লকডাউনের প্রভাব পড়েছে যৌন ব্যবসায়, গ্রাহকের সঙ্গে ভিডিও কল করেই উপার্জন যৌন কর্মীদের
মারণ রোগ করোনা ভাইরাস বিশ্বের সব পেশার ওপরই চরম আঘাত হেনেছে। বিশেষ করে এমন কিছু পেশা এই মহামারির কারণে ধাক্কা খেয়েছে যেখানে মুখোমুখি দেখা হওয়ার বিষয়টি প্রধান। বাধ্যতামূলক লকডাউনের কারণে যেখানে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখাই এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায়, সেখানে যৌন কর্মীরা রোজ সংগ্রাম করছেন এই পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতে। চেন্নাইয়ের যৌনকর্মীদের অবস্থাও খানিকটা সেরকমই।
দু’মাস আয় নেই যৌন কর্মীদের
৩৫ বছরের নমিতা (নাম পরিবর্তন) লকডাউন কার্যকর হওয়ার পর থেকে গত দু'মাস বাড়িতেই রয়েছেন। যদিও এখন প্রত্যেক রাতে তাঁর সন্তানরা ঘুমিয়ে পড়লে তিনি মেকআপ করে ছাদে উঠে তাঁর কিছু গ্রাহকদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন, যাঁরা এই কাজের জন্য তাঁকে কিছু অর্থ দেন।
অন্য উপায়ে উপার্জন শুরু করেছেন যৌন কর্মীরা
নমিতা জানিয়েছেন, মহামারির পর তাঁর আয় অনেক কমে গিয়েছে। লকডাউনের পর তিনি খুব কম দিনই অর্থ উপার্জন করতে পেরেছেন। নমিতারই এক বান্ধবী তাঁর গ্রাহকের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে অর্থ উপার্জন করছে জেনে তিনিও একই পন্থা অবলম্বন করেন। নমিতা জানান, কিছু না করার চেয়ে এভাবে টাকা আয় করা ভালো।
ই–ওয়ালেটে লেনদেন
কোভিড-১৯ লকডাউনের কারণে যৌন কর্মীরা নিজেদের স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনেই ব্যবসা করছেন। যৌন কর্মীরা গ্রাহকদের ভিডিও কলে কথা বলে তাঁদের মনোরঞ্জন করার পর জি-পে সহ অন্য ওয়ালেটের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছেন। এমনকি যোন কর্মীদের ফোনে পর্যাপ্ত পয়সা না থাকলে তাও গ্রাহকরাই রিচার্জ করিয়ে দিচ্ছেন।
৯০ শতাংশ রূপান্তরকামীর কাছে রয়েছে স্মার্টফোন
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে একজন মহিলা যৌন কর্মীর চেয়ে রূপান্তরকামী যৌন কর্মীরা অনেক সহজেই ভার্চুয়াল যৌন পরিষেবা দিতে সফল হচ্ছেন। চার বছর আগে হওয়া এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে ৯০ শতাংশ রূপান্তরকামীরা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, অন্যদিকে মহিলা যৌনকর্মীদের মধ্যে ৩০ শতাংশের কাছে রয়েছে স্মার্টফোন। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য রাজেশ উমা দেবী জানিয়েছেন বয়সে ছোট যৌন কর্মীরা প্রযুক্তির ব্যবহার জানে। মানুষ তাঁদের ভিডিও কল রেকর্ড করতে পারে এ ধরনের গোপনীয়তার বিষয়গুলিও রয়েছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ও মহামারির কারণে এই লকডাউনের জন্য তাঁদের কাছে এটাই এখন নির্ভরযোগ্য মাদ্যম হয়ে উঠেছে।