ইন্দিরা গান্ধীও বাংলাদেশি শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন, পাল্টা যুক্তি দিলেন অমিত শাহ
আজ সংসদে নাগরিকত্ব বিল পেশ করার পর বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েন অমিত শাহ। তবে নিজের যুক্তিতে অনড় থাকেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সোমবার সংসদে নাগরিকত্ব বিল পেশ করার পর বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েন অমিত শাহ। তবে নিজের যুক্তিতে অনড় থাকেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি পাল্টা কংগ্রেসকে পাল্টা বলেন, কেন্দ্রে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার থাকাকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল।
ইন্দিরা ও রাজীব গান্ধীও শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন
নিজের যুক্তির পক্ষে অমিত শাহ বলেন, 'এই বিল .০১ শতাংশও সংখ্যালঘুদের বিপক্ষে নয়। এই বিল কোনও ভাবেই সংবিধানের কোনও ধারাকে উলঙ্ঘন করছে না। ১৯৭১-র পরেও বাংলাদেশে সেখানের সংখ্যালঘুদের খুঁজে খুঁজে মারা হয় ও সেখানে অত্যাচার চলে। কংগ্রেস নিজেও দণ্ডকারণ্যে থাকা বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিয়েছিল। রাজীব গান্ধীর সময় উগান্ডা থেকে আসা শরণার্থীদেরও কংগ্রেস নাগরিকত্ব দিয়েছিল। তবে তখন ব্রিটেন থেকে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেয়নি কংগ্রেস। ১৯৫০ সালে নেহরু-লিয়াকত চুক্তি সই হয়। তখন নিজেদের দেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে এত বছরে আমাদের প্রতিবেশী দেশে হিন্দু, শিখ সহ সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত অত্যাচার চলেছে। তা হলে কী আমরা তাদের উপর অত্যাচার হতে দেব?'
১৯৭১-এ শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী
বস্তুত, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ বিদ্ধস্ত পূর্ব পাকিস্তান থেকে সেই সময় প্রায় ১ কোটি শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নেয়। এত সংখ্যায় শরণার্থী ভারতে চলে আসায় দেশের অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে। পাকিস্তানকে ভারতে আসা শরণার্থীদের সুরক্ষিত ভাবে ফিরিয়ে নিতে বলেন ইন্দিরা গান্ধী। তবে সেই আলোচনা ভেস্তে যায়। পড়ে ভারতে আসা শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।
বিল পেশ হতেই সংসদে তুমুল হট্টগোল
আজ সংসদে বিলটি পেশ করার প্রস্তাব রাখা হলে তা নিয়ে তুমুল হট্টগোল বাধে। বিরোধীরা সংসদ প্রায় অচল করে দেওয়ার মতো করে সরকারকে আক্রমণ শাণায়। প্রথমেই কংগ্রেসের তরফে বিলের বিরোধিতায় বলতে ওঠেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, 'আমরা ধর্মনিরপেক্ষ দেশে বাস করি, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া ঠিক নয়।' বিলটি সংখ্যালঘুদের স্বার্থ বিরোধী বলে আখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন, 'সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারাকে আক্রমণ করা হচ্ছে এই বিলের মধ্য দিয়ে।'
সৌগত রায়ের অভিযোগ
এরপর আসরে নামেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। সৌগত রায় কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার প্রসঙ্গ টেনে নিয়ে এসে বলেন, 'কয়েক মাস আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন যে আমরা দেশে এক বিধান আনব। তবে এই ক্ষেত্রে কী করে উত্তর-পূর্বের ষষ্ঠ তফসিল এলাকাগুলিকে বাদ দিয়ে এই আইন প্রনোয়ণ করা হবে? এই বিল অসাংবিধানিক ও বিভেদ সৃষ্টিকারী।'
সিএবি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি জায়গাকে
এর আগে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির আশঙ্কা ও উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লাগুর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কতগুলি জায়গা বাদ রাখা হবে বলে জানিয়েছিলেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করেছে, তাতে অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মিজোরামের ইনার লাইন পারমিটভুক্ত এলাকা এবং উত্তর পূর্বের ষষ্ঠ তফশিলভুক্ত এলাকাগুলিকে বাদ রাখা হয়েছে।
যুক্তিসঙ্গত শ্রেণিবিন্যাস
তবে এই অভিযোগ ও প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে অমিত শাহ বিরোধীদের উদ্দেশ্যে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন। অমিত শাহ বলেন, 'এই আইনে শ্রীলঙ্কার তামিল হিন্দু ও মায়ানমারের হিন্দু রোহিঙ্গাদের বাদ রাখা হয়েছে। কিন্তু এই বিলে কোনও মুসলিমদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়নি।' এরপর তিনি আরও বলেন, 'যদি সমান অধিকারের কথা বলেন তবে দেশে সংখ্যালঘুদের কেন সংরক্ষণ ও বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়। তা হলে সেই ক্ষেত্রে তো সাম্যতার প্রসঙ্গ তোলে না বিরোধীরা? তখন কী সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারার উলঙ্ঘন হয়? আমি উদাহরণ দিয়ে বলতে পারি যে যুক্তিসঙ্গত শ্রেণিবিন্যাসের মাধ্যমেই সব দেশে অন্য দেশের নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেয়। আমেরিকাতেও গ্রিন কার্ড তাদেরকেই দেওয়া হয় যারা সেখানে গিয়ে দেশএর উন্নতির জন্য কাজ করবেন।
কংগ্রেস ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ না করলে এই বিলের প্রয়োজন হত না', পাল্টা আক্রমণ অমিত শাহের
'যা দাম করেছ, দাম কমাবে'! পেঁয়াজের দর দেখতে সাত সকালে কলকাতার বাজারে মমতা