India-China Border Clash: কেন অরুণাচল প্রদেশে চিনের সঙ্গে সীমন্ত বিরোধ? কী বলছে ইতিহাস
India-China Border Clash: কেন অরুণাচল প্রদেশে চিনের সঙ্গে সীমন্ত বিরোধ? কী বলছে ইতিহাস
প্রায় আড়াই বছরের বেশি সময় আগে পূর্ব লাদাখের গালোয়ানে সীমান্ত সংঘর্ষের পরে এবার চিনের সঙ্গে ভারতের সীমন্ত সংঘর্ষ অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরের ইয়াংটস এলাকায়। ভবিষ্যতে বিষয়টি আরও বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
এই সংঘর্ষের ঘটনার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৈঠক ডেকেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, ১১ ডিসেম্বর ওই সেক্টরে দুদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছে।
চিনের সেনাদের তাড়িয়েছে ভারতীয় সেনা
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রে খবর, ৯ ডিসেম্বর ১৭ হাজার ফুট উচ্চতায় ৩০০-র বেশি চিনা সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেই সময় ভারতীয় সেনা চিনা সৈন্যদের পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়।
অরুণাচল প্রদেশের ১৫ টি এলাকার নাম পরিবর্তন
চিন অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে দাবি করে আসছে। আর গত বছর তারা ওই রাজ্যের আবাসিক স্থান, পাহাড়, নদী-সহ ১৫ টি এলাকার নামও পরিবর্তন করে। সেই সময় ভারত সরকারের তরফে তীব্র আপত্তি জানানো হয়। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, অরুণাচল প্রদেশে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল-আছে-থাকবে।
অরুণাচলে ভারতীয় নেতাদের সফরের বিরোধিতা
শুধু নাম পরিবর্তনই নয়, চিন অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় নেতাদের সফরেরও বিরোধিতা করে। ২০২১-এ তৎকালীন ভারতীয় উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু অরুণাচল প্রদেশ সফর করেন। সেই সময় চিনের তরফে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, ভারত যেন এমন কোনও কাজ না করে, যাতে সীমান্ত সমস্যা আরও বাড়ে। তবে এর আগে চিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অরুণাচল প্রদেশ সফরের বিরোধিতা করেছিল।
অরুণাচল প্রদেশে ভারতের সঙ্গে চিনের সীমানা
অরুণাচল প্রদেশে ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত বিরোধ দীর্ঘদিনের। উল্লেখ করা প্রয়োজন ভারতের সঙ্গে চিনের সীমানা রয়েছে প্রায় ৩৫০০ কিমি। ম্যাকমোহন লাইনকে ভারত-চিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমানা হিসেবে ধরা হয়। এই সীমানাকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বলা হয়। এছাড়াও আন্তর্জাতিক মানচিত্রেও অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চিনের সঙ্গে ভারতের সীমানা তিনটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। পূর্ব, মধ্য ও পশ্চিম এই তিন সেক্টরের মধ্যে পূর্ব সেক্টরে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিম। এই এলাকায় সীমান্ত রয়েছে প্রায় ১৩৪৬ কিমির মতো। মধ্যভাগে রয়েছে উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশের অংশ। আর পশ্চিম সেক্টরে রয়েছে লাদাখের অংশ।
অরুণাচলের সীমান্ত বিরোধের ইতিহাস
- চিন অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে মনে করে। তাদের দাবি ভারত এই এলাকা দখল করে রেখেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংয়ে বৌদ্ধ মঠ রয়েছে। যেখানে ১৬৮৩ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ষষ্ঠ দলাই লামা।
- বলে রাখা ভাস ১৯১২ সাল পর্যন্ত ভারত ও তীব্বতের মধ্যে কোনও সীমানা ছিল না। এই এলাকা কোনও সময় মুঘলদের অধীনে আসেনি আবার পরবর্তী সময়ে তা ব্রিটিশদের অধীনেও যায়নি। তবে ১৯১৪ সালে তাওয়াং মঠ আবিষ্কারের পরে সেখানে সীমানা চিহ্নিতকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
- ১৯১৪ সালে ব্রিটিশরা সিমলা চুক্তি করে। সেখানে তিব্বত, চিন এবং ব্রিটিশদের মধ্যে সীমানা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সেই সময়কার সিমলা চুক্তিতেও তিব্বতকে স্বাধীন বলে দেখানো হয়নি। অন্যদিকে ব্রিটিশরা সেই সময় চিন যাকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ বলে দাবি করছে, সেই তাওয়াংকে ভারতের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে। সেই সময় তাওয়াং-এর বাসিন্দারা বিষয়টি নেমে নিলেও, চিন বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি।
ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে দাবি
পরবর্তী সময়ে চিন ১৯৫০-এ তিব্বত আক্রমণ করে তা দখল করে নেয়। তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বাস এই যুক্তিতে তারা তাওয়াংকেও নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে। এর ওপরে ভিত্তি করে চিন অরুণাচল প্রদেশকে তাদের অংশ বলেও দাবি করে।
India-China Border Clash: অন্য কারণ 'ফাঁস'! ভারত-চিন সংঘর্ষে কংগ্রেসের উদ্বেগকে কটাক্ষ অমিত শাহের