গেরুয়া বস্ত্র পরে হিন্দু সমাজের ক্ষতি করেছেন, প্রয়াত অগ্নিবেশকে নিয়ে আপত্তিকর টুইট
প্রয়াত আর্য সমাজ নেতা স্বামী অগ্নিবেশকে নিয়ে আপত্তিকর টুইট করলেন সিবিআইয়ের অন্তর্বতীকালীন প্রাক্তন প্রধান ও আইপিএস অফিসার এম নাগেশ্বর রাও। তিনি তাঁর টুইটে স্বামী অগ্নিবেশের মৃত্যুকে 'অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে অব্যাহতি’ বলে অভিহিত করেছেন।
সমাজকর্মী অগ্নিবেশকে 'হিন্দু–বিরোধী’ বলে রাও টুইটে জানিয়েছেন যে অগ্নিবেশ হিন্দু ধর্মের বহু ক্ষতি করেছেন। তিনি টুইটে বলেন, 'ভালো অব্যাহতি হয়েছে স্বামী অগ্নিবেশ। আপনি গেরুয়া বসন পরে হিন্দু–বিরোধী ছিলেন। আপনি হিন্দু ধর্মের বহু ক্ষতি করেছেন। আপনি তেলেগু বাহ্মণ হিসাবে জন্মগ্রহণ করায় আমার লজ্জা করছে। ভেড়ার পোশাকে আপনি একটা নেকড়ে। যমরাজের কাছে আমার অভিযোগ, তিনি এতদিন কেন অপেক্ষা করছিলেন?’
বরিষ্ঠ আর্য সমাজ নেতা অগ্নিবেশ বন্ডেড শ্রমিকদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন। শুক্রবার ৮১ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তিনি ভর্তি ছিলেন দিল্লির আইএলবিএস হাসপাতালে। তাঁর লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল এবং একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। গেরুয়া বসন সর্বদা পরলেও তিনি আর্য সমাজের নীতি হিসাবে মূর্তি পুজো প্রত্যাখান করেছিলেন। কিন্তু তাঁর বন্ডেড শ্রমিকদের জন্য লড়াই তাঁকে পরিচিতি দিয়েছিল। প্রাক্তন সিবিআই অফিসারের এই টুইটের পর অনেকেই মৃত সমাজ কর্মীকে নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করা ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন। কিন্তু তাও রাও তাঁর টুইট করা থামাননি।
রাও ফের টুইটে বলেন, 'বর্বররা মারা গেলে আমরা কেন তা উদযাপন করি? কারণ তারা সমাজকে ধ্বংস করেছে।’ প্রাক্তন আইপিএস অফিসারকে কটাক্ষ করে একজন টুইটে বলেন, 'এ ধরনের মন্তব্য করায় তোমায় অসম্মান করা উচিত। পুলিশ অফিসার হিসাবে তুমি কি কাজ করেছো একবার ভেবে দেখো? কোনও মৃত ব্যক্তিকে এভাবে অপমান করা ঠিক নয়। নিজেকে শুধরে নাও।’ ইন্ডিয়ান পুলিশ ফাউন্ডেশন (আইপিএফ)–এর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে রাওয়ের এমন মন্তব্য পুইশ ইউনিফর্ম ও সরকারকে লজ্জায় ফেলেছে। মানবাধিকার কর্মী ও লেখক হর্ষ মন্দার বলেন, 'একজন পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে এমন টুইট পেয়ে খুব খারাপ লাগল। স্বামী অগ্নিবেশের সম্পর্কে এ ধরনের মন্তব্য তাও তাঁর মৃত্যুর পর সত্যিই লজ্জাজনক। অগ্নিবেশ নাগেশ্বর রাওয়ের চেয়ে অনেক উঁচু দরের মানুষ ছিলেন।’
প্রাক্তন আইপিএস অফিসারের এরকম মানসিকতা দেখে হতবাক নেটিজেনরা। নাগেশ্বর রাওয়ের মতো ব্যক্তিত্বের মুখে এমন মন্তব্য শোনার পর হিন্দু সমাজ তো বটেই, সামজের অন্যান্য স্তরের মানুষও নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, তাঁর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন।