এখন পর্যন্ত 'শূন্য অঙ্ক', তবু ত্রিপুরা জয়ের স্বপ্নে বিভোর বিজেপি
বহুদিন ধরেই নরেন্দ্র মোদীর হয়ে ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসাবে কাজ করে আসছেন সুনীল। আরএসএস কর্মী হলেও বহুবার বিজেপি-কে বহু ভোটের বৈতরণী পার করিয়েছেন তিনি।
সুনীল দেওধর। এই একটা মানুষই এখন বদলে দিয়েছে ত্রিপুরার রাজনৈতিক অঙ্ককে। মাত্র আড়াই বছরে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের মূল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠে এসেছে বিজেপি।
বহুদিন ধরেই নরেন্দ্র মোদীর হয়ে ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসাবে কাজ করে আসছেন সুনীল। আরএসএস কর্মী হলেও বহুবার বিজেপি-কে বহু ভোটের বৈতরণী পার করিয়েছেন তিনি। খোদ গুজরাটে তিনি বিজেপি-কে হারতে বসা আসন থেকে জিতিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। এমনকী, দিল্লিতেও বিধানসভা নির্বাচনে কাজ করেছেন সুনীল। এবার তাঁর কাঁধে দায়িত্ব পড়েছে ত্রিপুরায় বিজেপি-র জয় পতাকা ওড়ানোর।
[আরও পড়ুন-Live- ত্রিপুরায় ক্ষমতায় কি থাকবে বামেরা, শুরু ভোটগ্রহণ, সকাল থেকে ভোট দিতে লাইন]
অঙ্ক নয় কৌশলেই জয়ের অঙ্ক কষছে বিজেপি
এখন পর্যন্ত ত্রিপুরায় ভোট পাওয়ার অঙ্কে বিজেপি-র ভাগ্যে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে ৬ শতাংশ। তাও সেটা ১৯৯৮ সালে। এই বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন মানিক সরকার। এরপর সময় যত গড়িয়েছে ততই ভোটের পাওয়া শতাংশ কমতে কমতে ২-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বিধায়ক প্রাপ্তির ভাড়ারও ছিল শূন্য। তবে সম্প্রতি ভিন্ন দলের কিছু বিধায়ক বিজেপি-তে যোগ দেওয়ায় ছবিটা একটু বদলেছে। এবার এই ছবিটাকেই পাকাপাকিভাবে স্থাপন করতে চাইছে বিজেপি।
ত্রিপুরার মাটিতে কংগ্রেসই ছিল মূল প্রতিদ্বন্দ্বী
ভোট শেয়ারে বরাবরই সিপিএম-এর সঙ্গে ঠারে ঠারে লড়াই দিয়ে এসেছে কংগ্রেস। ১৯৯৩ সালে কংগ্রেসের ভোট শেয়ার ছিল ৩৭ শতাংশ। সিপিএম-এর ছিল ৪৫শতাংশ। গত বিধানসভা নির্বাচনেও সিপিএম-এর ভোট শেয়ার ছিল ৪৫ শতাংশ। কংগ্রেস পেয়ছিল ৩৭ শতাংশ ভোট। ১৯৯৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ত্রিপুরায় যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে তাতে কংগ্রেসের ভোট শেয়ার নিচের দিকে নেমেছিল। ২০১৩ সালে কংগ্রেস ১৯৯৩ সালের ভোট শেয়ারের সংখ্যাকে ছোঁয়। বিজেপি-র ভোট শেয়ার সিপিএম এবং কংগ্রেসের ধারেকাছেও ছিল না।
সিপিএম বনাম কংগ্রেস
ভোট শেয়ারে এই দুই দলের যে ছবি সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে ক্রমশই শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে সিপিএম-এর। ১৯৯৮ ও ২০০৩ সালে সিপিএম-এর ভোট শেয়ার ৬০-এর কাছে নেমে গেলেও ২০০৮ সাল থেকে তা ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোট শেয়ারের ছবিতে দেখা যাচ্ছে সিপিএম-এর ঝুলিতে ৮২ শতাংশ ভোট। সেখানে কংগ্রেসের ঝুলিতে মাত্র ১৭ শতাংশ।
৩০ টি আসন 'কি ফ্য়াক্টর'
তপশীল উপজাতি এলাকায় রয়েছে ২০টি আসন। এছাড়াও তপশীল জাতি এলাকায় রয়েছে আরও ১০টি আসন। এই তিরিশটি আসনই সংরক্ষিত। আর ত্রিপুরার মসনদে রাজ করতে হলে এই ৩০টি আসন 'কি ফ্যাক্টর'।
কোন দলে দাগী প্রার্থীদের ভিড়
দাগী প্রার্থীদের ভিড়ে সবার আগে রয়েছে এনডিএ জোট। এই জোটের আইপিএফটি-র ২২ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধেই রয়েছে অপরাধের অভিযোগ। বিজেপি-রও ২২ শতাংশ প্রার্থী দাগী। এদের পরেই রয়েছে কংগ্রেস। তাদের প্রার্থী তালিকার ৭ শতাংশ দাগী। ৪ শতাংশ করে দাগী প্রার্থী রয়েছে সিপিএম ও তৃণমূলে।