তীব্র নিন্দা সত্ত্বেও মিশে গেল অমর জওয়ান জ্যোতি ও ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের অগ্নিশিখা
মিশে গেল অমর জওয়ান জ্যোতি ও ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের অগ্নিশিখা
শুক্রবার ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাক গোটা দেশ। এদিন দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের অমর জওয়ান জ্যোতির শিখার সঙ্গে ৪০০ মিটার দূরে অবস্থিত ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের অগ্নিশিখার সঙ্গে মিলিত হয়ে গেল। ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই দুই অগ্নিশিখাকে মিলিয়ে দেওয়ার কার্যক্রম করা হয়।
অমর জওয়ান জ্যোতি ও ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের ইতিহাস
১৯৭১ সালের ২৬ জানুয়ারি দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই অমর জওয়ান জ্যোতি উদ্বোধন করেছিলেন। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে শহিদ হওয়া ভারতীয় সেনাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই অমর জওয়ান জ্যোতি তৈরি হয়েছিল। এই যুদ্ধের শেষে ভারত জয়লাভ করার পরই বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, অন্যদিকে, দীর্ঘদিনের অপেক্ষা ও একাধিক বিবেচনার পর ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল ইন্ডিয়া গেটে নির্মাণ করে নরেন্দ্র মোদীর সরকার এবং তার উদ্বোধন হয় ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে মোট ২৫,৯৪২ জন সেনার নাম গ্রানাইট পাথরে সোনালি অক্ষরে খোদাই করা রয়েছে।
সমালোচনার মুখে কেন্দ্র
তবে অমর জওয়ান জ্যোতির সঙ্গে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের অগ্নিশিখা একত্রিত করে দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে বহু প্রাক্তন ভারতীয় সেনা ও বিরোধী দলের নেতাদের কাছে। প্রাক্তন এয়ার ভাইস মার্শাল মনমোহন বাহাদুর কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে টুইট করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ট্যাগ করে তিনি লিখেছেন, 'স্যার, ইন্ডিয়া গেটের অনন্ত শিখা ভারতের মানসিকতার অংশ। আপনি, আমি এবং আমাদের প্রজন্ম সেখানে আমাদের সাহসী জওয়ানদের কুর্নিশ করে বড় হয়েছি।' কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে হিন্দিতে টুইট করে লেখেন, 'এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে আমাদের বীর সেনাদের অমর শিখা আজ নিভে যাবে। কিছু লোক দেশপ্রেম এবং আত্মত্যাগ বুঝতে পারেন না, কিছু মনে করবেন না, আমরা আমাদের সেনাদের জন্য আবার অমর জওয়ান জ্যোতি আলোকিত করব।'
সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে
তবে এই সমালোচনার পাশাপাশি সরকারের এই পদক্ষেপকে প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সহ অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সতীশ দুয়া বলেন, 'এনডব্লিউএম-এর নকশা নির্বাচন এবং নির্মাণের নেতৃত্ব দিয়েছে এমন একজন হিসাবে, আমি সর্বদা এই মত পোষণ করেছি যে ইন্ডিয়া গেট প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শহিদ বীরদের একটি স্মারক।' সেনার প্রাক্তন ডেপুটি চিফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবিএস যাদব টুইটারে লেখেন, 'অমর জওযান জ্যোতি ও ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের অগ্নিশিখা একত্রিত হওয়ার মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। কেন্দ্রের প্রত্যেকটি উদ্যোগকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার একটা প্রবণতা হয়ে গিয়েছে।'
ইন্ডিয়া গেটে নেতাজি মূর্তি
এই উদ্যোগ নেওয়া ছাড়াও সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ইন্ডিয়া গেটে তাঁর মূর্তি বসানো হবে।