উত্তরপ্রদেশের 'আবেগ' কল্যাণ সিংকে মরণোত্তর পদ্মবিভুষণ! 'ভূষণে' সম্মানিত 'বিদ্রোহী' আজাদ
ভারতীয় রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন কল্যাণ সিং। সেইসঙ্গে বিতর্কিত চরিত্রও। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে বাবরি মসজিদ ভাঙার সময় তিনি ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে। অর্থাৎ তাঁর আমলেই বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন কল্যাণ সিং। সেইসঙ্গে বিতর্কিত চরিত্রও। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে বাবরি মসজিদ ভাঙার সময় তিনি ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে। অর্থাৎ তাঁর আমলেই বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনা ঘটে। আজ যদিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে একাংশের জমিতে তৈরি হচ্ছে রামমন্দির।
কিন্তু সেই রামমন্দিরের প্রতিষ্ঠার আগেই তিনি চলে গিয়েছেন চির ঘুমের দেশে। আর এবার কল্যাণ সিংকেই মরণোত্তরর পদ্ম বিভূষণে সম্মানিত করতে চলেছে মোদী সরকার।
রাত পোহালেই প্রজাতন্ত্র দিবস। এর আগে দেশের অন্যতম নাগরিক সম্মান পদ্ম বিভূষণ-পদ্ম ভূষণ এবং পদ্মশ্রীর প্রাপকদের নামের তালিকা প্রকাশ করে মোদী সরকার। এই বছর পদ্ম বিভূষণের জন্যে চারজনকে মনোনীত করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনকে মরণোত্তর এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে ১২৮ জনকে পদ্ম ভূষণ সম্মানে সম্মানিত করা হচ্ছে। তবে যে তিনজন মরণোত্তর পদ্ম বিভূষণে সম্মানিত হতে চলেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ।
রাজনৈতিকমহলের ব্যাখ্যা সামনেই উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনের আগেই কল্যাণ সিংকে এই সম্মান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিকমহলের একাংশ। তাঁদের মতে, কট্টর হিন্দুত্ববাদী একজন ব্যক্তি ছিলেন কল্যাণ সিং। শুধু তাই নয়, দলকে ভয়ঙ্করভাবে ভালোবাসতেন। তাঁকে নিয়ে রাম-রাজ্যে একটা আবেগ আছে। আর সেই আবেগকেই কার্যত কৌশলে কাজে লাগানোর চেষ্টা করলেন মোদী-শাহরা। কল্যাণ সিংকে এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে এই ঘোষণা হওয়ার পরেই খুশি তাঁর পরিবার।
অন্যদিকে পদ্ম ভূষণ পাচ্ছেন কংগ্রেস নেতা গুলাব নবি আজাদ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পদ্ম-প্রাপকদের যে তালিকা মোদী সরকার প্রকাশ করেছেন সেখানে প্রথমে কাশ্মীরি এই নেতার নাম জ্বল জ্বল করছে। কংগ্রেসের জি-২৩ বিদ্রোহী নেতাদের পক্ষেই আজাদ। এমনকি সোনিয়া-রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে বারবার বিদ্রোহী হয়েছেন তিনি। পরিবারতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সম্প্রতি রাজ্যসভার বিরোধী দলীয় নেতা গুলাম নবি আজাদকে বিদায় জানাতে গিয়ে বিদায়ী ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। আর তাতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। চোখে জল পর্যন্ত এসে গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর। সংসদীয় রাজনীতিতে দুইজন দুই আলাদা শিবিরের। একজন প্রধানমন্ত্রী। অন্যজন রাজ্যসভার বিরোধী দলীয় নেতা। কিন্তু এক নেতার চলে যাওয়াতে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তা গোটা দেশ দেখেছিল।
এবার তাঁকেই স্যালুট জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের অন্যতম নাগরিক সম্মান পদ্ম ভূষণে সম্মানিত হচ্ছেন আজাদ। যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের তরফে কোনও কিছু বলা হয়নি। তবে নেতৃত্বের একাংশের মতে, আজাদকে এই সম্মান দেওয়ার মধ্যেও রয়েছে মোদী সরকারের সুক্ষ চাল।