বিহারে শিক্ষিত ভিক্ষাজীবীদের মাসিক আয় ১৮ হাজার!
এটুকুতে যদি অবাক হন, তবে জেনে রাখুন আরও! তা হল, ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক রোজগার করে ভিক্ষাজীবীরাও এখন 'বাবু'!
অন্তত বিহারে এটা পুরোপুরি প্রযোজ্য। রাজ্য সরকারেরই একটি সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, বিহারে যারা ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাঁদের অনেকে শিক্ষিত। কেউ ম্যাট্রিকুলেট, কেউ আবার স্নাতক। চাকরি পাননি বলে বাধ্য হয়ে বেছে নিয়েছেন ভিক্ষার রাস্তা। মানসম্মান নিয়ে আপোশ করতে হয়েছে বটে, কিন্তু রোজগার মন্দ নয়। অন্তত চাকরি জীবনের শুরুতে সাধারণভাবে যা রোজগার হত, তার চেয়ে এই পেশায় আয় বেশি!
মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ব্যক্তিগতভাবে ভিক্ষাবৃত্তি নির্মূল করতে চান রাজ্য থেকে। তাই 'মুখ্যমন্ত্রী ভিক্ষাবৃত্তি নির্বাণ যোজনা' চালু হয়েছে সমাজকল্যাণ দফতরেরে উদ্যোগে। নীতীশ কুমার চান না, অন্তত পাটনার রাস্তায় অদূর ভবিষ্যতে কোনও ভিখারি থাকুক।
প্রকল্পটির প্রথম ধাপ হিসাবে পাটনা ও গয়া জেলায় ভিক্ষাজীবীর সংখ্যা জানতে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। দেখা যায়, পাটনায় ভিক্ষাজীবীর সংখ্যা ২২২৩ জন। আর গয়াতে ২৩৬৫ জন। এঁদের অধিকাংশ লেখাপড়া জানা। কারও শিক্ষাগত যোগ্যতা ম্যাট্রিকুলেট, কারও স্নাতক। ভিক্ষা চাওয়ার ফাঁকে খবরের কাগজে চোখ বুলিয়ে নেন। কেউ ভিক্ষার ঝুলিতে স্মার্টফোন রেখে দেন। দরকারে বাড়ির সঙ্গে টুক করে কথা সেরে নেন।
এঁদের
রোজগার
কেমন?
যাঁরা
একটু
মুখচোরা
গোছের,
শুধু
বাটি
বাড়িয়ে
দিয়ে
হাঁ
করে
চেয়ে
থাকেন,
তাঁদের
আয়
দিনে
২০০-৩০০
টাকা।
অর্থাৎ
মাসিক
আয়
মোটামুটি
৬-৯
হাজার
টাকা।
আর
একটু
বলিয়ে-কইয়ে
ভিখারিদের
দৈনিক
আয়
গড়ে
৬০০
টাকা।
অর্থাৎ
মাসিক
আয়
১৮
হাজার
টাকা!
কারও
কারও
বাড়িতে
রঙিন
টিভি,
মাইক্রোওয়েভ
ইত্যাদি
রয়েছে!
ভিক্ষার
ক্ষেত্রে
স্থান
নির্বাচন
একটা
গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়
বলে
জানা
যাচ্ছে
ওই
সমীক্ষা
থেকে।
যাঁরা
রেলওয়ে
স্টেশন,
মন্দির
ইত্যাদির
আশপাশে
ভিক্ষা
করেন,
তাঁদের
আয়
বেশি।
পাশাপাশি,
বেশভূষা
একটা
ফ্যাক্টর।
তাই
সুউপায়ী
ভিখারিরাও
ইচ্ছে
করে
ছেঁড়া-ফাটা
পোশাক
পরে
ঘোরেন।
বাস
কন্ডাকটর,
মুদিখানার
দোকানিদের
এঁরা
খুচরো
সরবরাহ
করেন।
তাতে
ভালো
আয়ও
হয়।
সমীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসার পর তাই প্রশ্ন উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের উদ্যোগে সাড়া দিয়ে কতজন ভিক্ষাজীবী স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন? যাঁদের রোজগার ভালো, তাঁরা সামান্য ক'টা সরকারি টাকায় কীভাবে জীবনযাপন করবেন?
রাজ্য সরকার অবশ্য হাল ছাড়তে নারাজ। তাদের দাবি, এখনও পর্যন্ত দেড় হাজার ভিক্ষাজীবীকে পরিচয়পত্র দেওয়া গিয়েছে। এটা দেখিয়ে বিভিন্ন সরকারি সাহায্য পেতে পারবেন তাঁরা। ৩৫ জনকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়েছে। রাতে থাকার জন্য তৈরি করা হচ্ছে আবাসন।