ফৌজের গতিবিধিতে ভয়ে কাঁটা হয়েছিল সরকার, স্বীকার প্রাক্তন সেনাকর্তার
ঘটনাটা কী? ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন তৎকালীন সেনাধ্যক্ষ জেনারেল বিজয়কুমার সিং। জন্মতারিখ নিয়ে সরকারের সঙ্গে গোলমাল চলছিল সেনাপ্রধানের। ঠিক ওই সময় ফৌজের দু'টি ইউনিট নয়াদিল্লির দিকে মার্চ করতে শুরু করে। সঙ্গে ট্যাঙ্গ, সাঁজোয়া গাড়িও ছিল। এই খবর প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে ভয়ে মুখ শুকিয়ে যায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি-সহ তাবড় আমলাদের। রটে যায়, সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করে নিতে আসছে। ছুটোছুটি পড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-ও চিন্তিত হয়ে পড়েন। সেই সময় বিজয়কুমার সিং শেষ পর্যন্ত বলেছিলেন, এটা একটা চিরাচরিত অনুশীলন। সেনাবাহিনীর কোনও খারাপ অভিসন্ধি নেই। তবে সরকার যে ভয় পেয়ে গিয়েছিল, সেটা তখন বলেননি তিনি।
শেষ পর্যন্ত দু'বছর পর প্রাক্তন সেনা অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ কে চৌধুরী বললেন, "হ্যাঁ, একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। অনেকে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। অবিশ্বাসের বাতাবরণ ছিল।" তিনি আরও বলেছেন, তৎকালীন প্রতিরক্ষা সচিব শশীকান্ত শর্মা তাঁকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেনাবাহিনী যেন অবিলম্বে ছাউনিতে ফিরে যায়। ব্যাপারটি বোঝানোর পর অবশ্য শান্ত হন শশীকান্ত শর্মা।
ওই প্রাক্তন সেনা অফিসার আরও বলেন, "আমি তখন বলেছিলাম, সেনা অভ্যুত্থানের কোনও খবর থাকলে আগে আমাদের ডেকে জিজ্ঞাসা করা উচিত ছিল। তা হলে ব্যাপারটা শেষ হয়ে যেত। অহেতুক অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হত না।"
এদিকে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন শুক্রবার বলেছেন, "সরকারের সঙ্গে ফৌজের কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়নি।" ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ভারতে অসামরিক প্রশাসন কতটা শক্তিশালী, তা বোঝাতে এমন কথা বলেছেন মেনন। সরকার যে সেই সময় ভয় পেয়ে গিয়েছিল, পাছে সেটা প্রকাশ্যে বললে স্বাভাবিকভাবে কোপ পড়বে তাঁর ওপর। তাই সাবধানী শিবশঙ্কর মেনন। অনুরূপভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি বলেছেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক মজবুত। এ নিয়ে গুজব রটানো ঠিক নয়।