বিজেপিকে ভাঙতে জোট পাকাচ্ছে প্রাক্তন কংগ্রেস-তৃণমূলীরা! নয়া সমীকরণ উত্তর-পূর্ব রাজ্যে
বিজেপিকে ভাঙতে জোট পাকাচ্ছে প্রাক্তন কংগ্রেস-তৃণমূলীরা! নয়া সমীকরণ রাজ্যে
মাত্র দু-বছর আগে ২৫ বছরের বাম সরকারের অবসান ঘটিয়ে উত্কর পূর্বের রাজ্য ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। এরই মধ্যে বিজেপিতে শুরু হয়েছে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। বিজেপি সরকারের টলমল অবস্থার মধ্যেই ভিন্ন রাজনৈতিক সমীকরণ গড়ে উঠতে শুরু করেছে। বিজেপিতে যাঁরা বিদ্রোহীর ভূমিকায় তাঁরা প্রত্যেকেই কংগ্রেসী। ফলে বাম-কংগ্রেস সমন্বয় তৈরি হতে পারে ত্রিপুরায়।
কংগ্রেস ভেঙে ২০১৮-য় বিজেপিতে সিংহভাগ
২০১৮ সালে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল প্রায় পুরো ইউনিট। তাঁরাই সংখ্যাধিক্য বিজেপির বিধায়কদের তালিকায়। তাঁদের নেতা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন বর্মনের ছেলে সুদীপ রায় বর্মন। সুদীপ যে দাবি করেছেন সম্প্রতি তাতে বিজেপি সিঁদুরে মেঘ দেখছে।
এক বছরের মধ্যেই বিদ্রোহী সুদীপ
২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের হারিয়ে ক্ষমতা দখল করে বিজেপি। তা সম্ভব হয় সুদীপ রায় বর্মনদের বিজেপিতে যোগদানে। কিন্তু একবছরের মধ্যেই বিদ্রোহীর তকমা পান সুদীপ। এরই মধ্যে একথা উল্লেখ্যের দাবি রাখে যে, রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষায় চার বছরে একাধিক দল পরিবর্তন করেছেন সুদীপ রায় বর্মন।
কংগ্রেস-তৃণমূল ত্যাগী নেতারাই বিপদ
২০১৯ সালে বরখাস্ত হওয়ার আগে বিপ্লব দেব সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ ছিল। সুদীপ রায় বর্মনকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর ত্রিপুরার কোনও স্বাস্থ্যমন্ত্রী নেই। সুদীপ রায় বর্মন এরপর বিপ্লবের বিরুদ্ধে দল পাকাতে শুরু করেন। কংগ্রেস-তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতারা সবাই তাঁর দিকে ঢলে পড়েন।
বিপ্লব স্বৈরাচারী! ২৫ জন বিধায়ক বিদ্রোহী
সুদীপ রায় বর্মন-সহ বিজেপির বিদ্রোহীদের দাবি, তাঁদের সঙ্গে ২৫ জন বিধায়কদের সমর্থন রয়েছে, যাঁরা বিপ্লব দেবের স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে আদৌ সন্তুষ্ট নন। বিদ্রোহীরা আরও বলেছেন, বিপ্লব দেবের প্রতিটি মন্তব্যে বিতর্কিত হয়ে উঠার ফলে ত্রিপুরায় বিজেপির অসম্মান ঘটছে।
ত্রিপুরায় নতুন সমীকরণ আসন্ন
৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরা বিধানসভায় বিজেপির ৩৬ জন বিধায়ক রয়েছে। বিজেপির মিত্রশক্তি আইপিএফটি-র আট জন বিধায়ক রয়েছে। বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে ২৫ জন বিধায়ক থাকার দাবি যদি সত্য হয়, তবে এটি বিপ্লব দেবের সরকারকে সমস্যায় ফেলতে পারে। ফের আলাদা সমীকরণও তৈরি হতে পারে ত্রিপুরায়
বিজেপির বিদ্রোহীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে
ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের থরহরি কম্প গৃহযুদ্ধের কারণেই। বিপ্লব বিরোধী বিধায়কের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে বিপ্লব দেবকে অপসারণের জন্য এখন বিজেপির প্রায় এক ডজন বিধায়ক দিল্লিতে শিবির করছেন। বিদ্রোহী শিবিরটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন।
বিজেপিতে গিয়ে বিদ্রোহীরা আসলে কংগ্রেসী
সুদীপ রায় বর্মন ছিলেন মানিক সরকারের আমলের বিরোধী দলনেতা। তিনি কংগ্রেস থেকে তৃণমূল ঘুরে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। মূলত তৃণমূল ভেঙে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় ফলে বিজেপি বামফ্রন্টতে হটাতে সম্ভবপর হয়ে উঠেছিল। এখন এই সুদীপই বিদ্রোহী। তাঁর শিবিরে অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সুশান্ত চৌধুরী, আশিস সাহা, রামপ্রসাদ পাল, দিবাচন্দ্র হরণখওয়াল, পরিমল দেব বর্মা, ডিসি রণখওয়াল, অতুল দেব বার্মা এবং বার্ব মোহন ত্রিপুরা প্রমুখ।
বাম-কংগ্রেসের প্রত্যাবর্তন জল্পনা ত্রিপুরায়
বিজেপির বিদ্রোহীরা অভিযোগ করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব দলের ত্রিপুরা ইউনিটে স্বৈরাচারী শাসকের মতো আচরণ করছেন এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ২০১৮ সালে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পূরণ করছে না। তাঁদের দাবি, বিপ্লব দেবের শাসন জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়িয়ে তুলছে এবং এভাবে বামফ্রন্টের প্রত্যাবর্তন এবং কংগ্রেসের সমর্থনের জন্য ভিত্তি তৈরি করছে।
মুকুল গুরুত্বের আসন পেতেই বিজেপি তিনটি ভাগে বিভক্ত, একুশের আগে অশনি সংকেত