রেডিওর গোপন সংকেত ভেঙে গুরুংদের অভিসন্ধি জানার চেষ্টায় পুলিশ
নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য স্বল্প দূরত্বের রেডিও লিঙ্ক ব্যবহারও করছেন মোর্চা নেতারা, এমনই বলছেন পুলিশ আধিকারিকরা। যদিও পুলিশের এই দাবি অস্বীকার করেছে মোর্চা নেতৃত্ব
মোর্চার আন্দোলনের মোকাবিলায় এবার নামানো হল হ্যাম রেডিও অপারেটরদের। সঙ্গে সঙ্গে ভাষাবিদদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে পুলিশের তরফে। হ্যাম রেডিও অপারেটররা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই কাজ করছেন। পুলিশের আগে থেকেই সন্দেহ ছিল আত্মগোপন করা মোর্চা নেতারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে রেডিও সিগন্যাল ব্যবহার করছে।[আরও পড়ুন:পাহাড়ে নিষিদ্ধ ইন্টারনেট, নেপাল-ভূটান-এর লিঙ্কই হাতিয়ার মোর্চার]
১৫ জুন মোর্চার একাধিক নেতার বাড়ি ও অফিসে তল্লাশিতে একাধিক রেডিও সেট উদ্ধারের পর সেই সন্দেহ আরও দৃঢ় হয় পুলিশ আধিকারিকদের মনে। নেপাল ও ভূটানে আত্মগোপন করে থাকা মোর্চার নেতারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগে রেডিওকেই মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন। কেননা যেসব সন্দেহজনক কোড এই রেডিও সিগন্যালগুলিতে ব্যবহার করে হয়েছে তার সবই নেপালি কিংবা তিব্বতী ভাষায়। এরপরেই হ্যাম রেডিও অপারেটরদের নামানো হয়। সাহায্য নেওয়া হয় ভাষাবিদদেরও।[আরও পড়ুন:সোশ্যাল মিডিয়ায় পাহাড় আন্দোলনের সমর্থনে জোর প্রচার, কী পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য]
হ্যাম রেডিও অপারেটররা কাজে নামার পর থেকে নেপাল কিংবা ভূটান সীমান্তে একাধিকবার রেডিও ম্য়াসেজে সন্দেহজনক শব্দের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বেশ কিছু রেডিও ম্যাসেজের পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি পুলিশ আধিকারিকদের। সেই সব রেডিও ম্যাসেজ থেকে মোর্চা নেতা কিংবা তাদের আন্দোলনের সম্ভাব্য গতিবিধি কী হতে যাচ্ছে সেই সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি পুলিশ আধিকারিকদের।
হ্যাম রেডিও অপারেটররা সরকারি লাইসেন্স প্রাপ্ত। যোগাযোগমন্ত্রকের অধীনে নির্দিষ্ট রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করেন তাঁরা।
হ্যাম রেডিও অপারেটররা চব্বিশ ঘণ্টা নজরদারি চালাচ্ছেন রেডিও সিগন্যালের ওপর। অপর একটি দল সিগন্যালে ব্যবহৃত শব্দের অর্থ খুঁজে বের করছেন।
গোর্খাল্যান্ডের সমর্থনে নেতা ও সক্রিয় কর্মীদের মধ্যে পাহাড়ের একাধিক জায়গায় বেআইনি রেডিও সিগন্যালের ব্যবহার চালু ছিল আগে থেকেই। পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক অস্থায়ী রেডিও স্টেশন রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
সরকারে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকে রেডিও-র মাধ্যমে যোগাযোগ বেড়ে গেছে। কেননা মোর্চা নেতৃত্বের একটা অংশ আঁড়ি পাতার ভয়ে ফোনের ব্যবহারও কমিয়ে ফেলেছেন বলে খবর পুলিশ সূত্রে। পুলিশ সূত্রে দাবি, রেডিও যোগাযোগের পাঠোদ্ধার করে, বনধের জন্য মোর্চা নেতৃত্ব তৈরিই ছিল বলে জানা গিয়েছে এবং যা হয়েছে সবই প্রি-প্ল্যানড।
পাহাড়ে হিংসার পর থেকে নেতৃত্বের এক বড় অংশ আত্মগোপন করে রয়েছে। এমনকি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং-এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকলেও, পুলিশ এখনও তাকে ধরতে পারেনি।
মোর্চা নেতৃত্ব অবশ্য রেডিও-র ব্যবহার নিয়ে পুলিশের দাবি অস্বীকার করেছে।