বিতর্কিত বিচারপতি অরুণ মিশ্র হতে পারেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান, জল্পনা তুঙ্গে
বিতর্কিত বিচারপতি অরুণ মিশ্র হতে পারেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান, জল্পনা তুঙ্গে
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নতুন চেয়ারপার্সন হিসাবে নিয়োগ হতে পারেন বিতর্কিত সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অরুণ মিশ্র। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, সোমবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন উচ্চ পর্যায়ের নিয়োগ কমিটি অরুণ মিশ্রের নাম প্রস্তাব করেছে। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র।
কংগ্রেসের সুপারিশ
নিয়োগ কমিটিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, রাজ্য সভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ও রাজ্যসভার বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জুন খার্গে। তবে কংগ্রেসের খার্গে সুপারিশ করেছিলেন প্যানেলের কাছে এই পদের জন্য দলিত, আদিবাসী বা সংখ্যালঘু কমিটির কোনও প্রতিনিধিকে বাছাই করে নেওয়ার জন্য, কারণ এই সম্প্রদায়গুলি থেকেই সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে, তাই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে তাঁদের প্রতিনিধি হওয়াই শ্রেয়।
তালিকায় রয়েছে বহু নাম
অরুণ মিশ্রের পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রাক্তন মুখ্য বিচারপতি মিত্তল কুমার এবং আইবির প্রাক্তন ডিরেক্টর রাজীব জৈনের নামও সুপারিশ তালিকায় রয়েছে। তবে সরকারিভাবে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সনের নাম এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন পদ খালি
২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেশের প্রাক্তন মুখ্য বিচারপতি এইচ এল দাত্তু জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন থেকে অবসর নেওয়ার পর এই পদটি খালি পড়ে রয়েছে। অস্থায়ী চেয়ারপার্সন হিসাবে কাজ সামলাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি প্রফুল্ল চন্দ্র পান্ত।
অরুণ মিশ্রের কর্মজীবন
১৯৯৯ সালের ২৫ অক্টোবর অরুণ মিশ্র প্রথম মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিয়োজ হন। এরপর ২০১০ সালের নভেম্বরে তিনি রাজস্থান হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি পদে যোগ দেন এবং এখান থেকে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে কলকাতা হাইকোর্টে মুখ্য বিচারপতি হয়ে বদলি হন। ২০১৪ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ হন এবং অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত পাঁচ বছর ধরে তিনি বহু রাজনৈতিক স্পর্শকাতর ও হাই-প্রোফাইল মামলার শুনানি করেছেন। যদিও তিনি পরিবেশ থেকে শুরু করে বাড়ি ক্রেতাদের স্বার্থে, টেলিকম খাত সম্পর্কিত বহু ইস্যুতে অনেক রায় ও আদেশ দিয়েছেন। তবে প্রশান্ত ভূষণ অবমাননার মামলার রায় এবং জমি অধিগ্রহণ মামলার রায়ের মতো বিতর্কিত মামলার কারণেও তাঁর আমল বেশ স্মরণীয় ছিল।
অরুণ মিশ্র ও বিতর্কিত মন্তব্য
অরুণ মিশ্র ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর প্রশংসা করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক জুডিশিয়াল কনফারেন্সে এসে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে বসে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে জানান যে মোদী অন্তঃরাষ্ট্রীয় স্তরে প্রশংসিত একজন দূরদর্শী যিনি আন্তর্জাতিক স্তরের ভাবনা চিন্তা করতে পারেন এবং স্থানীয় ভাবে তা কার্যকর করতে পারেন। এই মন্তব্যের পরই অরুণ মিশ্রের সমালোচনায় সরব হয় রাজনৈতিক দলগুলি।