মাও-ভয়ে নেই শিক্ষক, চরম অর্থাভাব - বাধা টপকে স্বপ্নকে ছুঁতে চললেন মায়া
ছত্তিসগড়ের মাওবাদী অধ্যুষিত দোর্নাপালের মায়া কাশ্যপ মেডিক্যালে চান্স পেয়েছেন। এই এলাকা থেকে তিনিই প্রথম ডাক্তার হবেন।
ছোটবেলা থেকে তাঁর একটাই স্বপ্ন ছিল, তাঁকে ডাক্তার হতে হবে। ছত্তিশগড়ের দোর্নাপোল জেলার অজ পাড়া গাঁয়ে থাকেন। মাওবাদীদের ভয়ে স্কুলে শিক্ষকের দেখাই মেলে না। সেখান থেকেই গত জুনে স্বপ্ন সাকার করার একধাপ কাছে পৌঁছে গিয়েছেন মায়া কাশ্যপ। জায়গা করে নিয়েছেন এআইআইটি-র মেডিক্যাল ক্রমতালিকায়।
দোর্নাপোল থেকে মায়ার আগে কেউ ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাননি। কলেজ তো অনেক দূরের বিষয় এই এলাকা থেকে বাতে গোনা কয়েকজন হাইস্কুল অবধি পৌঁছনোর সুযোগ পায়। এরকম এক এলাকা থেকেই স্রেফ জেদ আর অধ্যবসায়ের জোরে এনইইটির এসসি ক্যাটেগরিতে তিনি ১৫৪ তম স্থান পেয়েছেন। ভর্তি হয়েছেন অম্বিকাপুর মেডিক্যাল কলেজে।
পথে বাধা কিন্তু অনেক ছিল। ছত্তিশগড়ের দোর্নাপোল মাওবাদীদের উন্মুক্ত অঞ্চল বলা চলে। মায়া জানিয়েছেন সরকারি স্কুলে অধিকাংশ সময় একজন শিক্ষকেরও দেখা মিলত না। মেডিক্যালে সুযোগ পাওয়ার জন্য কোনও কোচিং ইত্যাদির সাহায্য পাোয়ার প্রশ্নই ছিল না। তবে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন আজ থেকে ৯ বছর আগে হঠাত করে বাবা মারা যাওয়াতে।
মায়া জানিয়েছেন, সেসময় প্রায় পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছিল। তিনি ছাড়াও তাঁর আরও তিন ভাইবোন আছেন। তাঁর মাকে একা হাতে সবদিক সামলাতে হয়েছে। এমনকী তিনি মেডডিক্যালে সুযোগ পাওয়ায় বাড়িতে খুশির সঙ্গে নেমে এসেছিল একরাশ চিন্তা। তাঁর পড়ার ফি আসবে কিভাবে?
মায়ার দাদা তাঁর বন্ধুদের কাছ থেকে অর্থ ধার করেছেন। বৌদি তাঁর বাপের বাড়ি থেকে ধার করেছেন। এভাবেই জোগার হয়েছে সেই ফি। কিন্তু এত বাধা মায়া টপকালেন কিকরে? মায়া জানিয়েছেন, তিনি বাধাগুলোর দিকে দেখেননি, সবসময় তাঁর চোখ ছিল লক্ষ্যের দিকে। ডাক্তার হওয়ার পর কিন্তু দোর্নাপালেই ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।