৫০০০ রেপ ইনভেস্টিগেশন কিট কিনল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, দেওয়া হবে বিভিন্ন থানায়
যৌন হয়রানির মামলায় দ্রুততা আনতে চাইছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তারা ৫০০০ রেপ ইনভেস্টিগেশন কিট কিনেছে সারা দেশে পুলিশ স্টেশনে বিতরণ করার জন্য।
ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির তদন্তে দ্রুততা আনতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকারে। অনেক সময়ই ধর্ষণের সতন্তের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ফরেন্সিক প্রমাণের অভাব। যার জন্য অনেকসময় দোষীদের চিহ্নিত করা গেলেও প্রমাণের অভাবে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।
এই ফাঁকটা পূরণ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যান মন্ত্রক। তাদের সহায়তা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, 'স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে ৫০০০ টি রেপ ইনভেস্টিগেশন কিট কেনা হয়েছে। লটারিতে বেছে নিয়ে দেশের বিভিন্ন থানায় এই কিটগুলি পাঠানো হবে। যৌন হয়রানির তদন্তের ক্ষেত্রে দ্রুততা আনতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।'
রেপ ইনভেস্টিগেশন কিট কী?
রেপ ইনভেস্টিগেশন কিটে ডিএনএ প্রমাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম মজুত থাকে। থাকে বেশ কিছু টেস্টটিউব, কাঁচের শিশি, বোতল ইত্যাদি। এগুলিতে স্বেদ, রক্ত, বীর্য ইত্যাদি প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়। শুধু তাই নয়, কোন পুলিশ অফিসারের তত্ত্বাবধানে কে সেই নমুনা সংগ্রহ করছেন, কখন করছেন সব নথিভূক্ত করা থাকবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, এরকম প্রতিটি কিটের দাম পড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।
কেন এই কিট দরকার ?
স্বরাষ্ট্র দপ্তরের আধিকারিক জানিয়েছেন, অনেক সময়ই প্রমাণ সংগ্রহ করা হলেও তাতে খুঁত থেকে যায়। সঠিক ভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ না করার ফলে সেই প্রমাণ থেকে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে গবেষকদের সমস্যায় পড়তে হয়। এই নতুন কিটগুলি ব্যবহার করলে, প্রমাণ সংগ্রহ যেমন সঠিক পদ্ধতি মেনে হবে, সেই সঙ্গে সেই প্রমাণ একেবারে সিল্ড অবস্থাতে গবেষণাগারে পৌঁছনোয়, তাতে বাইরে থেকে কিছু মেশার সম্ভাবনা থাকবে না।
রাজ্যদের সহায়তা
দেশের সব থানার হাতে এরকম কিট তুলে দেওয়ার কথা বলেছে নারী ও শিশু কল্যান মন্ত্রক। তবে এব্যাপারে রাজ্যগুলির সহায়তা চেয়েছেন মন্ত্রী মানেকা গান্ধী। গত সপ্তাহেই তিনি রাজ্যগুলির কাছে আবেদন করেন এই ধরণের কিট কিনে প্রতিটি থানায় দেওয়ার জন্য। জানা গিয়েছে সব রাজ্যই এতে সম্মতি দিয়েছে। হরিয়ানা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
ফরেনসিক ল্যাবের অভাব
থানাগুলির হাতে এই কিট তুলে দিলেও দেশে ফরেন্সিক গবেষণাগারের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। নারী ও শিশু কল্যান মন্ত্রী মানেকা গান্ধীই জানিয়েছেন এই মুহূর্তে দেশে যে পরিমাণ ফরেন্সিক ল্যাব রয়েছে তাতে মাত্র ১৫০০ টি কেসের তদন্ত করা যেতে পারে। সংখ্যাটিকে ২০,০০০-এ নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন ৫টি গবেষণাগার করা হচ্ছে। নির্ভয়া ফান্ডকে কাজে লাগানো হচ্ছে।
ধর্ষণের করুণ চিত্র
২০১৪ থেকে ২০১৬ এই তিন বছরে দেশে মোট ১,১০,৩৩৩ টি ধর্ষণের অভিযোগ নথিভূক্ত হয়েছে। ২০১৬-য় হয়েছে ৩৮,৯৪৭ , ২০১৫-য় ৩৪,৬৫১ এবং ২০১৪-য় নথিভূক্ত হওয়া ধর্ষণের সংখ্যা ছিল ৩৬,৭৩৫। সব মিলিয়ে মহিলাদের বিরুদ্ধে ঘটা অপরাধের অভিযোগের ১২ শতাংশই হল ধর্ষণের অভিযোগ।