রাহুলের সাফল্যে ঈর্ষাকাতর মমতা! তাই কি মোদী বিরোধিতায় গা-ছাড়াভাব তৃণমূলের
রাহুলই যে মোদীর চ্যালেঞ্জার তাও নিশ্চিত করে দিয়ে গেল গুজরাতের এই নির্বাচন। রাহুলের এই সাফল্যই কি মোদীর পাশাপাশি কপালে ভাঁজ ফেলে দিল তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের?
গুজরাতে রাহুল গান্ধী অবশেষে লড়াইটা ফিরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে। এই একটা নির্বাচনের ফলাফলই ফের ২০১৯-এর লড়াইয়ে প্রাসঙ্গিক করে তুলল কংগ্রেস সভাপতিকে। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরই সাফল্য এল। লোকসভা নির্বাচনে আগে ফের কংগ্রেসকে অক্সিজেন জোগাল গুজরাত। এবং রাহুলই যে মোদীর চ্যালেঞ্জার তাও নিশ্চিত করে দিয়ে গেল গুজরাতের এই নির্বাচন।
[আরও পড়ুন:খুশির খবর রাজ্যবাসীর জন্য, বড়দিনের পরই নাচন লাগতে চলেছে শীতের হাওয়ায়]
রাহুলের এই সাফল্যই কি মোদীর পাশাপাশি কপালে ভাঁজ ফেলে দিল তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? তাই কি দিল্লি তৃণমূলের এমন গা-ছাড়াভাবা মোদী বিরোধিতায়? গুজরাতের নির্বাচনের পর এখনও একটা শুভেচ্ছা বার্তা রাহুলের কাছে যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে। তিনি হার্দিক প্যাটেলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, কিন্তু রাহুলকে একটি ফোনও করেননি, এমনকী সোশ্যাল মিডিয়াতেও কোনও বার্তা পোস্ট করেননি।
তাই স্বাভাবিকভাবেই সেই অমোঘ প্রশ্নটা উঠে পড়েছে। রাহুলের সাফল্যে কি ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? নিজেকে মোদী-বিরোধী মুখ করে তুলেছিলেন ধীরে ধীরে। সোনিয়া গান্ধী সরে গেলে তিনিই মুখ হয়ে উঠবেন বিরোধী ঐক্যের, সেই জল্পনা ছিল। কিন্তু সোনিয়ার 'অবসর'-এর পর হঠাৎ করেই বিরোধী আকাশে রাহুল নামে এক তারার উদয় হয়ে গেল জল্পনার মেঘ সরিয়ে।
সেই কারণেই কি রাহুল গান্ধী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে তৃণমূল! রাজ্যে অধীর-মান্নানদের তৃণমূল বিরোধিতা তো চলছিলই। তা দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে হুঁশিয়ারি দিয়েই রেখেছিলেন। তারপর রাহুলের সাফল্য আসতেই মমতা দিল্লি কংগ্রেস থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করে দিলেন। তৃণমূল একাকী মোদী বিরোধিতায় সামিল হচ্ছে।
তৃণমূল সাংসদ জেরেক ও ব্রায়ানের কথাতেও তারই প্রতিচ্ছবি। শীতকালীন অধিবেশনে মোদী বিরোধিতায় সংসদে তৃণমূলের গা ছাড়া মনোভা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই। তা স্পষ্ট করে ডেরেক বলেন, নোট বাতিল থেকে শুরু করে জিএসটি, আধার সবকিছুতেই সবার আগে সরব হয়েছে তৃণমূল। ফলে মোটি বিরোধিতায় নরম তাঁরা নন। আমরা মনে করি বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতাই সবথেকে বেশি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, পর পর দু'টি সাফল্য এসেছে কংগ্রেসের ঝুলিতে। এক গুজরাতের নির্বাচন। আর দুই হল টু-জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারিতে সু্প্রিম কোর্টে ক্লিনচিট ইউপিএ সরকারের মন্ত্রীদের। মোদী সরকারের মুখে দুই ইস্যুতেই ঝামা ঘসে দিয়েছে কংগ্রেস। তারপরও রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের প্রতি কোনও শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাননি মমতা।
আর সংসদেও বিরোধী ঐক্যেও দেখা মেলেনি তৃণমূলের। তৃণমূলের এই গা-ছাড়া মনোভাবে মোদী বিরোধী ঐক্য ফাটলের ছাপ স্পষ্ট। দিল্লির রাজনীতিতে এখন কংগ্রেস-তৃণমূলের সম্পর্ক নিয়ে তাই চর্চা চলছে অবিরত। ভবিষ্যৎই বলবে গুজরাতের নির্বাচনী ফলাফলে ভিত্তি করে কোনদিকে মোড় নেয় দিল্লির রাজনীতি।