১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনার বিজয় উদযাপনে ব্রাত্য ইন্দিরা, ক্ষুব্ধ রাহুল
বৃহস্পতিবার বিজয় দিবস। পাকিস্তানের দখল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের ৫০তম বর্ষপূর্তি। যথারীতি উৎসবের আবহ পড়শি দেশজুড়ে, মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নত হচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতীয় সেনার বীর জওয়ানদের মনে করছে ভারতও। বিজয় দিবস উপলক্ষেই দেশের রাজধানী নয়াদিল্লিতে 'স্মরণীম বিজয় মশাল' অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল কেন্দ্র সরকার। এবার সেই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

কেন ক্ষুব্ধ রাহুল?
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তাঁর বক্তৃতায় একবারের জন্যও স্থান পায়নি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নাম। এবার এই ইস্যুতেই কেন্দ্রীয় সরকার তথা মোদীকে বিঁধলেন রাহুল। রাহুল বলেন, ' মাত্র ১৩ দিনের মাথায় পাকিস্তান মাথা ঝুঁকিয়েছিল। সাধারণত একটা যুদ্ধ ৬ মাস কিংবা ১-২ বছর ধরে চলে। আফগানিস্তানকে পরাজিত করতে আমেরিকার ২০ বছর লেগেছিল। কিন্তু ভারত মাত্র ১৩ দিনেই পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিল। এর কারণ, সেই সময় গোটা দেশ এক ছিল৷ দেশের জন্য ৩২ টি বুলেট নিজের দেহে নিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। ১৯৭১ সালের সেই ঘটনার ৫০ তম বর্ষপূর্তিতে কিনা তাঁর নাম একবারের জন্যও উচ্চারিত হল না?'

মোদীকে খোঁজা বিজেপির!
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত তথা তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অবদানের কথা সকলেরই জানা৷ ঐতিহাসিকদের একটা বড় অংশের মতে, বাংলাদেশকে স্বাধীন করা ইন্দিরার বর্ণময় কেরিয়ারের অন্যতম 'অ্যাচিভমেন্ট'। এদিন সেই ঘটনার বর্ষপূর্তিতে উত্তরাখণ্ডে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন রাহুল। শুরুতেই তিনি বলেন, 'রাজ্যের হাজার হাজার পরিবারের মতো তাঁর পরিবারও দেশের জন্য ত্যাগ করেছে। উত্তরাখণ্ডের সঙ্গে এটাই আমার বন্ধন, সম্পর্ক। কিন্তু যে পরিবার দেশের জন্য কোনও ত্যাগই করেনি, তারা এসব বুঝবে না।'

পরিবারবাদ ও কংগ্রেস!
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সাধারণত পরিবারবাদ তথা 'নেপোটিজম' নিয়ে আক্রমণ শানাতে দেখা যায় বিরোধীদের। বিজেপি তো বটেই, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তরফেও বলা হয়, কংগ্রেসের অন্দরে গণতন্ত্র নেই, সর্বেসর্বা সেই একটি পরিবারই। এর আগে বহুবার এই যুক্তি খণ্ডন করার চেষ্টাও করেছেন কংগ্রেস নেতারা। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বিজয় দিবসের ৫০ তম বর্ষপূর্তিতে উত্তরাখণ্ডে দাঁড়িয়ে সেই 'গান্ধী পরিবারের' অবদানকেই যেন আরও বেশি করে প্রকাশ্যে আনলেন রাহুল।
