CAA নিয়ে মুখ না খুললেও জামিয়া কাণ্ডে দুঃখ প্রকাশ নোবেলজয়ী কৈলাসের
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে পুলিশি অভিযানের বিষয়ে এবার মুখ খুললেন নোবেলজয়ী কৈলাস সত্যার্থী। তিনি জানান, যে ভাবে লাইব্রেরি ও মেয়েদের হস্টেলে ঢুকে পুলিশ ছাত্রদের মেরেছে তাতে তিনি গভীর ভাবে মর্মাহত। এর সঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'জোর করে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা হলে গণতন্ত্র সঙ্কুচিত হয়ে যায়।' তবে এই কথা বললেও সরাসরি সিএএ-র পক্ষে বা বিপক্ষে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
হিংসার নিন্দায় কৈলাস
এরপর তিনি দেশে চলমান অস্থিরতা প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, 'আমি কড়া ভাষায় এই হিংসার নিন্দা জানাচ্ছি। এভাবে মানুষের মৃত্যু বা সম্পত্তি নষ্ট মেনে নেওয়া যায় না। যদিও আমার মনে হয় ছাত্র সমাজকে সবসময় তাদের মতামত প্রকাশের জন্য একটি উন্মুক্ত পরিবেশ দেওয়া উচিত। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে আমার মনে হয় যে অবিলম্বে দেশের যুবসমাজ ও সরকারের বৈঠকে বসে একে অপরকে বোঝা উচিত।'
কী ঘটেছিল জামিয়াতে?
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে রবিবার ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। এই বিক্ষোভকে ছত্রভঙ্গ করতে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ে দিল্লি পুলিশ বাহিনী। পুলিশ বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ও লাঠি চার্জ করে। তার আগে সরাই জুলেইনা ও মথুরা রোডে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। পুলিশের বক্তব্য চারটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পরে সেই রাতে ৫০ জন ছাত্রকে আটক করে পুলিশ। সোমবার সকালে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে হিংসা ছড়ানোর দায়ে গ্রেফতার করা হয় ১০ জনকে, যাদের কেউই ছাত্র নয়য় বলে জানায় দিল্লি পুলিশ।
ঘটনার তদন্তের দাবি উপাচার্যের
জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে জানায়, রবিবার রাতে দিল্লি পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের উপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে৷ জখম হন বহু পড়ুয়া। পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমা আখতার। পাশাপাশি দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে তারা বিনা অনুমতিতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। যার প্রেক্ষিতে পুলিশের সাফআই, হামলাকারী দুষ্কৃতীদের ধরতেই তারা ক্যাম্পাসে ঢুকেছিল।
সুপ্রিমকোর্ট থেকে আবেদনকারীদের হাইকোর্টে যাওয়ার নির্দেশ
সিএএ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ধরার নামে প্রায় ৫০ জন ছাত্রকে আটক করে রাখার ঘটনাতেও সরকার ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকে বিরোধীরা। ক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাত্ররা। জামিয়ার আঁচ গিয়ে পড়ে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে। এরপর সোমবার প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হন ইন্দিরা জয়সিংহ, কলিন গঞ্জালভেসরা। তবে প্রধান বিচারপতি সেদিনই জানিয়ে দেন, 'পড়ুয়া বলেই কেউ আইনশৃঙ্খলা নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ছাড়পত্র পেয়ে যায়নি। পরিস্থিতি ঠান্ডা হলেই এ বিষয়ে বিচার করতে হবে।' পাশাপাশি এই সংক্রান্ত আবেদন প্রথমে হাইকোর্টে দায়ের করার নির্দেশ তিনি।