো ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী৷ এবিষয়ে কল্যাণ সিং বলেন, সেই সিদ্ধান্তের জন্য, সরকার পড়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু আমার ভগবান রামের প্রতি সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে৷ অযোধ্যায় রাম মন্দিরের কাজ শুরু হওয়া ৫০০ বছরের সংগ্রামের ফল৷ এটি অত্যন্ত খুশি ও গর্বের একটি সময়৷ ১৫২৮ সালে, বাবরের সেনাপ্রধান মীর বাকি অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ বানিয়েছিল৷ এই কাজের কোনওরকম ধর্মীয় কারণ ছিল না৷ শুধুমাত্র হিন্দুদের অপদস্ত করার জন্যই এই কাজ করা হয়। এরপর প্রায় ৫০০ বছরের সংগ্রাম৷ শেষ পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে রাম মন্দির৷
অনুষ্ঠানের মূল অতিথি প্রধানমন্ত্রী মোদী
শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট মহান্ত নৃত্য গোপাল দাস জানিয়েছেন, ৫ অগাস্ট অযোধ্যায় রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী৷ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরই শুরু হবে মন্দির তৈরির কাজ৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবৎ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বিভিন্ন মন্ত্রী ও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা৷
আমন্ত্রিত নন আডবাণী
এদিকে কল্যাণ সিং, ঊমা ভারতীকে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হলেও রামমন্দির ভূমিপূজা উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানানো হল না বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী ও মরলী মনোহর যোশীকে। প্রসঙ্গত, গতমাসেই মুরলী মনোহর ও আডবাণীকে বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। ২৪ জুলাইয়ের শুনানিতে আডবাণীকে ১০০০টি প্রশ্ন করা হয়েছিল ৪ ঘণ্টায়।
বিশেষ আদালতে আডবাণীকে জিজ্ঞাসাবাদ
বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় প্রাক্তন উপ প্রধানমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীর বয়ান রেকর্ড করা হয় ২৪ জুলাই। এই মর্মে একটি নির্দেশিকা জারি করে সিবিআই-এর বিশেষ আদালত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩১৩ নম্বর ধারা অন্তর্গত আডবাণীর বয়ান রেকর্ড করা হয়। এছাড়া ২৩ জুলাই এই একই মামলায় মুরলী মনোহর যোশীরও বয়ান রেকর্ড করা হয়।
ভূমিপূজা নিয়ে চরম রাজনৈতিক চাপানউতোর
এদিকে ভূমি পূজাকে কেন্দ্র করে জাতীয় রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তীব্র আলোড়ন। এরই মাঝে কংগ্রেসের নয়া দাবি, সব রাজনৈতিক দলকে অযোধ্যায় আমন্ত্রণ জানানো উচিৎ। কংগ্রেস চাইছে এই রাম পুজোয় অংশ নিতে। এই নিয়ে কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সালমান খুরশিদ বলেন, 'আদালতের রায়ের পর রামমন্দির নিয়ে সমস্ত বিবাদ আমরা পিছনে ফেলে এসেছি। তবে আমাদের মনে হয়, মন্দির নির্মাতাদের ভূমি পূজায় সকল রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো উচিৎ।'