১৬ বছরের অনশন প্রত্যাহার করতে চলেছেন ইরম শর্মিলা চানু, নেপথ্যে কি ব্রিটিশ বয়ফ্রেন্ড?
ইম্ফল. ২৭ জুলাই : আদলতে দাঁড়িয়েই ঘোষণা করে দিয়েছেন, আর অনশন নয়। আফস্পা আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ১৬ বছর ধরে চালিয়ে যাওয়া অনশন এবার ভাঙতে চলেছেন ভারতের 'আয়রন লেডি' ইরম শর্মিলা চানু। আগামী ৯ আগস্ট ফলের রস খেয়ে অনশন ভাঙবেন শর্মিলা। এই তাঁর এই সিদ্ধান্তে স্বভাবতই অবাক সকলে। শর্মিলার অনুগামী থেকে পরিবার এমনকি ঘণিষ্ঠরাও শর্মিলার সিদ্ধান্ত জানার পর আকাশ থেকে পড়েছেন।
শর্মিলার বড় ভাই সিংঘাজিৎ, যিনি শর্মিলার আন্দোলনের গোটা সময়টা তাঁর সঙ্গে কাটিয়েছেন, তিনিও অবাক এই সিদ্ধান্তে। তাঁর কথায়, "আমার শরীরটা ভাল ছিল না, সেই কারণে গত কয়েকদিন ওর সঙ্গে কথা হয়নি আমার। ওর অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আমি অন্যদের কাছে শুনলাম।"
শর্মিলার দীর্ঘকালের সঙ্গীরাও অবাক হয়েছেন তাঁর সিদ্ধান্তে। যদিও তাদের কথায়, শর্মিলার হঠাৎ এহেন সিদ্ধান্তে একটু অবাক তো বটেই। তবে, এর পিছনে ওর যুক্তিটাও বুঝতে পারছি। ওর অনশনের জন্য যদি গত ১৫ বছরে আফস্পা আইন প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে আগামী ৩০ বছরেও হবে না। কিন্তু শর্মিলার যে এই ধরণের কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চলেছিলেন সে বিষয়ে অবগত ছিলেন না বলেই তারা জানিয়েছেন।
২০০০ সালে যখন অনশন শুরু করেছিলেন শর্মিলা তখন জানিয়ে দিয়েছিলেন, আফস্পা প্রত্যাহার করা না পর্যন্ত তিনি বাড়িতেও ঢুকবেন না, মায়ের মুখ পর্যন্ত দেখবেন না। গত ১৬ বছরে মাত্র একবারের জন্য মায়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁর, যখন তাঁর মাকেও একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
শর্মিলার দাদার কথায়, প্রথম যখন ও অনশন শুরুর কথা বলে, তখন ওকে বারবার বুঝিয়েছিলাম এই পথে না যেতে। কিন্তু ও আমার কথা শোনেনি। এখন এই সিদ্ধান্তের পিছনে কি কারণ সে বিষয়ে অনেকেই ধোঁয়াশায়। শর্মিলা অনুগামীদের একটা অংশ বলছে শর্মিলার ব্রিটিশ বয়ফ্রেন্ড ডেসমন্ড কুটিনহোর একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে শর্মিলার অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে।
প্রসঙ্গত ২ বছর আগে আদালত চত্ত্বরে ডেসমন্ডের সঙ্গে প্রথম দেখা হয় শর্মিলার। শর্মিলার অনুগামীরা তাঁকে মারধর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। শর্মিলার পরিবার জানিয়েছিল আফস্পা প্রত্যাহারের আন্দোলনকে ধাক্কা দিতেই সরকার চক্রান্ত করছে। পরে ধীরে ধীরে ভালবাস গড়ে ওঠে। ডেসমন্ডকে বিয়ে করার কথাও ভাবছেন শর্মিলা।
তবে অন্য দল বলছে, আসলে এত বছরের আন্দোলনের পরও সরকার দাবি মানছে না বলেই একটা চোরা হতাশা তৈরি হয়েছে শর্মিলার। তাই অনশনের পথ থেকে বেরিয়ে এসে আন্দোলনের পথে পরিবর্তন আনতে চাইছেন শর্মিলা।