এই পাঁচটি বিল নিয়ে সরগরম হতে চলেছে লোকসভার বাদল অধিবেশন
১৮ জুলাই শুরু হতে চলেছে সংসদের বাদল অধিবেশন। অধিবেশনে উত্থাপিত হতে পারে এরকম পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিল সম্পর্কে জেনে নিন।
আগামী বুধবার ১৮ জুলাই শুরু হতে চলেছে সংসদের বাদল অধিবেশন। শেষ হবে ১০ আগস্ট। এই ১৮ দিনে সংসদে পড়ে থাকা বিল এবং অর্ডিনেন্সগুলি পাস করার সঙ্গে সঙ্গে এবং নতুন বেশ কয়েকটি বিলও আনা হবে।
ঘত বছরের অধিবেশনে মোট ১৩ টি বিল পাস হয়েছিল। লোকসভা ও রাজ্যসভায় ৩৪ ঘন্টা ২৯ মিনিটেরও বেশি সময় ব্যয় করা হয়েছিল বিলগুলি নিয়ে আলোচনায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বিজয় গোয়েলের মতে লোকসভায় এখনও ৬৮ টি ও রাজ্যসভায় ৪০ টির মতো বিল পাস হওয়া বাকি আছে। তবে সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী বাকি থাকা বিলের সংখ্যা যথাক্রমে ২৭ ও ৪৮। পড়ে থাকা বেশ কয়েকটি বিল এবারের অধিবেশনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মূলত সেগুলি নিয়েই সরগরম হতে চলেছে বাদল অধিবেশন।
১২৩তম কনস্টিটিউশনাল অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ন্যাশনাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস-কে সাংবিধানিক মর্যাদা দেবে। এই বিলটি পাস করার জন্য সরকার অত্যন্ত আগ্রহী। এটি পাস করাতে পারলে ওবিসি কোটার মধ্যেই সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা শ্রেণীর জন্য কোটা নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রী মোদীর পথ সুগম হবে। ফলে এই বিল ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।
২০১৬ সালের শীত অধিবেশনে আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী জুয়াল ওরাম কনস্টিটিউশন (শিডিউলড কাস্টস ও শিডিউলড ট্রাইবস) অর্ডার্স (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিলটি এনেছিলেন। আসাম, ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ড, তামিলনাড়ু, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে যেসব আদিবাসী সম্প্রদায় সংরক্ষণের অন্তর্ভুক্ত নয়, তাদের এসসি-এসটি কোটায় অন্ত্রভুক্ত করা যাবে এই সংশোধনীতে। গত বছর বিলটি আনার পরেই যেভাবে বিজেপির উপজাতীয় ভোটের হার বেড়েছে তাতে এই বিলটি পাস করাতেও যথেষ্ট উদ্যোগী হবে তারা।
সারোগেসি (রেগুলেশন) বিলটিও ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস থেকে পড়ে আছে। সন্তানের জন্মগানে অক্ষম দম্পতিদের সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান লাভের অধিকার দেওয়ার জন্য এই বিল আনা হয়েছিল। বিলে বলে হয়েছে 'ঘনিষ্ঠ আত্মীয়'-ই সারোগেট মা হতে পারবেন। তবে 'ঘনিষ্ঠ আত্মীয়' বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে তা নির্দিষ্ট না করায এই বিল নিয়েও বিতর্ক আছে।
তবে এই অধিবেশনে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হবে সম্ভবত মুসলিম উইমেন (প্রোটেকশন অব রাইটস অন ম্যারেজ) বিল-টি নিয়ে। যা তিন তালাক বিল নামেই বেশি পরিচিতি পেয়েছে। বিলে বলা হয়েছে হাতের লেখায় বা হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদিতে মুসলিম মহিলাদের তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ করা যাবে না। সেই সঙ্গে এরকম ঘটনা ঘটলে তাকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গন্য করা হবে। লোকসভায় বিলটি পাস হয়ে গেলেও রাজ্য সভায় বিষয়টি এখনও ঝুলে রয়েছে। লোকসভা ভোটে এর প্রভাব মাথায় রেখএ বিরোদীরা এই অধিবেশনেও বিলটি ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টাই করেবেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এছাড়া আছে মেডিক্যাল শিক্ষা ও অনুশীলন নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি জাতীয় মেডিকেল কমিশন (এনএমসি) স্থাপন করার জন্য জাতীয় মেডিকেল কমিশন বিল। প্রস্তাবিত কমিশনের হাতে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ শতাংশ আসনের নিয়ন্ত্রনও থাকবে।